শুভেন্দু অধিকারী ও সুকান্ত মজুমদার। — ফাইল চিত্র।
কলকাতা থেকে সোমবার রাত সাড়ে ১০টার বিমানে দিল্লি গিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। মঙ্গলবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত সংসদের অধিবেশনে তাঁর থাকার কথা। কিন্তু আচমকাই শহরে ফিরে আসছেন সুকান্ত। সোমবার মধ্যরাত পার করে দিল্লিতে পৌঁছেছিলেন। আর মঙ্গলবার সন্ধ্যার বিমানেই কলকাতা ফিরছেন। কেন এই জরুরি ফিরে আসা সে বিষয়ে বিজেপির তরফে আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু বলা হয়নি। তবে গেরুয়া শিবির সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রাতেই শীর্ষ নেতৃত্বকে নিয়ে বৈঠকে বসতে পারেন সুকান্ত। ওই বৈঠকে সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্তদের পাশাপাশি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও থাকতে পারেন।
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে আগামী ২৪ ডিসেম্বর ব্রিগেডে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপস্থিতিতে যে সমাবেশ রয়েছে তা নিয়েই চিন্তিত বিজেপি নেতৃত্ব। ওই কর্মসূচি বিজেপির না হলেও দলের নেতা, কর্মী, সমর্থকেরা সনাতন ধর্মের প্রতিনিধি হিসাবে যোগ দেবেন বলে আগেই জানিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। তবে দলীয় পতাকা বা ব্যানার নিয়ে কেউ যেতে পারবেন না। ‘লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠ’ কর্মসূচি হচ্ছে বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে। তাঁরা লক্ষ মানুষের সমাগমের লক্ষ্য নিয়েছে। তবে সেই লক্ষ্য পূরণ হচ্ছে কি না তা নিয়েই চিন্তা রাজ্য বিজেপির। মোদীর উপস্থিতিতে দীর্ঘ দিন পরে রাজ্যে কোনও কর্মসূচি। তাতে সমাগমের বিষয়ে পুরোপুরি আয়োজকদের উপরে ভরসা করতে চাইছেন না রাজ্য নেতৃত্ব। সে কারণেই শুভেন্দু-সহ শীর্ষ নেতৃত্বকে নিয়ে মঙ্গলবার বেশি রাতে হলেও বৈঠক করতে চান সুকান্ত।
হাতে আর সময় নেই। রবিবার ব্রিগেডে সমাবেশ। তার আগে বুধ থেকে শনি— এই চার দিনে যতটা সম্ভব দলীয় ভাবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে চায় বিজেপি। তার আগে দেখে নিতে চায়, এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি তাতে সমাগম কতটা হতে পারে। এ ছাড়াও অন্যান্য ব্যবস্থা ঠিকঠাক রয়েছে কি না তারও পর্যালোচনা হতে পারে মঙ্গলবারের বৈঠকে। গত ২৯ নভেম্বর ধর্মতলার সভায় এসেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সে দিন সভার যে চেহারা দেওয়ার কথা দিয়েছিল তা রাখতে পারেনি বিজেপি। ফলে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও খুব খুশি নন। এই পরিস্থিতিতে মোদীর উপস্থিতিতে হওয়া সমাবেশে সমাগম নিয়ে নিশ্চিত হতে চাইছেন রাজ্য নেতৃত্ব।
প্রসঙ্গত, বুধবার দিল্লিতে মোদীর সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সঙ্গে তৃণমূলের কয়েক জন সাংসদও থাকবেন। ঠিক সেই দিনেই দলের জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে রাজভবন ও নবান্নে বাংলার অনেক মানুষকে কেন্দ্রীয় প্রকল্প থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে অভিযোগ তুলে স্মারকলিপি দিতে যাওয়ার ঘোষণা করেছেন শুভেন্দু। তবে লোকসভায় অধিবেশন চলায় এই কর্মসূচিতে বেশির ভাগ সাংসদই যোগ দিতে পারবেন না। সুকান্ত কলকাতায় ফিরলেও বুধবারের কর্মসূচিতে তিনি থাকবেন কি না তা এখনও নিশ্চিত নয়।