Sukanta Majumder & TMC

বিজেপি বাংলা ভাগের দাবি জানিয়েছে মোদীর কাছে, সুকান্তের প্রস্তাব নিয়ে অভিযোগ তৃণমূলের

উত্তরবঙ্গের আটটি জেলাকে তাঁরই হাতে থাকা মন্ত্রকের অধীনে আনার আবেদন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে প্রস্তাব দিয়েছেন সুকান্ত মজুমদার। তাঁর প্রস্তাব দেওয়াকে রাজ্যভাগের চক্রান্ত বলে আক্রমণ করেছে তৃণমূল।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২৪ ২১:৫৭
BJP President Sukant Majumdar demanded the division of West Bengal, the demand of the TMC

(বাঁ দিক থেকে) সুকান্ত সজুমদার, নরেন্দ্র মোদী, সুখেন্দুশেখর রায়। —ফাইল ছবি।

বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের বিরুদ্ধে রাজ্যভাগের চক্রান্ত করার অভিযোগ আনল শাসকদল তৃণমূল। বুধবার তৃণমূলের বর্ষীয়ান নেতা তথা রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় এক ভিডিয়ো বার্তা প্রকাশ করে এই দাবি করেছেন। উত্তরবঙ্গের আট জেলাকে উত্তর-পূর্বের সঙ্গে যুক্ত করার দাবি তুলেছেন বালুরঘাটের দু’বারের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত। বুধবার বিষয়টি নিয়ে একটি প্রস্তাব তিনি জমা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে। সেখানে বাংলার উত্তরাংশের সঙ্গে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির অনেক মিল রয়েছে দাবি করে উন্নয়নের ক্ষেত্রে কাজের সুবিধা হবে বলেও লিখেছেন সুকান্ত। সেই আবেদনের কথা প্রকাশ্যে আসার পরেই প্রতিক্রিয়া দিয়েছে তৃণমূল। সেখানে বিজেপি সভাপতির বিরুদ্ধে সরাসরি পশ্চিমবঙ্গ ভাগের চক্রান্ত করার অভিযোগ এনেছেন তৃণমূলের বর্ষীয়ান সাংসদ।

Advertisement

সুখেন্দুশেখর বলেন, ‘‘আজ কেন্দ্রের একজন প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার নাকি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে উত্তরবঙ্গের যে আটটি জেলা আছে, সেই আটটি জেলাকে উত্তর পূর্ব ভারতের সঙ্গে যুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি মন্ত্রী হিসাবে যে শপথ নিয়েছিলেন সংবিধান মেনে চলবেন। এই দাবি সংবিধানের পরিপন্থী। কারণ উত্তরবঙ্গ বলে কোনও ভূখন্ড ভারতের মধ্যে নেই। যে আটটি জেলাকে বলা হচ্ছে উত্তরবঙ্গ আসলে পশ্চিমবঙ্গের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ এবং পশ্চিমবঙ্গের অন্তর্ভুক্ত আটটি জেলাকে কথার সুবিধার জন্য লোকে উত্তরবঙ্গ বলে থাকে। আসলে তা পশ্চিমবঙ্গের উত্তর প্রান্ত।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আসলে ২০১১ সালে সিপিএমকে হটিয়ে বাংলার মানুষের আর্শীবাদ নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিটি নির্বাচনে, লোকসভা, বিধানসভা কিংবা পুরসভার ভোট হোক, ধারাবাহিক ভাবে জিতে চলেছেন। ওরা আধাসেনা পাঠিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করেও, বাংলার মানুষের মন টলাতে পারল না। তখন রাজ্যকে ভাগ করার চক্রান্ত করছে।’’ ঘটনাচক্রে বুধবারই রাজ্যসভায় পশ্চিমবঙ্গ থেকে বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ অনন্ত মহারাজ কোচবিহারকে গ্রেটার কোচবিহার হিসাবে কেন্দ্রীয় শাসিত অঞ্চল করার দাবি জানিয়েছেন। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর স্বাভাবিক কারণেই অস্বস্তি বেড়েছে বঙ্গ বিজেপির।

শুধু রাজ্যভাগের অভিযোগ করেই ক্ষান্ত হননি সুখেন্দুশেখর। তিনি বলেছেন, ‘‘যদি ওঁর (সুকান্ত) ওই কথা মেনে নিতে হয়, তা হলে ভারতবর্ষের সরকারকে প্রথমে মেনে নিতে হবে যে উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, গুজরাত, এই সমস্ত রাজ্যে দীর্ঘ দিন ধরে নতুন রাজ্যের দাবি আছে। সেই দাবি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে পড়ে রয়েছে। মোট ৪০টি নতুন রাজ্যের দাবি সারা ভারতবর্ষ জুড়ে। যে ৪০টি নতুন রাজ্যের দাবি রয়েছে, আগে ওরা সেইগুলি নিয়ে বিবেচনা করুন। পরে বাংলা নিয়ে ভাববেন।’’ তৃণমূলের এমন দাবির পাল্টা সুকান্ত বলেছেন, ‘‘আমি আদৌ রাজ্য ভাগের কথা বলিনি। আমি উত্তরবঙ্গের উন্নয়নের স্বার্থে এটা ভেবেছি। এতে রাজ্যের ভাল চাইলে সরকারের দ্বিমত থাকার কোনও কারণ নেই।’’ প্রসঙ্গত, এ বারের লোকসভা ভোটে দ্বিতীয়বার সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর সুকান্তকে তাঁর তৃতীয় বারের সরকারে মন্ত্রিসভায় জায়গা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। শিক্ষা এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় জোড়া মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে বালুরঘাটের এই বিজেপি সাংসদকে। সেই মন্ত্রকের দায়িত্ব পাওয়ার পরেই উত্তরবঙ্গের আটটি জেলাকে তাঁর মন্ত্রকের অধীনে আনার আবেদন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। আর তাঁর এমন প্রস্তাব দেওয়াকে রাজ্যভাগের চক্রান্ত বলে আক্রমণ করেছে বাংলার শাসকদল তৃণমূল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement