প্রতীকী চিত্র।
সমাজ মাধ্যমে ‘বিতর্কিত’ পোস্ট করে উত্তেজনা ছড়ানোর অভিযোগে গ্রেফতার হলেন বিজেপির উত্তর মুর্শিদাবাদের শমসেরগঞ্জ মণ্ডলের যুব সহ-সভাপতি মিলন সিংহ। গত পুরভোটে ধুলিয়ান পুরসভায় বিজেপি’র প্রার্থী
ছিলেন তিনি।
পুলিশ সূত্রে খবর, দিন তিনেক আগে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট করেন মিলন। অভিযোগ, ওই পোস্টে এক বিডিও-কে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে। পরে সেই পোস্ট ‘ভাইরাল’ হলে স্থানীয়দের একাংশ দাবি করেন, শমসেরগঞ্জের বিডিও-কে উদ্দেশ্য করেই ওই পোস্ট। এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। মিছিল বেরোয়। থানার সামনেও চলে ধর্না-বিক্ষোভ। এরপর বুধবার রাতে শমসেরগঞ্জ থানার পুলিশ মিলনকে গ্রেফতার করে। বৃহস্পতিবার তাঁকে আদালতে তোলা হলে তিন দিনের পুলিশি হেফাজত হয়েছে। সরকারি আইনজীবী রাতুল বন্দ্য়োপাধ্যায় জানান, ধৃতের বিরুদ্ধে পুলিশ কয়েকটি ধারায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করেছে। ফরাক্কার এসডিপিও অসীম খান বলেন, “ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। ধৃতের ফোন রেকর্ড খতিয়ে দেখে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।”
যদিও বিজেপির উত্তর মুর্শিদাবাদ জেলার সহ-সভাপতি মিলন ঘোষের দাবি, “যে পোস্ট মিলন করেছেন, তা মোটেই আপত্তিকর নয়। শমসেরগঞ্জের বিডিওকে নিয়েও পোস্টটি করা হয়নি। ঘটনাটি পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামের। সেখানকার এক বিডিও এক পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে থানায় দুর্নীতির অভিযোগ দায়ের করেছেন। সেই সংক্রান্ত একটি ভিডিয়ো পোস্ট করা হয়েছে সেখানকার একটি অ্যাকাউন্ট থেকে। তার প্রেক্ষিতে অনেকে ফেসবুকে নানা মন্তব্য করেছেন। তারই একটিতে জনৈক তাপস জানা স্থানীয় বিডিও সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করেন। তাঁর পোস্টটি কপি করে নিজের অ্যাকাউন্টে পোস্ট করেন মিলন।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘গোটা বিষয়টি প্রমাণ-সহ দেখানো হয়েছে পুলিশকে। কিন্তু বিরোধী দল বলেই পুলিশ অহেতুক হয়রান করছে।’’
শমসেরগঞ্জের বিডিওকে এ দিন একাধিক বার ফোন করা হলে তিনি ধরেননি। আর বিষয়টি নিয়ে অন্ধকারে নন্দীগ্রামের দু’টি ব্লকের বিডিও-ই। নন্দীগ্রাম ১-এর বিডিও সুমিতা সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘আমি ফেসবুকে খুব একটা সক্রিয় নয়। তাই জানি না কী হয়েছে।’’ নন্দীগ্রাম ২-এর বিডিও অখিলেশ সাহারও বক্তব্য, ‘‘এমন কোনও বিষয় নজরে আসেনি।’’
ঘটনা নিয়ে তৃণমূলের জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি খলিলুর রহমান বলেন, ‘‘আমি পোস্টটি দেখিনি। পুরো বিষয়টি আইন-শৃঙ্খলাঘটিত এবং প্রশাসনিক বিষয়। এর সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক নেই। মন্তব্য করে পুলিশের কাজে হস্তক্ষেপ করব না।’’ অন্যদিকে, বিজেপির উত্তর মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি ধনঞ্জয় ঘোষের প্রতিক্রিয়া, ‘‘অন্যের করা পোস্ট নিজের প্রোফাইলে রিপোস্ট করা হয়েছে। যিনি পোস্টটি করেছেন, নন্দীগ্রামের সেই ব্যক্তিকে কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না। বিজেপিকে জব্দ করতেই মিলনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’