—প্রতীকী ছবি।
ক্রেতা সেজে স্বর্ণবিপণিতে ঢুকে কেপমারির অভিযোগে দুই মহিলাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম মারিয়ান খাতুন বিবি (৬৫) ওরফে সখিনিয়া বিবি এবং নাসিমা বিবি (৩৬)। ধৃতদের দু’জনেরই বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার মাটিয়া বসিরহাট থানা এলাকায়। রবিবার বিকেলে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার কাছারিরোড এলাকা থেকে তাঁদের ধরা হয়েছে। ধৃতদের সোমবার কাটোয়া মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁদের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ঘটনায় অভিযোগকারী কাটোয়া শহরের বাসিন্দা ইন্দ্রনীল ধর নামে এক স্বর্ণব্যবসায়ী। কাটোয়া শহরের কাছারি রোডে তাঁদের দু’টি দোকান রয়েছে। ইন্দ্রনীল পুলিশকে জানান, গত ৩১ মে তাঁরা দোকান বন্ধ করার আগে সারা দিনের বিক্রি শেষে দোকানের স্টক মেলাচ্ছিলেন। তখন তাঁরা বুঝতে পারেন, দোকানে এক ভরি চার আনা ওজনের একটি সোনার চেন পাওয়া যাচ্ছে না। এর পরেই ইন্দ্রনীলরা দোকানের সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখতে থাকেন। সেই দিনের ফুটেজ পরীক্ষা করে কিছু ধরা পড়লেও তার আগের দিনগুলির ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখতে দেখতে ধরা পড়ে যায়। ইন্দ্রনীলরা তখন দেখতে পান, গত ২৮ মে দোকানে দুই অপরিচিত মহিলা এসেছিলেন। তাঁরাই ওই চেন চুরি করছেন বলে স্পষ্ট ধরা পড়ে যায় সিসিটিভি ফুটেজে। এর পরেই গত ১ জুন ইন্দ্রনীল ধর কাটোয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্তে নামে। দোকান মালিকের দেওয়া সিসিটিভি ফুটেজ অনুযায়ী অভিযুক্ত দুই মহিলার খোঁজ চালাতে থাকে পুলিশ। কিন্তু স্থানীয় এলাকায় কারও সঙ্গে তাঁদের চেহারার মিল পায়নি পুলিশ। ফলে অভিযুক্তরা অধরাই ছিলেন। পুলিশ সূত্রে খবর, এর পর কার্যত অভিযুক্তেরাই নিজেরা ধরা দিয়ে দেন। রবিবার ওই দুই মহিলা ফের কাটোয়ার কাছারিরোডে ইন্দ্রনীলদের আর একটি দোকানে আসেন। তাঁরা গয়না কেনার ভান করে জিনিসপত্র দেখতে শুরু করেন। তখনই দোকানের কর্মচারীদের তা দেখে সন্দেহ হয়। তাঁরা মালিকের নজরে আনেন। আগের দিনে চুরি করা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ মোবাইল ফোনে লোড করাই ছিল। সেটি আবারও দেখে নিশ্চিত হওয়ার পর দুই মহিলাকে আটকে দেন দোকান মালিক ও তাঁদের কর্মচারীরা। তাঁরা পুলিশকে জানান। পুলিশ ও মহিলা পুলিশকর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে দুই মহিলাকে গ্রেফতার করেন।
পুলিশ জানায়, প্রাথমিক জেরায় ধৃতরা নিজেদের অপরাধের কথা স্বীকার করেছেন। ধৃতেরা জানান, তাঁরা বিভিন্ন বাজার এলাকায় ঘুরে ঘুরে স্বর্ণবিপণিগুলিকে নিশানা করে ক্রেতা সেজে সেখান থেকে হাতসাফাই করে গা-ঢাকা দিতেন। পুলিশ ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে জানার চেষ্টা করছে, এই চক্রে আর কারা জড়িত রয়েছেন এবং কাটোয়া এলাকার কেউ রয়েছেন কি না। এ ছাড়া চুরি যাওয়া গয়না উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।