Kazi Nazrul University

‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ করতে করতে ইস্তফা কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের! দায়ী করলেন আন্দোলনকে

বুধবার ইস্তফা দেওয়ার পর উপাচার্য দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে আর কাজের পরিবেশ নেই। তিনি ভিন্ রাজ্যে ভাল ‘অফার’ পেয়ে আসানসোল ছাড়ছেন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০২৪ ২০:৩৫
Kazi Nazrul University VC

পদত্যাগের পর দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।

ছাত্রবিক্ষোভের জেরে কয়েক দিন আগে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ছেড়েছিলেন। ‘প্রাণসংশয়ে ভুগছি’ দাবি করে কয়েক সপ্তাহ ধরে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ (বাড়ি থেকে কাজ) করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত পদত্যাগই করলেন কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার ইমেল মারফত আচার্য তথা রাজ্যপালকে ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, সে পদত্যাগপত্র গ্রহণও করেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।

Advertisement

বেশ কিছু দিন ধরেই অশান্তির বাতাবরণ পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোলে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)-এর অভিযোগ, ছাত্র ভর্তির টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আইনি লড়াইয়ের খাতে খরচ করা হয়েছে। ব্যয় হওয়া প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলে ফেরত দেওয়ার দাবি নিয়ে তারা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। টিএমসিপি নেতৃত্বের দাবি, কখন, কোথায়, কী কারণে ওই টাকা খরচ করা হয়েছে, তা শ্বেতপত্র প্রকাশ করে উপাচার্যকে জানাতে হবে। আন্দোলন এমন জায়গায় পৌঁছয় যে, কয়েক সপ্তাহ ধরে বাড়িতে বসেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ করছিলেন উপাচার্য দেবাশিস। এ নিয়ে তিনি চিঠি দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যপাল বোসকে। গত ১৬ অগস্ট প্রতিষ্ঠাদিবস উপলক্ষে এক বার বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন দেবাশিস। কিন্তু আবার আন্দোলনের মুখে পড়েন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘সেদিন কয়েক জন বহিরাগত ঢুকে শাসিয়েছিল, আরজি কর বানিয়ে দেব!’’ ওই বিষয়ে নিয়ে থানায় অভিযোগও করেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

বুধবার ইস্তফা দেওয়ার পরে দেবাশিস অভিযোগ করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে আর কাজের পরিবেশ নেই। তিনি বলেন, ‘‘আন্দোলনের জেরে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে কাজ করতে পারছিলাম না। ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ করতে হচ্ছিল। তাই ইস্তফাই দিলাম। রাজ্যপাল পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন।’’ এর পর কী? পদত্যাগী উপাচার্য জানিয়েছেন, ভিন্‌রাজ্যে একটি ‘ভাল অফার’ পেয়েছেন। সেখানে চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে নিয়েছেন। ইতিমধ্যেই তিনি আসানসোলের পাটও চুকিয়ে ফেলেছেন।

টিএমসিপি অবশ্য দাবি করেছে, তাদের ‘ন্যায্য’ দাবিতে আন্দোলনে ভয় পেয়ে গিয়েছেন উপাচার্য। দেবাশিস পদত্যাগ করলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকা কোথায় কোথায় খরচ হয়েছে, তা পরিষ্কার করেননি। টিএমসিপি-র পশ্চিম বর্ধমানের জেলা সভাপতি অভিনব মুখোপাধ্যায় আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘উনি ইস্তফাপত্র পাঠিয়েছেন। ইস্তফাপত্র গৃহীতও হয়ে গিয়েছে। কিন্তু আমরা মনে করি, লক্ষ লক্ষ টাকা তছরুপ হয়েছে ওঁর আমলে। সেই হিসাব না দিয়ে আন্দোলন এড়াতে উনি বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে চলে গেলেন!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement