—প্রতীকী ছবি।
স্তন ধরার চেষ্টা করলে তা কখনই ‘ধর্ষণ বা ধর্ষণের চেষ্টা’ বলা যেতে পারে না। বরং ‘চরম যৌন নির্যাতনের’ অভিযোগ হিসাবে গণ্য করা যেতে পারে! এক মামলার শুনানিতে এমনই পর্যবেক্ষণ কলকাতা হাই কোর্টের। একই সঙ্গে নিম্ন আদালতের (ট্রায়াল কোর্ট) নির্দেশের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়ে রাজ্যের উচ্চ আদালত।
মামলাকারীকে পকসো আইনের দুই ধারায় দোষী সাব্যস্ত করেছিল নিম্ন আদালত। ‘ধর্ষণের চেষ্টা’ এবং ‘চরম যৌন নির্যাতন’— দুই ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে অভিযুক্তকে ১২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল আদালত। শুধু তা-ই নয়, ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন অভিযুক্ত। শুনানিতে বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি বিশ্বরূপ চৌধুরীর বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, নির্যাতিতার মে়ডিক্যাল রিপোর্ট থেকে বোঝা যায়, এ ক্ষেত্রে পুরুষাঙ্গের অনুপ্রবেশ বা অনুপ্রবেশের চেষ্টার কোনও ইঙ্গিত মেলেনি।
একই সঙ্গে হাই কোর্ট জোর দিয়েছে নির্যাতিতার বয়ানের উপরও। তার বয়ান অনুযায়ী, অভিযুক্ত ব্যক্তি মত্ত অবস্থায় ‘তার স্তন স্পর্শ করার’ চেষ্টা করেছিলেন! ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, ‘‘এই ধরনের প্রমাণ ২০১২ সালের পকসো আইনের ১০ নম্বর ধারার আওতায় যৌন নির্যাতনের অভিযোগকে সমর্থন করে। কিন্তু প্রাথমিক ভাবে ধর্ষণের চেষ্টার মতো অপরাধের কোনও ইঙ্গিত দেয় না।’’
আদালত জানিয়েছে, মামলার নিষ্পত্তি হওয়া অথবা পরবর্তী নির্দেশে আসা না পর্যন্ত নিম্ন আদালতের রায় স্থগিত থাকবে। তবে একই সঙ্গে ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, এই পর্যবেক্ষণগুলি কখনই আবেদনের শুনানিতে প্রভাব ফেলবে না।
উল্লেখ্য, চূড়ান্ত শুনানির পর যদি অভিযুক্তকে শুধুমাত্র পকসো আইনের ‘চরম যৌন নির্যাতনে’র ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়, তবে সাজা কমে পাঁচ থেকে সাত বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। অভিযুক্ত ইতিমধ্যেই দু’বছর চার মাস জেল খেটে ফেলেছেন।