Anubrata Mondal

শুক্রে অনুব্রতের মামলা দিল্লি হাই কোর্টে, কেষ্টকে আসানসোলের আদালতে হাজির করাবে সিবিআইও

এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে কি না, দিল্লি হাই কোর্টে সেই প্রশ্নের উপর চলবে শুনানি।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২২ ১৮:২৩
অনুব্রত মণ্ডল। ফাইল ছবি।

অনুব্রত মণ্ডল। ফাইল ছবি।

একই দিনে দুই আদালতে উঠতে চলেছে অনুব্রত মণ্ডলের মামলা। একটি আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে, অন্যটি, দিল্লি হাই কোর্টে। দুই আদালতের শুনানির সময়ও প্রায় এক। গরু পাচার মামলায় ধৃত অনুব্রত বর্তমানে আসানসোল সংশোধনাগারে বন্দি। শুক্রবার বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতিকে আসানসোলের আদালতে হাজির করিয়ে জেল হেফাজতের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করবে সিবিআই। অন্য দিকে, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে কি না, দিল্লি হাই কোর্টে সেই প্রশ্নের উপর চলবে শুনানি।

গরু পাচারের তদন্তে অনুব্রতে প্রথমে সিবিআই গ্রেফতার করে। সম্প্রতি ওই মামলায় আসানসোল জেলেই তাঁকে গ্রেফতার করে ইডি (যদিও অ্যারেস্ট মেমোতে সই করেননি অনুব্রত)। কেষ্টকে দিল্লি নিয়ে আসতে চেয়ে রাজধানীর রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে আবেদনও করে তারা। তার বিরুদ্ধেই দিল্লি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন তৃণমূল নেতার আইনজীবীরা। পোড়খাওয়া আইনজীবী কপিল সিব্বল তাঁর হয়ে সওয়াল করেন। সিব্বলের যুক্তি ছিল, অনুব্রতের বিরুদ্ধে যে সমস্ত অপরাধের অভিযোগ, তার সবটাই পশ্চিমবঙ্গে হয়েছে। যে সব সম্পত্তি আটক করা হয়েছে, তা-ও পশ্চিমবঙ্গে। ইডি প্রয়োজনের সেখানেই অনুব্রতকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করুক।

Advertisement

ইডির আইনজীবীর পাল্টা যুক্তি ছিল, একই মামলায় অনুব্রতের এককালের দেহরক্ষী গরু পাচার মামলায় ধৃত সহগল হোসেনকেও দিল্লি এনে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছিল আদালত। এর পরেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মামলার উদাহরণ টেনে পাল্টা সওয়াল করেন সিব্বল। গত মে মাসে সুপ্রিম কোর্ট কয়লা পাচার মামলায় অভিষেক ও তাঁর স্ত্রী রুজিরাকে দিল্লির বদলে প্রয়োজনে কলকাতাতেই জিজ্ঞাসাবাদ করতে ইডিকে নির্দেশ দেয়। শীর্ষ আদালতের সেই রায়ই তুলে ধরেন সিব্বল। সূত্রের খবর, এই সওয়াল-জবাবের পর শুক্রবার দিল্লি হাই কোর্টে সিদ্ধান্ত হতে পারে, অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি ইডিকে দেওয়া হবে কি না।

অন্য দিকে, শুক্রবারই অনুব্রতের জেল হেফাজতের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। ওই দিন সকালে তাঁকে আসানসোলের আদালতে হাজির করানো হবে। সিবিআই সূত্রে খবর, অনুব্রত ও তাঁর মেয়ে সুকন্যার নামে লটারিতে কোটি কোটি টাকার লক্ষ্মী-লাভ নিয়ে তদন্ত ইতিমধ্যেই অনেক দূর এগিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, গত চার বছরে অনুব্রত, তাঁর স্ত্রী, মেয়ে সুকন্যা, তাঁদের আত্মীয় ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৬ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা জমা পড়েছে। বীরভূমের দু’টি রাষ্ট্রায়ত্ত ও একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে ওই অ্যাকাউন্টগুলি রয়েছে। এই ঘটনা জানতে ইতিমধ্যেই তিন ব্যাঙ্ক আধিকারিককে তলব করেছে সিবিআই। বুধবারও বোলপুরে একটি বেসরকারি ব্যাঙ্ক শাখার আধিকারিককে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তদন্তকারীরা। সেই সংক্রান্ত বিষয় অনুব্রতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্ত চালিয়ে তাঁকে আরও কিছু দিন জেল হেফাজতে রেখে দেওয়ার আবেদন করা হবে সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement