গণপিটুনিতে কড়া আইন চায় কেন্দ্র। — ফাইল চিত্র।
প্রতি দিনই দেশের কোথাও না কোথাও ঘটে গণপিটুনি। অনেক সময়েই তার শিকার হন নিরাপরাধ ব্যক্তি। আবার কেউ দোষ করলেও আইনের মাধ্যমে সাজা পাওয়ার আগেই চরম শাস্তি পেয়ে যান। উন্মত্ত জনতা আইন নিজেদের হাতে তুলে নেওয়ায় অনেক সময়েই গণপিটুনির জেরে মৃত্যুও হয়। এ বার আইন হাতে তুলে নেওয়ার বিরুদ্ধেই কড়া আইন আনতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। বুধবার লোকসভায় দণ্ডসংহিতা সংক্রান্ত তিনটি বিল নিয়ে বক্তৃতায় এমনটাই জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি বলেন, ‘‘নতুন আইনে গণপিটুনির সাজা হিসাবে দোষীদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়ারও বিধি রাখা হয়েছে।’’
গত বাদল অধিবেশনেই লোকসভায় তিনিটি বিল আনে কেন্দ্রীয় সরকার। ‘ভারতীয় ন্যায় সংহিতা ২০২৩’, ‘ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা ২০২৩’ এবং ‘ভারতীয় সাক্ষ্য ২০২৩’ নামের বিল তিনটিতে নতুন করে সংশোধন আনা হয় শীতকালীন অধিবেশনে। এই তিনটি বিল নিয়ে আলোচনা শুরু হয় বুধবার। চলতি অধিবেশনে লোকসভার ৯৭ জন সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। ফলে প্রায় লোকসভা বিরোধীশূন্য। সেখানেই এই তিনটি বিল নিয়ে আলোচনা শুরু করে গণপিটুনির সাজা মৃত্যুদণ্ডের বিধান ছাড়াও ব্রিটিশ আমলের রাষ্ট্রদ্রোহ আইন তুলে দেওয়ার কথা জানান। শাহ বলেন, ‘‘রাষ্ট্রদ্রোহ আইন তৈরি হয়েছিল ব্রিটিশ শাসনের সময়ে। সেই সময়ে মহাত্মা গান্ধী থেকে সর্দার পটেলদের মতো স্বাধীনতা সংগ্রামীদের এই আইনে গ্রেফতার করা হয়েছিল। বছরের পর বছর জেলে রাখা হয়েছিল। এই প্রথমবার নরেন্দ্র মোদী সরকার ঠিক করেছে সেই আইন পুরোপুরি বাতিল করে দেওয়া হবে।’’ একই সঙ্গে শাহ জানিয়ে দেন, বর্তমান আইন বাতিল হলেও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যায় এমন যে কোনও অপরাধ শাস্তিযোগ্যই থাকবে।
আইন বদল সম্পর্কে বলতে গিয়ে শাহ বুধবার লোকসভায় জানান, কেন্দ্র চায় পরাধীন ভারতের আইন বদলে যাক। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সেই দাসত্বের সব চিহ্ন মুছে দিতে চলেছেন।’’ একই সঙ্গে বলেন, ‘‘স্বাধীনতার পরে নরেন্দ্র মোদীর সরকারই এক মাত্র ভোটের আগে দেওয়া সমস্ত প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে চলেছে।’’ প্রসঙ্গত, বুধবারই ধ্বনিভোটে তিনটি বিলই লোকসভায় পাশ হয়ে গিয়েছে।