Abhishek Bannerjee

Abhishek Banerjee: 'এক ডাকে অভিষেকে'ই না থেমে, এ বার দুয়ারে অভিষেক, ডায়মন্ড হারবারের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে যাবেন সাংসদের প্রতিনিধি

এক ডাকে অভিষেকেই আটকে না থেকে নিজের প্রতিনিধি নিজের সংসদীয় এলাকা ডায়মন্ড হারবারের বাসিন্দাদের বাড়ি বাড়ি পাঠাচ্ছেন সাংসদ।

Advertisement
অমিত রায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২২ ১৫:৫৭
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

নিজের লোকসভা কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারের মানুষের আরও কাছে পৌঁছে যেতে চাইছেন সাংসদ তথা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ১৮ জুন পৈলানে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে 'এক ডাকে অভিষেক' কর্মসূচির ঘোষণা করেন তিনি। সেই ঘোষণায় একটি হেল্প লাইন নম্বর চালু করা হয়। ৭৮৮৭৭৭৮৮৭৭ নম্বর দিয়ে তাতে ফোন করে এলাকাবাসীকে তাঁদের যাবতীয় সমস্যার কথা সাংসদকে জানাতে বলেন অভিষেক। বাংলার রাজনীতিতে নিজের কেন্দ্রের জন্য এমন জনসংযোগের প্রয়াস নিঃসন্দেহে অভিনব বলেই মনে করছে বাংলার রাজনীতির কারবারিরা। কিন্তু নিজের এই কর্মসূচিকে কেবল ফোনালাপেই আটকে না রেখে আরও কিছু উদ্যোগ নিয়েছেন অভিষেক। সেই কর্মসূচির নির্দেশ ইতিমধ্যে ডায়মন্ড হারবার লোকসভার অধীন জেলা থেকে শুরু করে ব্লক স্তরের নেতাদের কাছে পৌঁছে গিয়েছে।

সূত্রের খবর, অভিষেকের কালীঘাটের দফতর থেকে পাঠানো সেই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, প্রত্যেকটি বুথের ১০টি পরিবারের কাছে পৌঁছে যেতে হবে নেতাদের। সেই পরিবারগুলি যাতে কোনওভাবেই শাসকদল তৃণমূল ঘেঁষা না হয়, সে ব্যাপারেও বার্তা স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে সাংসদের দফতর থেকে। তুলনামূলক ভাবে নিরপেক্ষ বা রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নন এমন পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের সমস্যার কথা যেমন শুনতে হবে, তেমনই এলাকার উন্নয়ন নিয়ে সাংসদের কাছে তাঁরা কোনও প্রস্তাব পাঠাতে চান কিনা সে ব্যাপারেও জানতে চাওয়া হবে। সাক্ষাৎ পর্বের পর বুথভিত্তিক রিপোর্ট তৈরি করে তা পাঠাতে হবে সাংসদের দফতরে।

Advertisement

এই কর্মসূচির জন্য পুর এলাকাগুলিতে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট পুরসভার চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, ব্লক তৃণমূল সভাপতি ও ব্লক তৃণমূল যুব সভাপতিকে। ডায়মন্ডহারবার এলাকায় চারটি পুরসভা রয়েছে। মহেশতলা, বজবজ, পুজালী ও ডায়মন্ডহারবার। সেই পুরসভাগুলিতে বুথভিত্তিক বাড়িতে যাওয়ার কাজ শুরু করে দিয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। এছাড়াও গ্রামীণ এলাকায় রয়েছে বিষ্ণুপুর-১ ও ২ পঞ্চায়েত সমিতি, বজবজ -১ ও ২ পঞ্চায়েত সমিতি, ডায়মন্ড হারবার -১ ও ২ পঞ্চায়েত সমিতি এবং ফলতা পঞ্চায়েত সমিতি। এই সাতটি ব্লকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, সহ-সভাপতি, সংশ্লিষ্ট গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধান ও উপপ্রধান, ব্লক তৃণমূল সভাপতি ও ব্লকের তৃণমূল যুব সভাপতিদের।

বাংলার রাজনীতির কারবারিরা অভিষেকের এই কর্মসূচির সঙ্গে মিল পাচ্ছেন 'দিদিকে বলো' কর্মসূচির। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পর প্রশান্ত কিশোরের তত্ত্বাবধানে তৃণমূল নেতৃত্ব শুরু করেছিল 'দিদিকে বলো' কর্মসূচি। সেই কর্মসূচিতেও হেল্পলাইন নম্বর জারি করে নিজেদের সমস্যার কথা জানাতে বলা হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দাদের। পাশাপাশি, দলীয় বিধায়ক ও নেতাদের জনসংযোগের কাজে বাড়ি বাড়ি গিয়ে থাকা-খাওয়ার সঙ্গে রাত্রিবাসের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, 'এক ডাকে অভিষেকে' কর্মসূচিতে নেতাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে থাকা-খাওয়ার বদলে দিনের বেলায় বাসিন্দাদের বাড়ি গিয়ে তাঁদের সুখ-দুঃখের কথা জেনে সাংসদের দফতরে পাঠাতে বলা হয়েছে। সূত্রের খবর, 'দিদিকে বলো'-র মতো এই কর্মসূচিও প্রশান্তর সংস্থা আইপ্যাকের মস্তিষ্কপ্রসূত। এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী এক নেতার কথায়, "আমরা দিন কয়েক হল আমরা এই কর্মসূচি শুরু করেছি। এ ভাবে মানুষের দরজায় দরজায় গিয়ে আমরা এমন অনেক কথাই জানতে পারছি যা বাইরে থেকে রাজনীতি করলে জানতে পারতাম না। তাই সাংসদের নেওয়া এমন উদ্যোগ সফল হবে বলেই আশা করছি।"

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement