বহড়ু এসে পৌঁছলেন মনিরুল। —নিজস্ব চিত্র।
জন্ম থেকেই দুই পা অকেজো। সর্বক্ষণের সঙ্গী ট্রাই সাইকেল। সেই অবস্থাতেই ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর পাশ করেছেন বছর চল্লিশের মনিরুল ইসলাম মণ্ডল। কিন্তু চাকরি মেলেনি। যা-ও বা একটা অস্থায়ী চাকরি পেয়েছিলেন, তা-ও আর নেই এখন। সংসার চালাতে ভরসা প্রতিবন্ধী ভাতার হাজার টাকাটুকুই।
চাকরির দাবিতে তাই মঙ্গলবার মনিরুল মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন জয়নগরের বহড়ুতে। কুলতলি থেকে প্রায় পঁচিশ কিলোমিটার পথ পেরিয়েছেন নিজের ওই ট্রাই সাইকেলে।
কুলতলির কুন্দখালি গোদাবর পঞ্চায়েতের কীর্তনখোলা গ্রামের বাসিন্দা মনিরুল জানান, দক্ষিণ বারাসত কলেজ থেকে ইংরেজিতে স্নাতক ডিগ্রি পান। পরে দূরশিক্ষায় স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ হয়েছেন। তাঁর দাবি, স্থানীয় পঞ্চায়েত দফতরে অস্থায়ী কাজে ঢুকেছিলেন। বছর দু’য়েক পরে সেই দফতর দোতলায় স্থানান্তরিত হয়। তখন দফতরে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে মনিরুলে। সেই কারণে কাজটিও চলে যায় বলে দাবি করেন তিনি।
পরে নানা জায়গায় কাজের চেষ্টা করেছেন মনিরুল। কিন্তু তেমন সুযোগ মেলেনি। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হলে একটা বিহিত হতে পারে, এই ভরসায় এসেছিলেন এ দিন। হাতে লেখা একটি চিঠি ছিল সঙ্গে। তবে নিরাপত্তার কড়াকড়িতে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সামনাসামনি দেখা হয়নি। মনিরুল পরে বলেন, ‘‘চাকরির আশায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলাম। দেখাটাই হল না!’’
বিষয়টি জেনে কুলতলির বিধায়ক গণেশ মণ্ডল পরে বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে দেখা করলে চেষ্টা করব ওঁর পাশে থাকতে।’’ তবে বিরোধীদের কটাক্ষ, ধর্মতলায় যেখানে হাজার দিন পেরিয়ে গেল চাকুরিপ্রার্থীদের ধর্না, সেখানে প্রতিবন্ধী যুবকের আবেদন কি আদৌ উপর মহলের কানে পৌঁছবে!