Saugata Roy

বার বার ডাকছে ইডি, কামারহাটির পুরপিতা সেই গোপালকে কাজ না করায় ভর্ৎসনা সাংসদ সৌগতের

বেলঘরিয়ায় কামারহাটি পুরসভার বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে গিয়ে পুরপরিষেবা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন দমদমের তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। চেয়ারম্যানকে দাঁড় করিয়ে পরিষেবা নিয়ে ভর্ৎসনা করেন সৌগত।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কামারহাটি শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২৩ ১১:৪৩
File image of MP Saugata Roy

তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। — ফাইল ছবি।

পুর নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে কামারহাটি পুরসভার পুরপ্রধান গোপাল সাহাকে দফায় দফায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি। সেই গোপালকেই কাজ না করার অভিযোগে ধমক দিলেন দমদমের তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। প্রবীণ সাংসদ প্রকাশ্যমঞ্চ থেকে ভর্ৎসনা করেন পুরপ্রধানকে। সরাসরি গোপালকে সম্বোধন করে সৌগত বলেন, ‘‘পুরসভাটা ভাল চলছে না। কাজ হচ্ছে না।’’ পাশাপাশি, পুরসভার অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়রকেও কটাক্ষ করেন তৃণমূলের বর্ষীয়ান সাংসদ।

Advertisement

উপলক্ষ, পুরসভার বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠান। বেলঘরিয়ায় সেই অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে পুরসভাকেই কড়া ভাষায় ধমকে দিলেন সাংসদ সৌগত। প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে কামারহাটির পুরপ্রধান গোপালকে একাধিক বার ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি। ডাক পেয়েছেন পুরসভার অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়র তমাল দত্তও। আপাতত তিনি সাসপেন্ড হয়ে আছেন। বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে এই দু’জনকেই বেছে নেন সৌগত। পুরপিতা গোপালকে পাশে দাঁড় করিয়ে সৌগত বলেন, ‘‘গোপালকে আমি বলছি, এই পুরসভাটা ভাল চলছে না। পুরসভায় কাজ হচ্ছে না।’’ এর পরেই সৌগতের কথায় উঠে আসে অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়রের নাম। তিনি বলেন, ‘‘কে একটা লোক তমাল না কি নাম... তমাল দত্ত, অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়র। তিনি সাসপেন্ড হয়েছেন। তাতে পুরসভার কাজ কেন বন্ধ হয়ে যাবে? সবাই আমায় বলছে, কোনও কাজ হচ্ছে না। অর্ডার ইস্যু হচ্ছে না। একটা ময়লার গাড়ি আনতে গেলে নাকি তমাল দত্তকে বলতে হয়...। তমাল দত্ত কোন এমন মহাপুরুষ! আমি গোপালকে বলব, মানুষ যাতে পরিষেবা পায়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।’’

শুধু চেয়ারম্যান এবং পুরকর্তাই নন, সৌগতের নিশানায় ছিলেন পুরসভার সাধারণ কাউন্সিলররাও। তিনি প্রশ্ন তোলেন, মানুষ কি এই জন্য আমাদের ভোট দিয়েছে? সৌগত বলেন, ‘‘মানুষ আমাদের ভোট দিয়ে বসিয়েছেন। আমরা যদি তাঁদের পরিষেবাটুকু দিতে না পারি, তা হলে আমাদের থাকার কোনও মানে হয় না। নিজেরা বসে অন্য আলোচনা না করে কী করে পুরসভাটাকে ঠিক করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা করুন।’’

সাংসদ সৌগতের ধমককে অবশ্য কটাক্ষে ভরিয়ে দিয়েছে বিরোধীরা। সিপিএম নেতা সুব্রত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সাংসদ এখন তাঁর দলের লোককেই ধমক দিচ্ছেন, যাতে পুরসভার তদন্তের দিকটা অন্য দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া যায়। সাংসদ আগে থেকেই জানেন, কামারহাটি পুরসভার পরিষেবার হাল বেহাল!’’ বিজেপি নেতা কিশোর কর বলেন, ‘‘তৃণমূলের হাল খুবই খারাপ। না হলে তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার বেহাল পরিষেবা নিয়ে দলেরই পুর প্রধানকে ধমক দিতে হয় সাংসদ সৌগত রায়কে! আগামিদিনে এমন অনেক কিছু দেখা বাকি আছে সাধারণ মানুষের।’’

প্রসঙ্গত, পুরসভায় নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। আদৌ দুর্নীতি হয়েছে কি না, তার তদন্ত করছে তদন্তকারী সংস্থা। এই মামলায় একাধিক বার চেয়ারম্যান গোপালকে সিজিও কমপ্লেক্সে ডেকে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি। পুরসভার অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়র তমালকেও ডেকে পাঠিয়েছিল ইডি। আপাতত তাঁকে সাসপেন্ড করে রাখা হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চে পুরপ্রধান এবং সাসপেন্ড হওয়া এক পুর আধিকারিককে শাসকদলের বর্ষীয়ান সাংসদের ভর্ৎসনার ঘটনা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন
Advertisement