West Bengal Panchayat Election 2023

হাঙরের মতো গিলে খেতে চাইছে তৃণমূল, দাবি বিজেপি নেতৃত্বের

রাজ্য জুড়ে পঞ্চায়েতে তৃণমূল সাফল্য পেলেও কিছু জায়গায় জমি কেড়ে নিয়েছে বিরোধীরা। বেশ কিছু পঞ্চায়েতে ত্রিশঙ্কু পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বোর্ড গঠনের দৌড়ে কে কোথায়, খতিয়ে দেখল আনন্দবাজার

Advertisement
সীমান্ত মৈত্র  
বাগদা শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০২৩ ০৯:০৯
Graphical representation

—প্রতীকী ছবি।

পঞ্চায়েত ভোটের ফলাফলে এ বার বাগদা ব্লকের রণঘাট পঞ্চায়েতে ফলাফল ত্রিশঙ্কু। কোনও দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা বা মোট আসনের ৫০ শতাংশের বেশি আসন পায়নি। প্রশাসন সূত্রের খবর, রণঘাট গ্রাম পঞ্চায়েতে মোট আসন ৩০টি। তৃণমূল জয়ী হয়েছে ১৫টি আসনে। বিজেপি ১২টি ও সিপিএম ৩টি আসন পেয়েছে। অর্থাৎ বিরোধীদের মোট আসন তৃণমূলের পাওয়া আসনের সমান।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার ভোটে বাগদা ব্লকের ৯টি পঞ্চায়েতের মধ্যে হেলেঞ্চা, কোনিয়াড়া ১, কোনিয়াড়া ২ পঞ্চায়েতে আসন সংখ্যার নিরিখে বিজেপি এগিয়ে আছে। অভিযোগ, ত্রিশঙ্কু রণঘাট পঞ্চায়েত দখল করতে তৎপরতা শুরু করেছে তৃণমূল বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্ব। ওই পঞ্চায়েতের ডহরপোতা গ্রাম থেকে প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল প্রার্থীকে পরাজিত করে জয়ী হয়েছেন বিজেপির রুমা মণ্ডল। সম্প্রতি বনগাঁ শহরে তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা কার্যালয়ে রুমার হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস।

Advertisement

এ প্রসঙ্গে বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি রামপদ দাস বলেন, ‘‘তৃণমূল হাঙরের মতো সব গিলে খেতে চাইছে। ভোট এবং গণনা-পর্বে তৃণমূল ছাপ্পা, ব্যালট লুট করেছে। শংসাপত্র ছিঁড়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এজেন্টদের মারধর করে বের করে দিয়ে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে ওরা। তারপরেও আমরা যেখানে জিতেছি, সেখানকার প্রার্থীদের ভয় দেখিয়ে, হুমকি দিয়ে বা অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে নিজেদের দলে টেনে নিচ্ছে। জয়ী প্রার্থীদের সুরক্ষিত রাখতে দলের পক্ষ থেকে কিছু পরিকল্পনা করা হয়েছে।’’ রুমা অবশ্য বলেন, ‘‘আগে থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর কাজের প্রতি আমি আকৃষ্ট ছিলাম। ওই দলে সুযোগ পাইনি বলে বিজেপির হয়ে দাঁড়িয়েছিলাম। এখন তৃণমূলে যোগদান করে ভাল লাগছে।’’ বিজেপির একটি সূত্র জানাচ্ছে, রুমার পরিবারের সঙ্গে বিজেপি নেতৃত্ব এখনও যোগাযোগ রেখে চলেছেন। বোঝানোর চেষ্টা চলছে।

বিজেপির বাগদা ব্লকের নির্বাচনী যুগ্ম আহ্বায়ক শিশির হাওলাদার বলেন, ‘‘আমাদের জয়ী ১২ জন প্রার্থীদের মধ্যে একাধিক প্রার্থীকে তৃণমূলের পক্ষ থেকে প্রলোভন দেওয়া হয়েছে। এক জন ছাড়া কেউ সেই প্রলোভনে পা দেননি। যে জয়ী প্রার্থী চলে গিয়েছেন, তাঁকে প্রধান করার টোপ দেওয়া হয়েছে। তৃণমূলের প্রচুর টাকা। টাকা ছড়ানো হচ্ছে। পুলিশ-প্রশাসনকেও ব্যবহার করা হচ্ছে।’’ শিশিরের দাবি, ‘‘আমরা রুমার বাড়িতে গিয়েছিলাম কথা বলতে। সঙ্গে সঙ্গে সেখানে এক গাড়ি পুলিশ পৌঁছে গিয়েছিল।’’ যদিও অভিযোগ মানেনি পুলিশ।

বিজেপির অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘বিজেপির হয়ে যাঁরা ভোটে জিতেছেন তাঁরা অভিভাবকহীন। তাই তাঁদের অনেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের শরিক হতে তৃণমূল আসতে চাইছেন। আমরা সকলের জন্য দরজা খুলে দিচ্ছি না। স্বচ্ছ ভাবমূর্তির সদস্যদের নেওয়া হচ্ছে। বনগাঁ সাংগঠনিক জেলায় যে ক’টি পঞ্চায়েতে বিজেপি এগিয়ে আছে, শীঘ্রই তা তৃণমূলের দখলে আসবে।’’

সিপিএম নেতৃত্ব অবশ্য জানিয়েছেন, তাঁদের জয়ী তিন প্রার্থীকে তৃণমূলের পক্ষ থেকে কোনও চাপ বা প্রলোভন দেওয়া হয়নি। বাগদার সিপিএম নেতা সুশান্ত চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমরা বোর্ড গঠনের ক্ষেত্রে তৃণমূল এবং বিজেপির থেকে সমদূরত্ব বজায় রাখব।’’

আরও পড়ুন
Advertisement