ভাঙড় থানায় লাগানো হচ্ছে নতুন সাইনবোর্ড। —নিজস্ব চিত্র।
প্রশাসনিক ঘোষণা হয়েছিল আগেই। সেই মতো শুরু হয়েছিল পুলিশি তৎপরতাও। অবশেষে রবিবার বদলে গেল থানার সাইনবোর্ডও। এ দিন ভাঙড় থানার গেট থেকে খুলে ফেলা হল পুরনো সাইনবোর্ড। বদলে লাগানো হল নতুন সাইনবোর্ড। পুরনো সাইনবোর্ডে লেখা থাকত ভাঙড় থানা। নতুন সাইনবোর্ডে একই সঙ্গে লেখা হল ‘ভাঙড় ডিভিশন, কলকাতা পুলিশ’। কাশিপুর থানাতেও এই নতুন সাইনবোর্ড লাগানো হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
গত ২৬ জুলাই আলিপুরের বডিগার্ড লাইন্স-এ একটি অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তিনি ভাঙড়ে কলকাতা পুলিশের আলাদা ডিভিশন করার নির্দেশ দেন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে। রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালবীয়কেও এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণার পর থেকেই উত্তপ্ত ভাঙড়। তৃণমূল এবং আইএসএফ কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। মৃত্যুও হয় বেশ কয়েক জনের। তার পরেই বিভিন্ন মহলে ভাঙড়কে কলকাতা পুলিশের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জোর পায়। যে কথার প্রতিধ্বনি শোনা যায় আলিপুর বডিগার্ড লাইন্স-এ মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেই তৎপর হয় পুলিশ প্রশাসন। ভাঙড়ের গোটা এলাকা ধরে মোট আটটি থানা তৈরির সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। দফায় দফায় পরিদর্শনে যান লালবাজারের কর্তারা। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, থানার পরিকাঠামো এবং অন্যান্য বিষয় সামলাতে ডিসির নেতৃত্বে গড়ে দেওয়া হবে দল।
কলকাতা পুলিশের আওতায় আসার পর ভাঙড়কে ভাগ করা হয় আটটি থানা এলাকায়। থানাগুলির পরিকাঠামোগত পরিকল্পনার জন্য পৃথক দলও গড়ে দেয় লালবাজার। এক জন ডিসির নেতৃত্বে মোট চার জন ইনস্পেক্টরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। জানা যায়, নতুন ভাবে হাতিশালা, পোলেরহাট, উত্তর কাশীপুর, বিজয়গঞ্জ বাজার, মাধবপুর, চন্দনেশ্বর, বোদরা এবং ভাঙড়— এই আটটি থানা তৈরি হচ্ছে। এর পাশাপাশি একটি ট্রাফিক গার্ড ও একটি মহিলা পুলিশ থানা তৈরি হচ্ছে। রাজ্য পুলিশের হাত থেকে ভাঙড়ের দায়িত্ব কলকাতা পুলিশের হাতে আসার পরে প্রাথমিক ভাবে আটটি থানা তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। ভাঙড় এলাকার মধ্যেই পড়ে লেদার কমপ্লেক্স থানা। যদিও এই থানার দায়িত্ব আগেই কলকাতা পুলিশের হাতে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লালবাজার সূত্রে খবর, নতুন আটটি থানায় কী কী পরিকাঠামো প্রয়োজন তা খতিয়ে দেখার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এক জন ডিসি পদমর্যাদার আধিকারিককে। তাঁর নেতৃত্বে কাজ করবেন চার জন ইনস্পেক্টর পদমর্যাদার অফিসার। এক জন ইনস্পেক্টর দু’টি করে থানার পরিকাঠামোর দায়িত্বে থাকবেন।