খতিয়ান মানতে চাইছেন না জেলার বহু কৃষক
Damaged Crops

উত্তরে চাষে ক্ষতি শুধুমাত্র তিন ব্লকে, দাবি কৃষি দফতরের রিপোর্টে

ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের শেষ দিকে দু’দিন বৃষ্টি হয়েছিল। কৃষকদের দাবি, ওই সময় বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ধান, ডাল, তৈলবীজ, আলু ও অন্যান্য আনাজ। ব্লকের কৃষি আধিকারিকেরা ফসলের ক্ষতির হিসাব করেন।

Advertisement
ঋষি চক্রবর্তী
বারাসত শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২৪ ০৯:০৪
An image of crops

ডিসেম্বরের শুরুর অকালবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত খেতের ধান, আমডাঙার রাহানায়। ছবি: সুদীপ ঘোষ।

ডিসেম্বরের বৃষ্টিতে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা জুড়েই চাষে ক্ষতি হয়েছিল বলে চাষিদের হাহাকার শোনা গিয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি প্রকাশিত কৃষি দফতরের রিপোর্ট বলছে, ক্ষতি হয়েছে বনগাঁ মহকুমার তিনটি ব্লকে। এই রিপোর্ট দেখে অবাক জেলা প্রশাসনের একাংশ। ক্ষতির এই খতিয়ান মানতে চাইছেন না চাষিরাও।

Advertisement

ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের শেষ দিকে দু’দিন বৃষ্টি হয়েছিল। কৃষকদের দাবি, ওই সময় বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ধান, ডাল, তৈলবীজ, আলু ও অন্যান্য আনাজ। ব্লকের কৃষি আধিকারিকেরা ফসলের ক্ষতির হিসাব করেন। জেলা কৃষি দফতরের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, বারাসত, বসিরহাট এবং ব্যারাকপুর মহকুমার ব্লকগুলিতে চাষে কোনও ক্ষতি হয়নি। বনগাঁ মহকুমার বনগাঁ, বাগদা ও গাইঘাটা ব্লকের চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কিন্তু কৃষকদের দাবি, বারাসত ১, আমডাঙা, দেগঙ্গা, হাবড়া ১ ও ২ ব্লক ছাড়াও বসিরহাট মহকুমার সব ব্লকের চাষিদের ধান ওই সময় মাঠে বৃষ্টিতে ভিজেছে।

সরকারি খতিয়ানে দেখানো হয়েছে, বনগাঁ, বাগদা ও গাইঘাটা ব্লকে ১১ বাজার ১৫০ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দু’দিনের বৃষ্টিতে। যার মধ্যে ১৫৩৫ হেক্টর জমির ধান, ২৪৬৭ হেক্টর জমির ডাল, ৫১৪৯ হেক্টর জমির তৈলবীজ ও ১৯৯৮ হেক্টর জমির আলু এবং আনাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

জেলা প্রশাসনের একটি সূত্রের খবর, আমডাঙা, দেগঙ্গা, বাদুড়িয়া, হাবড়া ১ ও ২ ছাড়াও বসিরহাট মহকুমার ব্লকগুলি কৃষি নির্ভর। বৃষ্টি সর্বত্র হয়েছে। ফলে এখানকার চাষিদেরও ক্ষতি হওয়াটাই স্বাভাবিক।

বনগাঁ মহকুমা কৃষি দফতরের আধিকারিদের দাবি, “এখানে বৃষ্টির জলে ক্ষতি হয়েছে কৃষকদের। জেলার কৃষিনির্ভর অন্য ব্লকেও ক্ষতির পরিমাণ শূন্য হওয়া অস্বাভাবিক ঘটনা।”

দেগঙ্গা ও আমডাঙা ব্লকের কৃষি আধিকারিকদের দাবি, বৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতি হয়নি ব্লক দু’টিতে। তবে, দেগঙ্গার কৃষক শামসুল ইসলাম, খোকন বিশ্বাস, রতন মণ্ডলদের দাবি, বৃষ্টিতে ক্ষতি হয়েছে ধান ও আনাজের। মহকুমা কৃষি আধিকারিকেরা মাঠ পরিদর্শনে এসেছিলেন বলেও জানান তাঁরা। আমডাঙা ব্লকের রেজ্জাক মণ্ডল, রইসুদ্দিন গাজি, রোকন মণ্ডল, আনসার আলিরা জানান, বৃষ্টিতে আলু চাষের ক্ষতি হয়। ব্লক অফিসের আধিকারিকরা তা পরিদর্শনও করে যান।

জেলা প্রশাসনের দাবি, চাষিরা প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হলে শস্যবিমা থেকে ক্ষতিপূরণ পাবেন। ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের তালিকা তৈরি করেন ব্লক প্রশাসনের কৃষি আধিকারিকরা। ইতিমধ্যে ফসলের ক্ষতির পরিমাণ জেলাশাসকের দফতরে পৌঁছেছে।

আরও পড়ুন
Advertisement