Student Mystery Death

ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই মৃত্যু কাকদ্বীপের পড়ুয়ার! ‘যাদবপুরের মতো’ হেনস্থার অভিযোগ পরিবারের

পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তবে ওই পড়ুয়াকে র‌্যাগিং করা হয়েছে বলে এখনই মনে করছে না পুলিশ। পুলিশের তরফে ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ার কথা স্বীকার করা হয়েছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০২৩ ১৭:১৬
Student in Kakdwip kills self after a video goes viral, Parents brings ragging accusation

—প্রতীকী ছবি।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রমৃত্যুতে ইতিমধ্যেই রাজ্য জুড়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে র‌্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন মহল। সেই আবহেই এক ছাত্রের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে নতুন করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপে। গত ১৬ জুলাই কাকদ্বীপের হারউড পয়েন্ট কোস্টাল থানার স্টিমারঘাট এলাকায় ওই পড়ুয়ার বাড়ি থেকে তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। কাকদ্বীপ আদর্শ বিদ্যামন্দিরের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল সে। পরিবারের অভিযোগ, উঁচু ক্লাসের পড়ুয়াদের হেনস্থা, শাসানি এবং হুমকি সহ্য করতে না পেরে অবসাদে আত্মহত্যা করেছে ওই দশম শ্রেণির পড়ুয়া। সমাজমাধ্যমে মৃত ছাত্রের একটি ভিডিয়ো ভাইরাল করে দেওয়ার অভিযোগও আনা হয়েছে ওই উঁচু ক্লাসের পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে। ২৭ তারিখ এই বিষয়ে হারউড পয়েন্ট কোস্টাল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন মৃত ছাত্রের পরিবার। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে সুন্দরবন জেলার পুলিশ প্রশাসন। তবে ওই পড়ুয়াকে র‌্যাগিং করা হয়েছে বলে এখনই মনে করছে না পুলিশ। যদিও পুলিশের তরফে ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ার কথা স্বীকার করা হয়েছে।

Advertisement

ভাইরাল সেই ভিডিয়োতে (ভিডিয়োটির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।) দেখা গিয়েছে, এক জন কিশোরের পা ধরে ক্ষমা চাইছে অন্য এক কিশোর। এক বার পা ধরে ক্ষমা চাওয়ার পর তাকে আবার পা ধরে ক্ষমা চাইতে বলা হয়। পা ধরে বলতে বলা হয়, ‘দাদা আমার ভুল হয়ে গিয়েছে, আমাকে ক্ষমা করে দাও’। পা ধরে সেই কথা বলতেও দেখা যায় তাকে। এর পর ওই কিশোরকে বলতে শোনা যায়, ‘‘দাদা, এই ভিডিয়ো যেন না ছড়ায়।’’ কিন্তু জুলাই মাসে ভিডিয়োটি সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। বাবা-মার অভিযোগ, তাঁদের ছেলেকেই ওই ভিডিয়োতে পা ধরে ক্ষমা চাইতে দেখা যাচ্ছে। ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ার পরই দশম শ্রেণির ওই পড়ুয়া আত্মহত্যা করে বলে অভিযোগ বাবা-মায়ের।

মৃত ছাত্রের বাবা বলেন, ‘‘১৬ জুলাই আমার ছেলে আত্মহত্যা করে। পরে ওর বন্ধুরা আমাকে একটা ভিডিয়ো দেখায়। ওই ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, আমার ছেলেকে জোর করে এক জনের পা ধরানো হয়েছে। অন্য স্কুলের সিনিয়ররা এটা করেছে। ওকে ফোন করে হুমকি দেওয়া এবং শাসানো হত। বলা হত, রাস্তায় বেরোতে দেবে না। এ জন্য আমার ছেলে অবসাদে ভুগছিল। পুলিশের কাছেও কোনও সাহায্য পাচ্ছি না। উল্টে আমাদের হেনস্থা করা হচ্ছে।’’

মৃতের মায়ের দাবি, ‘‘যাদবপুরে যা ঘটেছে, আমার ছেলের সঙ্গেও তাই ঘটেছে। আমি চাই আমার ছেলের সঙ্গে যারা এ রকম করেছে, তাদের শাস্তি হোক। আমরা পুলিশের কাছে অনেক বার গিয়েছি। কিন্তু সাহায্য পাচ্ছি না। আমরা বিচার চাই।’’

অন্য দিকে, প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে পুলিশের অনুমান, তদন্তে ত্রিকোণ প্রেমের একটি দিক উঠে এসেছে। দশম শ্রেণির মৃত পড়ুয়ার সঙ্গে এক ছাত্রীর সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। আর তার জেরেই অন্য এক পড়ুয়ার সঙ্গে গন্ডগোলের সূত্রপাত। এই প্রসঙ্গে কাকদ্বীপের এসডিপিও প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দশম শ্রেণির এক জন ছাত্র এবং ছাত্রীর মধ্যে সম্পর্ক ছিল। ছাত্রীর সঙ্গে আরও এক জনের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। অন্য জন একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া। এই সম্পর্কের জেরে দুই ছাত্রের মধ্যে গন্ডগোল বাধে। দু’জনেই নাবালক। একটি ভিডিয়োও ভাইরাল হয়। তার পর ওই দশম শ্রেণির ছাত্র আত্মহত্যা করে। তবে এখনই এটাকে র‌্যাগিং বলে মনে করা হচ্ছে না। কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ওই ঘটনা ঘটেনি। রাস্তায় হয়েছে। তদন্ত চলছে।’’

আরও পড়ুন
Advertisement