Success Of Chandrayan-3

সে দিন উত্তেজিত ছিলাম, আজ হলাম গর্বিত

এখনও মনে আছে, আনন্দবাজার পত্রিকায় নীল আর্মস্ট্রং এবং এডুইন অলড্রিনের ছবি দিয়ে প্রথম পাতায় চাঁদের মাটিতে প্রথম মানুষের পা রাখার খবর ছাপা হয়েছিল।

Advertisement
রবীন্দ্রনাথ তরফদার (অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক)
শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০২৩ ০৬:৩৫
১৯৬৮ সালের ২৪ ডিসেম্বর অ্যাপলো-৮ মহাকাশযানে চেপে চাঁদের আকাশ থেকে পৃথিবীর এই ছবি

১৯৬৮ সালের ২৪ ডিসেম্বর অ্যাপলো-৮ মহাকাশযানে চেপে চাঁদের আকাশ থেকে পৃথিবীর এই ছবি তুলেছিলেন উইলিয়াম অ্যান্ড্রুজ। ছবি: উইকিপিডিয়া সৌজন্যে।

সালটা ছিল ১৯৬৯। তখন বনগাঁ দীনবন্ধু মহাবিদ্যালয়ে বিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আমি। বাড়ি ছিল বনগাঁ শহর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে মণিগ্রাম এলাকায়। এক দিন আনন্দবাজার পত্রিকায় পড়লাম, চন্দ্র অভিযান শুরু হচ্ছে। তারপর থেকেই উত্তেজিত ছিলাম। নানা কৌতূহল মনে এসে ভিড় করতে থাকে। তখন টিভি ছিল না। খবর জানতে ভরসা ছিল রেডিয়োর সংবাদ এবং খবরের কাগজ। বন্ধুদের মধ্যে চন্দ্র অভিযান নিয়ে আলোচনা করতাম। সে সব আলোচনার যতটা না বৈজ্ঞানিক ভিত্তি ছিল, তার থেকে বেশি ছিল কল্পনা। কৌতূহল ছিল, মহাকাশচারীরা চাঁদে কী ভাবে সেখানে থাকবেন। অক্সিজেন তো নেই চাঁদের পিঠে। কী খাবেন, কী ভাবে ফিরবেন ওঁরা— এ সব নিয়ে কত কথাই না উঠে আসত বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনায়। কলেজের শিক্ষকদের কাছেও জানতে চাইতাম। কিন্তু তাঁরা বিশেষ কিছু বলতে পারতেন, এমন নয়। কৌতূহল আরও বেড়ে যেত। শিক্ষকেরা কেউ কেউ বলতেন, ‘‘আমরা হয় তো দেখে যেতে পারব না। কিন্তু তোরা দেখবি, এক সময়ে ট্রেনে করে বনগাঁ-শিয়ালদহ যাতায়াতের মতোই চাঁদে যাতায়াত করা যাবে।’’

Advertisement

এখনও মনে আছে, আনন্দবাজার পত্রিকায় নীল আর্মস্ট্রং এবং এডুইন অলড্রিনের ছবি দিয়ে প্রথম পাতায় চাঁদের মাটিতে প্রথম মানুষের পা রাখার খবর ছাপা হয়েছিল। সেই খবর পড়ে মনে হয়েছিল, মানুষের অসাধ্য বলে আর কিছু থাকবে না। মনে হয়েছিল, এ হল পুরো মানব জাতির সাফল্য। ভারত কখনও চাঁদের মাটিতে পা রাখতে পারবে কি না, সে আলোচনাও হত অনেকের সঙ্গে। তবে কেউ তখন ভাবেনি, এই বিশাল কাজ এ দেশের বিজ্ঞানীরাও করে দেখাতে পারবনে।

কিন্তু আজ তো সে ইতিহাসই গড়ল ভারত। চাঁদের মাটিতে পা রাখল চন্দ্রযান-৩।

এখন বনগাঁ শহরের আমলাপাড়ায় থাকি। বুধবার বাড়িতে নাতি-নাতনি সহ বাকি সদস্যদের নিয়ে টিভিতে লাইভ দেখলাম। সে দিনের কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল। আজও একই রকম উত্তেজিত এবং গর্বিত হয়েছি। বাড়ির ছোটদের সে কথাই বলেছি, যা শুনেছিলাম মাস্টারমশাইদের থেকে। বলেছি, ‘‘দেখবি, এমন দিন আসবে, যে দিন তোরা পুজোর ছুটিতে চাঁদে বেড়াতে যাবি!’’

আরও পড়ুন
Advertisement