Plastic Waste

ফের প্লাস্টিক বর্জ্যে ভরছে শহর, নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন

পুরসভার ১৬টি ওয়ার্ডে জনসংখ্যা ৪৫ হাজারের বেশি। স্টেশন বাজার ছাড়াও আরও কয়েকটি ছোট বাজার রয়েছে শহরে। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত প্রায় ১১টা পর্যন্ত সেগুলি খোলা থাকে।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২৪ ০৮:৪৬
নিকাশি নালা বুজেছে প্লাস্টিক বর্জ্যে।

নিকাশি নালা বুজেছে প্লাস্টিক বর্জ্যে। ছবি: দিলীপ নস্কর।

একবার ব্যবহারযোগ্য পাতলা প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ নিষিদ্ধ। কিন্তু ডায়মন্ড হারবার শহরে ওই ব্যাগের দেদার ব্যবহার চলছেই। হুগলি নদীর ধারে প্রাতর্ভ্রমণ সেরে ওই ব্যাগে ভরেই বাজার থেকে আনাজ নিয়ে বাড়ি ফিরছেন বহু বাসিন্দা। সেই প্লাস্টিক ফেলা হচ্ছে রাস্তায়। ভরছে নিকাশি নালা। এ ভাবেই শহর কার্যত ঢাকা পড়েছে প্লাস্টিকে। বহু বাসিন্দারই ক্ষোভ, প্লাস্টিক দূষণ ঠেকাতে কড়া হচ্ছে না পুরসভা।

Advertisement

পুরসভার দাবি, নিষিদ্ধ প্লাস্টিকের ব্যবহার না করার জন্য মাইকে প্রচার, লিফলেট বিলি, জনবহুল এলাকায় হোর্ডিং লাগানো চলেই। তা সত্ত্বেও এক শ্রেণির মানুষের সচেতনতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। অবশ্য ইদানীং পুরসভা ওই প্লাস্টিক রোধে আর অভিযান চালাচ্ছে না, এমন কথাও শোনা যাচ্ছে।

ডায়মন্ড হারবারের উপ-পুরপ্রধান রাজর্ষি দাস মানছেন, প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগের ব্যবহার বন্ধ করা যায়নি। তাঁর দাবি, বেশ কয়েক মাস আগে ওই প্লাস্টিক ব্যবহারের উপরে কড়া নজরদারি, দোকানে দোকানে হানা দিয়ে তা বাজেয়াপ্ত করায় সুফল মিলেছিল। কিন্তু পুরসভা আর অভিযান চালাচ্ছে না কেন? রাজর্ষি বলেন, ‘‘গত কয়েক মাস ধরে লোকসভা নির্বাচন চলায় প্রচার করা যায়নি। ফের প্লাস্টিক ব্যাগের ব্যবহার বন্ধ করতে প্রচারে নামা হবে। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও করা হবে।’’

এই পুরসভার ১৬টি ওয়ার্ডে জনসংখ্যা ৪৫ হাজারের বেশি। স্টেশন বাজার ছাড়াও আরও কয়েকটি ছোট বাজার রয়েছে শহরে। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত প্রায় ১১টা পর্যন্ত সেগুলি খোলা থাকে। বেশ কয়েক মাস আগেও প্লাস্টিক ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে পুরসভা ও প্রশাসন থেকে বাজারে বাজারে প্রচার চালানোর সঙ্গে দোকানদারদের উপরে নজরদারি চালানো হত। কেউ ব্যবহার করলে জরিমানাও করা হয়েছে।

ইদানীং বিভিন্ন বাজারে দোকানদার ও ক্রেতাদের একাংশকে ফের প্লাস্টিক ব্যাগ ব্যবহার করতে দেখা যাচ্ছে বলে অভিযোগ। দিনে দিনে তা বেড়ে যাওয়ায় নিকাশি নালা ভরে যাচ্ছে প্লাস্টিকের স্তূপে। ফলে, অল্প বৃষ্টিতেই পুরসভার নিচু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ছে।

প্লাস্টিক দূষণের কবলে পড়ছে নদীও। এতে জলদূষণ তো ঘটছেই, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মাছ চাষও। পরিবেশবিদরা জানাচ্ছেন, মাটির উপরে প্লাস্টিক পড়ে থাকলে মাটির নীচে জল ঢুকতে পারে না। ফলে, মাটির উর্বরতা নষ্ট হয়, ভূগর্ভস্থ জলস্তরও বাড়ে না।

প্লাস্টিক ব্যবহার নিয়ে দোকানদারেরা অভিযোগ তুলছেন ক্রেতাদের দিকেই। তাঁদের দাবি, বেশ কিছু ক্রেতা ব্যাগ ছাড়াই বাজার করতে আসেন। ফলে, তাঁদের জোরাজুরিতে প্লাস্টিক ব্যাগ দিতে হয়। অনেকে বলছেন, ওই ব্যাগের দাম কম হওয়ায় তা ব্যবহার করেন ব্যবসায়ীরা। ডায়মন্ড হারবার স্টেশন বাজারের ব্যবসায়ী শ্যামল জানার কথায়, ‘‘আমরা তো চাই ক্রেতারা ব্যাগ নিয়ে বাজার করতে আসুন। কিন্ত কিছু ক্রেতা খালি হাতেই বাজারে আসেন।’’ এক ব্যবসায়ীর দাবি, প্রশাসন শুধু ব্যবসায়ীদের নয়, ক্রেতাদেরও সচেতন করুক। জরিমানা হোক তাঁদেরও।

আরও পড়ুন
Advertisement