Water Crisis

জল-যন্ত্রণায় জেরবার দেগঙ্গা, প্রকল্পের কাজে দেরি

দেগঙ্গা আর্সেনিকপ্রবণ ব্লক। গত ৩০ বছরে আর্সেনিকমুক্ত জল সরবরাহের জন্য কখনও কেন্দ্র, কখনও রাজ্য সরকারের উদ্যোগে নানা প্রকল্প হয়েছে এলাকায়।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
দেগঙ্গা শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২৩ ০৬:২২
An image of Water Crisis

—প্রতীকী চিত্র।

ভূগর্ভস্থ জলস্তর কমে যাওয়ায় বহু টিউবওয়েলেই জল মেলে না। ফলে পানের জন্য অধিকাংশ মানুষের ভরসা কেনা জল। রান্না-সহ নিত্য ব্যবহারের জল পেতে নাকাল হতে হয় বাসিন্দাদের। এমনই পরিস্থিতি দেগঙ্গা ব্লকের বহু এলাকায়। বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছে দেওয়ার প্রকল্প শুরু হয়েছিল কয়েক বছর আগে। অভিযোগ, সেই কাজ চলছে ধীর গতিতে। বহু বাড়িতে এখনও জলের সংযোগ মেলেনি। কয়েকটি এলাকায় সংযোগ হলেও নিয়মিত জল মিলছে না বলে অভিযোগ।

Advertisement

দেগঙ্গা আর্সেনিকপ্রবণ ব্লক। গত ৩০ বছরে আর্সেনিকমুক্ত জল সরবরাহের জন্য কখনও কেন্দ্র, কখনও রাজ্য সরকারের উদ্যোগে নানা প্রকল্প হয়েছে এলাকায়। বাসিন্দাদের দাবি, সে সব প্রকল্পের কোনওটাতেই জল সমস্যার স্থায়ী সমাধান হয়নি। কেন্দ্রের ‘জল জীবন’ ও রাজ্যের ‘জল স্বপ্ন’ প্রকল্পের আওতায় বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছনোর কাজ শুরু হয় কয়েক বছর আগে। পাইপ বসানোর কাজ শুরুর কাজে বছর তিনেক পেরিয়েও এখনও মিটল না দুর্ভোগ।

প্রশাসনের দাবি, ৪০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। যদিও তা মানতে চাইছেন না এলাকাবাসীরা। অভিযোগ, পাইপলাইন বসানোর কাজ চলছে ধীর গতিতে। স্থানীয় সূত্রের খবর, দরপত্রের জটিলতার কারণেই প্রকল্পের কাজ শেষ করতে দেরি হচ্ছে। অভিযোগ, শাসকদল ঘনিষ্ঠ ঠিকাদারদের মধ্যে বরাত নিয়ে ঠান্ডা লড়াই চলছে। এক পক্ষ বরাত পেলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে অন্য পক্ষ। কিছু এলাকায় পাইপলাইন বসিয়ে জল সংযোগ দেওয়া হলেও কয়েক দিনের মধ্যেই আর জল মিলছে না বলেও অভিযোগ। তড়িঘড়ি জল সংযোগ দিতে গিয়েই বিপত্তি— এ কথা মানছে ব্লক প্রশাসনের একটি সূত্রও।

জলের দাবিতে বিভিন্ন সময়ে পথে নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন এলাকার মানুষ। নুরনগর পঞ্চায়েতের বিশ্বনাথপুর সর্দারপাড়ায় দিনকয়েক আগেই বিক্ষোভ হয়। স্থানীয় বাসিন্দা মায়া বিবি বলেন, “বাধ্য হয়ে পুকুরের জল দিয়ে রান্না করি। খাওয়ার জল বাজার থেকে কিনি। এ ভাবে কত দিন চালাব!” সোহাই শ্বেতপুর পঞ্চায়েতের বেশ কিছু বাড়িতে জলের সংযোগ এসেছিল। কিন্তু কিছু দিনের মধ্যেই জল সরবরাহ বন্ধ হয়। স্থানীয় বাসিন্দা নিতাই কাহার বলেন, “তৃণমূল বলছে, টাকা দিচ্ছে না। বিজেপি বলছে, টাকা পেয়েও জলের কাজ করছে না!”

সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আহমেদ আলি খান বলেন, “তৃণমূল কাজ করবে কখন? ওরা তো দুর্নীতি করতেই ব্যস্ত।” বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি তুহিন মণ্ডল বলেন, “কেন্দ্রীয় জল প্রকল্পের টাকায় মানুষ জল পেলে তৃণমূল কৃতিত্ব নিতে পারবে না বলেই কাজ করছে না। তৃণমূল একশো দিনের টাকা দুর্নীতি করেছে, সেটা মানুষ বুঝেছে। কেন্দ্র ওই টাকা বন্ধ করে দেওয়ায় মানুষকে ভুল বোঝাতে জলের কাজ দ্রুত গতিতে করছে না।”

আবার বারাসতের সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদারের দাবি, “সিপিএম উন্নয়ন করেনি। জল, রাস্তা যা হয়েছে আমাদের সময়েই হয়েছে। কাজ চলছে। যথাসময়ে শেষ হবে। বিরোধীরা নেতিবাচক রাজনীতি করে।”

আরও পড়ুন
Advertisement