Flood Situation in West Bengal

সামনে ডিএম, নদী-খাল সংস্কারের দাবি দুর্গতদের

এলাকার প্রবীণেরা জানান, অতীতে বৃষ্টির জমা জল খাল হয়ে বেরিয়ে যেত। খালে স্রোত ছিল। নৌকা চলত। মৎস্যজীবীরা মাছ ধরতেন। আশপাশের বেশ কিছু বিলের জলও খালে এসে পড়ত।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
গাইঘাটা শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৪ ০৭:৪৮
বৃহস্পতিবার দুপুরে গাইঘাটা ব্লক পরিদর্শণে জেলাশাসক।

বৃহস্পতিবার দুপুরে গাইঘাটা ব্লক পরিদর্শণে জেলাশাসক। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

কয়েক দিনের ব্যবধানে দু’দফায় নিম্নচাপের বৃষ্টিতে গাইঘাটার বিস্তীর্ণ এলাকা, বাড়িঘর, খেতখামার জলমগ্ন হয়েছে। বিপাকে বহু মানুষ। অনেককে ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিতে হয়েছে। জল নামছে খুবই ধীরে। কবে তাঁরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন বুঝতে উঠতে পারছেন না জলবন্দি মানুষেরা। অনেকেই কাজকর্ম হারিয়ে দু'বেলা খাওয়ার জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার উত্তর ২৪ পরগনার জেলার জেলাশাসক শরদকুমার দ্বিবেদীকে সামনে পেয়ে যমুনা নদী এবং বলদেঘাটা খাল সংস্কারের দাবি তুললেন দুর্গতেরা।

Advertisement

এ দিন জেলাশাসক ছাড়াও অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) আকাঙ্ক্ষা ভাস্কর, বনগাঁর পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার-সহ জেলা প্রশাসনের কর্তারা গাইঘাটার জলমগ্ন এলাকা পরিদর্শনে আসেন। জেলাশাসক গাইঘাটা ব্লক অফিসে জলমগ্নতার কারণ এবং তার স্থায়ী সমাধানে বৈঠক করেন। সেখানে জেলা স্তরের সেচ, মৎস্য, কৃষি-সহ প্রায় সব দফতরের আধিকারিকেরা এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে জেলাশাসক ফের সুটিয়ায় গিয়ে জলবন্দি মানুষদের সঙ্গে কথা বলেন। পুলিশের উদ্যোগে চলা কমিউনিটি কিচেন ঘুরে দেখেন। দুর্গতেরা জেলাশাসকের কাছে ইছামতী ‌ও যমুনা নদী এবং বলদেঘাটা খাল সংস্কারের দাবি তোলেন। পানীয় জলের সমস্যার কথাও তোলেন।

অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) বলেন, ‘‘ইছামতী, বলদেঘাটা খাল সংস্কার-সহ যাবতীয় দাবি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। সেচ দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার ছিলেন। সেচ দফতরের পক্ষ থেকে নদী-খালের পরিস্থিতি সমীক্ষা করা হবে। তাদের রিপোর্ট পাওয়ার পর পদক্ষেপ করা হবে। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরকে বলা হয়েছে জলের পাউচ সরবরাহ করতে। শুক্রবার থেকে এখানে স্বাস্থ্য শিবির খুলে মানুষকে পরিষেবা দেওয়া হবে।’’ পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, আজ, শুক্রবার থেকে আরও একটি কমিউনিটি কিচেন চালু করা হচ্ছে। দুপুর ও রাতে রান্না করা খাবার দেওয়া হবে।

শুধু সুটিয়া নয়, জলমগ্ন রামনগর, শিমুলপুর, ডুমা-সহ আরও কয়েকটি পঞ্চায়েত এলাকা। সুটিয়ার বাসিন্দাদের জল-যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলদেঘাটা খাল। সংস্কারের অভাবে পলি জমে খালটি কার্যত মৃতপ্রায়। অভিযোগ, খালে অবৈধ ভাবে ভেড়ি করা হয়েছে। তাতে খালটির গতিপথ রুদ্ধ হয়েছে। খালের জমি বেদখল হতে শুরু করেছে। ফলে, খালের জল ধারণের ক্ষমতা নেই।

এলাকার প্রবীণেরা জানান, অতীতে বৃষ্টির জমা জল খাল হয়ে বেরিয়ে যেত। খালে স্রোত ছিল। নৌকা চলত। মৎস্যজীবীরা মাছ ধরতেন। আশপাশের বেশ কিছু বিলের জলও খালে এসে পড়ত। সে সব বহুদিন হল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এখন প্রতি বর্ষায় ভারী বৃষ্টি হলেই খালের জল লোকালয়ে ঢুকছে।

গ্রামবাসীরা জানান, বলদেঘাটা খাল চারঘাট এলাকায় যমুনার সঙ্গে মিশেছে। সেখান থেকে যমুনা টিপি এলাকায় ইছামতী নদীতে মিশেছে। সে কারণে অনেকেই মনে করেন, ইছামতীর সংস্কার ছাড়া সমস্যা পুরোপুরি মিটবে না।

আরও পড়ুন
Advertisement