সন্ধ্যার পরে অন্ধকারে ডুবে যায় মাতলা সেতু। — নিজস্ব চিত্র।
প্রায় তিন মাস ধরে অন্ধকারে ডুবে রয়েছে মাতলা সেতু। মাঝে কিছু দিন আলো জ্বললেও ফের প্রায় পনেরো দিন টানা আলো জ্বলছে না ক্যানিং ও বাসন্তীর সংযোগকারী মাতলা সেতুতে। স্থানীয়দের ক্ষোভ, এই অন্ধকারের সুযোগ নিয়েই গত কয়েক দিনে দুষ্কৃতী কার্যকলাপও বেড়েছে এলাকায়।
ক্যানিং থানার পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ক’দিন আগেই এই সেতু সংলগ্ন রাস্তায় তল্লাশি চালিয়ে প্রচুর পরিমাণে গাঁজা উদ্ধার হয়েছিল। বেআইনি ভাবে আসা বাংলাদেশি ইলিশের ট্রাকও এই সেতু ব্যবহার করে কলকাতা যাওয়ার পথে ক্যানিং থানার পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দা দেবব্রত মণ্ডল, দেবাশিস দত্তেরা বলেন, “এই সেতু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতি দিন হাজার হাজার মানুষ এই সেতু ব্যবহার করেন। কিন্তু সন্ধ্যা নামলেই এখন এই সেতু সম্পূর্ণ অন্ধকারে ডুবে থাকে। আর সেই সুযোগে দুষ্কৃতীরা এই এলাকায় সক্রিয় হয়ে ওঠে। দ্রুত সেতুতে আলোর ব্যবস্থা করা হোক।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১১ সালের জানুয়ারি মাসে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এই সেতুটি উদ্বোধন করেন। ক্যানিং ও বাসন্তী— দুই ব্লককে সংযুক্ত করেছে এই সেতু। মাতলা নদীর উপরে এই সেতু ব্যবহার করে এক দিকে যেমন ক্যানিংয়ের সঙ্গে বাসন্তী, গোসাবা, ক্যানিং ২ ব্লকের মানুষ শহর কলকাতার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেন, তেমনই উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সন্দেশখালি, হিঙ্গলগঞ্জ সহ আশপাশের বহু মানুষও এই সেতু দিয়ে প্রতি দিন যাতায়াত করেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, এমন গুরুত্বপূর্ণ সেতুই প্রায় মাস তিনেক ধরে সন্ধ্যার পরে অন্ধকারে ডুবে থাকছে। এলাকার লোকজনের দাবি, ক্যানিং ও বাসন্তী থানা এলাকার সংযোগস্থলে থাকায় এই সেতুতে দুষ্কর্ম ঘটিয়ে সহজেই গা ঢাকা দিতে পারছে দুষ্কৃতীরা।
সেতুর আলো কেন বন্ধ তা নিয়ে সদুত্তর মেলেনি বিদ্যুৎ দফতরের কাছে। ক্যানিং মহকুমা বিদ্যুৎ দফতরের ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার সুজিত গোলদার বলেন, “ঠিক কী কারণে মাতলা সেতুতে আলো বন্ধ বলতে পারব না।’’ তাঁর দাবি, ‘‘বিদ্যুৎ দফতরে টাকা বকেয়া সত্ত্বেও জনগনের অসুবিধের কথা ভেবে আমরা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করিনি।” এই সেতুর আলোর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা পিডব্লুউডির বিদ্যুৎ বিভাগের জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার দীপক মণ্ডল বলেন, “বিদ্যুতের তার খারাপ হওয়ার কারণে সমস্যা দেখা দিয়েছে। আগেও এক বার সারানো হয়েছিল, কিন্তু ফের খারাপ হয়েছে। তবে দ্রুত মেরামতির কাজ শুরু হবে।”