সপরিবার হাসপাতাল চত্বরে রাত্রিবাস। —নিজস্ব চিত্র।
প্রতিবন্ধী শাংসাপত্রের জন্য ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে শারীরিক পরীক্ষা করাতে এসে নাজেহাল হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ অনেকের। অভিযোগ, সকালে পরীক্ষার জন্য আগের দিন রাত থেকে লাইন দিতে হচ্ছে। দূরদূরান্ত থেকে এসে ফিরেও যেতে হচ্ছে অনেককে।
প্রতিবন্ধী শংসাপত্রের জন্য সরকারি হাসপাতালে শারীরিক পরীক্ষা করাতে হয়। একাধিক পরীক্ষার পরে কে কত শতাংশ প্রতিবন্ধী— সে ব্যাপারে শংসাপত্র দেন চিকিৎসকেরা। সেই শংসাপত্রের ভিত্তিতে নানা ধরনের সরকারি, বেসরকারি সুযোগ-সুবিধা মেলে।
ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে প্রতি মাসের দ্বিতীয় ও চতুর্থ মঙ্গলবার এই কাজ হয়। মহকুমার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহু মানুষ আসেন। একেক দিনে ডাক্তার দেখানোর সুযোগ পান ৫০ জন করে। অভিযোগ, সকালে এলে ৫০ জনের তালিকা পূর্ণ হয়ে যাওয়ায় অনেককে ফিরে যেতে হয়। ফলে আগের রাত থেকে লাইন দেন অনেকে।
সোমবার সন্ধ্যায় হাসপাতাল চত্বরে গিয়ে দেখা গেল, শীতের রাতেও প্রতিবন্ধী সন্তান বা পরিবারের সদস্যকে নিয়ে হাসপাতালের বাইরে লাইন দিয়ে রাত জাগছেন বহু মানুষ। ইট-পাথর দিয়ে লাইন রেখে আশপাশে বসে আছেন কেউ কেউ। কেউ আবার প্রতিবন্ধী সন্তানকে নিয়ে খোলা আকাশের নীচে মশারির মধ্যে শুয়ে রয়েছেন। তাঁরা জানালেন, আগে একাধিক বার চিকিৎসক দেখানোর দিন সকালে এসেও সুযোগ মেলেনি। দূর থেকে এসে ফিরে যেতে হয়েছে। তাই শীত উপেক্ষা করেও শংসাপত্রের জন্য রাত জেগে লাইন দিচ্ছেন।
সন্তানকে নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন গোসাবার সোনাগাঁয়ের বাসিন্দা রবিন পাত্র। বললেন, “গত এক মাসে দু’বার পর পর এসেও সুযোগ পাইনি। নদী পার হয়ে আসতে কিছুটা দেরি হয়ে গিয়েছিল। তাই এ বার আগের রাত থেকে লাইনে দাঁড়িয়েছি।” একই দাবি বাসন্তীর বাসিন্দা নীলিমা ধর, জীবনতলার বাসিন্দা নুরউদ্দিন খানের।
সমস্যা মেটাতে ইতিমধ্যেই চিন্তা-ভাবনা শুরু করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সুপার পার্থসারথি কয়াল বলেন, “বেশ কয়েক মাস পোর্টাল বন্ধ ছিল। কিছু দিন হল তা খুলেছে। তাই বহু মানুষ আসছেন। আশা করি, কিছু দিনের মধ্যে এই চাপ অনেকটা কমে যাবে। জানুয়ারি মাস থেকে মঙ্গলবারের পরিবর্তে বৃহস্পতিবার করে এই শিবির করা হবে।”