Drinking Water Crisis

‘ভাগ্যবান’ হাসনাবাদের কিছু পরিবার, বাকিদের হাহাকার জলের

জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক কল্লোল বিশ্বাস জানান, ব্লক জুড়ে বেশ কিছু প্রকল্পের কাজ চলছে বাড়ি বাড়ি পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার জন্য।

Advertisement
নবেন্দু ঘোষ 
হাসনাবাদ শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০২৩ ০৭:১৪
Drinking Water van

বাড়ি বাড়ি পানীয় জল পৌঁছে দিচ্ছেন বিক্রেতারা। — ফাইল চিত্র।

হাসনাবাদ ব্লকে ৯টি পঞ্চায়েতে বহু বছর ধরেই পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে। এখনও কোনও পঞ্চায়েতের সব বাড়িতে নলবাহিত পানীয় জল পৌঁছয়নি। ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, হাসনাবাদ ব্লকে পরিবারের সংখ্যা ২,০৩,০৩১। বাড়ি বাড়ি জল গিয়েছে এখনও মাত্র ৬৫০০ পরিবারে!

Advertisement

জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক কল্লোল বিশ্বাস জানান, ব্লক জুড়ে বেশ কিছু প্রকল্পের কাজ চলছে বাড়ি বাড়ি পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার জন্য। কয়েকটি প্রকল্পের কাজ থমকে আছে। সেগুলি অগস্ট মাসের মধ্যেই কাজ শুরু হয়ে যাবে। গোটা ব্লক জুড়ে সব বাড়িতে পানীয় জল আগামী বছরের মার্চ মাসের মধ্যে পৌঁছে যাবে। হাসনাবাদ পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী সভাপতি লক্ষ্মী দলুই জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের কাজের গতি নিয়ে ক্ষোভ জানান। ভবানীপুর ১, ভবানীপুর ২ পঞ্চায়েত এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে বলে জানান তিনি। কিছু রাস্তায় পাইপ বসানো হলেও বাড়িতে জল পৌঁছে দেওয়ার কাজ কিছুই হয়নি এখনও পর্যন্ত, অভিযোগ লক্ষ্মীর।

ভবানীপুর ১ পঞ্চায়েতের হাউলিপাড়া, শুলকুনি, ভুরকুন্ডা, ভবানীপুর ২ পঞ্চায়েতের পারঘাটা, মুক্তারচক, ঘেরিপাড়া এলাকায় পানীয় জলের সরকারি ভাবে তেমন কোনও ব্যবস্থা নেই। অনেক দূর থেকে জল আনতে হয় মানুষকে। অনেকে জল কিনে খান। বাড়ির টিউবওয়েল থেকে নোনা জল ওঠে। লক্ষ্মী বলেন, “বার বার জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরকে বলছি দ্রুত কাজ শেষ করুন। বাড়িগুলিতে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া খুব দরকার। কিন্তু ওঁরা শুধু বলছেন, ২০২৪ সালের আগে হয়ে যাবে। কোথাও তো কাজ এখনও সম্পূর্ণ করল না। কাজ থেমে আছে বহু জায়গায়।”

হাসনাবাদ পঞ্চায়েত এলাকার বাড়িগুলিতে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরুই হয়নি বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। রামেশ্বরপুর বরুণহাট পঞ্চায়েতের প্রধান ছবি মণ্ডল জানান, এখনও কোনও বাড়িতে নলবাহিত পানীয় জল পৌঁছয়নি। এই পঞ্চায়েতের ৫টি মৌজার মধ্যে একটিতে পাইপ লাইন বসানোর কাজ করছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর।

এই পঞ্চায়েতের বাসিন্দা সঙ্গীতা অধিকারী বলেন, “প্রতি সপ্তাহে বাড়ির ৫ জন সদস্যের জন্য জলের ব্যারেল কিনতে ৭০ টাকা খরচ হয়। অনেকে যাঁরা জল কিনে খেতে পারেন না, তাঁরা কয়েক কিলোমিটার পথ পেরিয়ে পাশের হিঙ্গলগঞ্জ পঞ্চায়েত থেকে জল বয়ে আনেন।’’

পাটলি খানপুর পঞ্চায়েত সূত্রের খবর, এই এলাকায় পানীয় জলের ব্যবস্থা না থাকায় ৫-৬ কিলোমিটার দূরে বিশপুর পঞ্চায়েত এলাকা থেকে পানীয় জল আনতে হয় মানুষকে। না হলে কেনা জলই ভরসা। শুধুমাত্র চকপাটলি, পূর্ব পাটলি ও গোয়ালআঁটি— এই তিনটি গ্রামে পাইপ লাইন তৈরির কাজ চলছে। এলাকার বাসিন্দা মামুদ গাজি বলেন , “২০২৪ সালের মধ্যে বাড়িতে জল পাব বলে তো মনে হচ্ছে না। কাজের যা গতি!”

আমলানি পঞ্চায়েতের প্রধান রোকেয়া মণ্ডল জানান, এই পঞ্চায়েতের ১৭টি সংসদের মধ্যে একটি সংসদে প্রায় ৩০০ বাড়িতে নলবাহিত পানীয় জল পৌঁছেছে। পঞ্চায়েতের বাকি অংশে কোনও বাড়িতে জল যায়নি। ৩টি সংসদেকিছু দিন ধরে কাজ চলছে। তবে বাকি ১৩টি সংসদে এখনও কাজ শুরুই হয়নি।

আরও পড়ুন
Advertisement