উত্তর ২৪ পরগনার দু’তল্লাটে দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য, ছড়াল আতঙ্ক
Firing at Businessman Home

জমি ব্যবসায়ীর বাড়িতে ঢুকে গুলি আমডাঙায়

রাজনীতিতে নেই। ব্যবসাই করি। এখন কোনও শত্রু নেই। হতে পারে পুরনো কোনও শত্রুতার জেরে আমাকে হুমকি দিয়ে গেল দুষ্কৃতীরা।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
আমডাঙা শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৮:৩০
আমডাঙার জমি ব্যবসায়ী শেখ ফরিদ হাসানের গাড়িতে গুলির চিহ্ন।

আমডাঙার জমি ব্যবসায়ী শেখ ফরিদ হাসানের গাড়িতে গুলির চিহ্ন। ছবি: সুদীপ ঘোষ।

এক মাসও হয়নি, বোমা হামলায় খুন হন আমডাঙা পঞ্চায়েতের প্রধান, তৃণমূলের রূপচাঁদ মণ্ডল। এ বার এখানকার এক জমি ব্যবসায়ীর বাড়িতে ঢুকে গুলি চালাল দুষ্কৃতীরা। রবিবার গভীর রাতে সিকিরা গ্রামে ওই ঘটনায় গুলি লেগে ক্ষতিগ্রস্ত হয় শেখ ফরিদ হাসান নামে ওই ব্যবসায়ীর গাড়ির পিছনের অংশ। তিনি সে সময় বাড়িতে ছিলেন। এক মাসের মধ্যে দু’টি ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়।

Advertisement

ফরিদ প্রাক্তন তৃণমূল কর্মী। জমি কেনাবেচা এবং প্রোমোটিং ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। নিহত প্রধান রূপচাঁদও জমির কারবার করতেন। দু’জনের মধ্যে পরিচয়ও ছিল। ফলে, আগের ঘটনার সঙ্গে এর কোনও যোগ রয়েছে কি না, তা নিয়ে যেমন চর্চা চলছে, তেমনই বেছে বেছে এ তল্লাটের জমি কারবারিদের দুষ্কৃতীরা নিশানা করছে কি না, এ প্রশ্নও উঠছে। চিন্তায় তৃণমূল নেতাদের একাংশও। দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে এ সব হচ্ছে কি না, সে জল্পনাও শোনা যাচ্ছে।

পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ওই ব্যবসায়ীর গাড়ির পাশ থেকে গুলির খোল উদ্ধার করা হয়েছে। আগেও তাঁর উপরে হামলার চেষ্টা হয়েছিল। তবে, সোমবার রাত পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, রবিবার রাত বারোটা নাগাদ বাড়ির সামনে আচমকা গুলির শব্দ শুনতে পান ফরিদ। ভয়ে তিনি বের হননি। সকালে উঠে দেখেন, বাড়ির চৌহদ্দিতে থাকা তাঁর দামি গাড়ির পিছনের অংশে গুলি লেগে ফুটো হয়ে গিয়েছে। পাশেই পড়ে আছে গুলির খোল। তিনি আমডাঙা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।

কারা হামলা চালাল, তা নিয়ে ফরিদ অন্ধকারে। তিনি বলেন, ‘‘কয়েক মাস আগে তৃণমূল ছাড়ি। এখন রাজনীতিতে নেই। ব্যবসাই করি। এখন কোনও শত্রু নেই। হতে পারে পুরনো কোনও শত্রুতার জেরে আমাকে হুমকি দিয়ে গেল দুষ্কৃতীরা। বছরখানেক আগেও আমাকে গুলি করে খুনের চেষ্টা করেছিল দুষ্কৃতীরা। গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েছিল। পুলিশ তদন্ত করে বের করুক।’’

তৃণমূলের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে বিরক্ত হয়েই ফরিদ সরে যান। অল্প দিনের ব্যবধানে দু’টি ঘটনায় এলাকায় দুষ্কৃতী-দৌরাত্ম্য যে বেড়েছে, তা মানছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতারা। প্রধান খুনের কারণ এখনও জানা যায়নি বলে তাঁদের দাবি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তৃণমূল নেতা বলেন, ‘‘সাংসদ অর্জুন সিংহের (আমডাঙা এলাকাটি ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রে পড়ে) সঙ্গে এখানকার বিধায়ক রফিকার রহমানের মতানৈক্য বারবার সামনে এসেছে। লোকসভা ভোট আসছে। হতে পারে, এ সব ঘটনা সেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জের।’’

গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা মানেননি ব্লক তৃণমূল সভাপতি জ্যোতির্ময় দত্ত। তিনি বলেন, ‘‘গুলির ঘটনা আমি জানি না।’’ আমডাঙার বিধায়ক রফিকার বলেন, ‘‘কে কাকে গুলি করেছে জানি না। কেউ আমাকে কিছু জানায়নি। নানা গুজব কেউ রটাতে পারে। গুজবে কান দেবেন না।’’ সাংসদের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।

আরও পড়ুন
Advertisement