এই ধরনের খবরের ক্ষেত্রে আসল ছবি প্রকাশে আইনি নিষেধাজ্ঞা থাকে। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
মাস দুয়েক আগে দক্ষিণ ২৪ পরগনার গ্রামীণ এলাকায় বছর নয়েকের এক বালিকাকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছিল। সেই ঘটনায় ধৃত মোস্তাকিন সর্দারকে বৃহস্পতিবার দোষী সাব্যস্ত করলেন বারুইপুরের ফাস্ট অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট জাজেস কোর্টের বিচারক সুব্রত চট্টোপাধ্যায়। আজ, শুক্রবার এই মামলার সাজা ঘোষণা হবে। মাত্র দু’মাসের মধ্যেই বিচার প্রক্রিয়া শেষ করা কার্যত নজিরবিহীন বলেই মনে করছেন আইনজীবীদের অনেকেই।
গত ৪ অক্টোবর সন্ধ্যায় গৃহশিক্ষকের কাছে পড়ে বাড়ি ফিরছিল ওই বালিকা। সেই সময়েই মোস্তাকিন তাকে সাইকেলে তুলে নির্জন এলাকায় নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। পরে শ্বাসরোধ করে খুনও করে সে। মেয়ে দীর্ঘ ক্ষণ না ফেরায় খোঁজাখুঁজি শুরু করেন বাড়ির লোকজন। স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িতে যাওয়া হয়। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ ওঠে। গভীর রাতে বাড়ির কাছের জলা জমিতে মেলে মেয়েটির দেহ। ওই রাতেই গ্রেফতার হয় মোস্তাকিন। পরের দিন সকালে পুলিশ, স্থানীয় নেতারা এলাকায় গেলে, তাঁদের উপর হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে। হামলা চলে স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িতেও। বালিকার জন্য বিচারের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। অভিযুক্ত এ দিন দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন আন্দোলনকারীরা। মোস্তাকিনের ফাঁসির দাবিও জানিয়েছেন তাঁরা। বালিকার বাবাও এ দিন বলেন, “কাল বিচারক ওর ফাঁসি দিন। তা হলে মেয়েটা শান্তি পাবে।”
ঘটনার পরে প্রাথমিক ভাবে খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছিল পুলিশ। পরে আদালতের নির্দেশে পকসো ধারা যুক্ত করা হয়। বালিকার দেহের ময়না তদন্তেও ধর্ষণের প্রমাণ মেলে। আর জি কর-কাণ্ডের বিচারের দাবিতে সেই সময় উত্তাল রাজ্য। দক্ষিণ ২৪ পরগনার এই ঘটনার দ্রুত তদন্ত করে শাস্তির আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনার তদন্তে ‘সিট’ গঠন করে প্রশাসন। ঘটনার মাস খানেকের মধ্যে চার্জশিট পেশ করে তদন্তকারী দল।
তদন্তকারী দল সূত্রের খবর, মোস্তাকিনের বিরুদ্ধে খুন, ধর্ষণের একাধিক অকাট্য প্রমাণ মিলেছে। যৌন আকাঙ্ক্ষা থেকেই বালিকাকে ধর্ষণ করা হয়। তার পরে মুখ বন্ধ করতেই খুন করা হয়েছিল। এর বাইরে খুনের কার্যত স্পষ্ট কারণ ছিল না। সে দিক থেকেও এই ঘটনা বিরল বলেই দাবি তদন্তকারীদের।
বালিকার পরিবারের আইনজীবী সুব্রত সর্দার বলেন, “৩০ অক্টোবর চার্জশিট পেশ করা হয়। ৫ নভেম্বর থেকে শুরু হয় সাক্ষ্যগ্রহণ। মোট ৩৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ হয়েছে। সাক্ষ্য বিচার ও অন্যান্য প্রমাণ খতিয়ে দেখে মহামান্য আদালত অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেছে।”