Sale of deepak

প্রদীপের সুদিন ফিরবে, আশায় শিল্পী

কারিগর রুমা পাল বলেন, "মানুষের ব্যস্ততা বেড়েছে। সময় বাঁচাতে কালীপুজোর সময়ে ঘরে ঘরে রকমারি চিনা আলো দিয়ে সাজিয়ে তুলতে পছন্দ করেন মানুষ।

Advertisement
ঋষি চক্রবর্তী
দত্তপুকুর শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৩ ০৯:২২
মাটির প্রদীপ রোদে শুকোতে দিচ্ছেন শিল্পী।

মাটির প্রদীপ রোদে শুকোতে দিচ্ছেন শিল্পী। —নিজস্ব চিত্র।

রাস্তার দু’পাশে বহু ছোট বড় দোকান ও কারখানা। সামনে সারি দিয়ে সাজানো মাটির প্রদীপ। সাবেক মাটির প্রদীপের গায়ে নানা ধরণের নকশা আঁকায় লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া। যাতে শুধুই প্রদীপ না হয়ে ঘর সাজানোর সামগ্রীও হয়ে ওঠে, সে দিকে নজর দিচ্ছেন শিল্পীরা। কালীপুজোর আগে দত্তপুকুর পালপাড়াকে মনে হবে ‘প্রদীপ গ্রাম।’

Advertisement

ছোটবড় শতাধিক কারখানায় প্রদীপ তৈরির ব্যস্ততা এখন তুঙ্গে। শিল্পীরা জানাচ্ছেন, চিনা আলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়েছে মাটির প্রদীপ। ফি বছর কমছে বিক্রিও। তবে থেমে নেই মাটির প্রদীপ তৈরির কাজ। ক্রেতাদের নজর কাড়তে প্রদীপের বাহার বাড়ানো হয়েছে। মাটির প্রদীপে টুনি লাইট সংযোগ দেওয়া হয়েছে। চলতি বছরের বিক্রির দেখে প্রদীপের নকশা বদলানোর চিন্তা-ভাবনা আছে শিল্পীদের ।

সামনেই কালীপুজো। দীপাবলির আলো জ্বলে উঠবে গ্রাম-শহরে। দত্তপুকুরের পালপাড়ার কারিগরেরা তাই এখন ব্যস্ত। যশোর রোডের দত্তপুকুর এলে দেখা যাবে, রাস্তার দুপাশে সার সার কারখানা। বাইরে শুকোচ্ছে মাটির প্রদীপ। ভিতরে চলছে রং দিয়ে কারুকাজ। কারিগরদের আক্ষেপ, বৈদ্যুতিক লাইটের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ার কারণে ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে বসেছে প্রদীপ জ্বালানোর রীতি। ব্যবসায়ীদের দাবি, কয়েক বছর আগে এক একটি কারখানা থেকে লক্ষাধিক মাটির প্রদীপ বিক্রি হত স্থানীয় বাজারে। গত বছর তা কমে ৬০-৭০ হাজারে ঠেকেছে।

কারিগর রুমা পাল বলেন, "মানুষের ব্যস্ততা বেড়েছে। সময় বাঁচাতে কালীপুজোর সময়ে ঘরে ঘরে রকমারি চিনা আলো দিয়ে সাজিয়ে তুলতে পছন্দ করেন মানুষ। রংবেরংয়ের আলোয় যেন চোখে ধাঁধা লেগে যায়। তবে কয়েক বছর আগেও কালীপুজোয় বাড়ি সেজে উঠত মাটির প্রদীপে। এখন রকমারি চিনা আলো মাটির প্রদীপকে সরিয়ে জায়গা করে নিচ্ছে।" ব্যবসায়ী শঙ্কর পাল বলেন, "শহরের বহুতল থেকে পাকা বাড়ির ছাদ থেকে ঝুলে পড়ে চিনা আলোর চেন। পথও মুড়ে ফেলা হচ্ছে ওই আলো দিয়ে। তবে কেউ কেউ আছেন, যাঁরা মাটির প্রদীপ পছন্দ করেন এখনও। তাই প্রদীপের চেহারায় বদল আনা হয়েছে। আশা করি, ক্রেতারা তা কিনবেন।"

দত্তপুকুরের বাহারি প্রদীপ স্থানীয় বাজারের তুলনায় ভিন্‌ রাজ্যে বেশি যাচ্ছে। আগের তুলনায় সেই চাহিদা বেড়েছে বলে জানালেন শিল্পীরা। চিনা আলোর আদলে মাটির প্রদীপের চেন তৈরি করছেন তাঁরা। মৃৎশিল্পীদের আশা, আবারও জায়গা করে নেবে মাটির প্রদীপ। ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করানোর জন্য তিনমুখী, পাঁচমুখী প্রদীপ তৈরি হচ্ছে। সেগুলির গায়েও রকমারি নকশা করা হয়েছে। কারিগর রবিন পাল বলেন, "বাজেটে আঁটানোর জন্য প্রদীপের দাম ১০ টাকা থেকে শুরু হয়ে ৫০ টাকা পর্যন্ত রয়েছে।" আকাশ পালের দাবি, যতই চিনা আলো আসুক, যাঁরা মাটির জিনিস ব্যবহার করেন, তাঁরা প্রদীপ অবশ্যই কিনবেন।

আরও পড়ুন
Advertisement