—প্রতীকী চিত্র।
বাঁ হাতের আঙুলে ছোবল মেরেছিল চন্দ্রবোড়া সাপ। যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকেন শঙ্কর দে নামে বছর বাহান্নর এক দিনমজুর। সুভাষগ্রাম পেটুয়া এলাকার ঘটনা। সাপটিকে ধরে আছাড়ে মেরে ফেলেন। সাপের বিষ যাতে শরীরে মিশে না যায়, সে জন্য ছুরি দিয়ে হাতের শিরা কেটে ফেলেন। শুরু হয় রক্তক্ষরণ। আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন শঙ্কর।
বুধবার দুপুরে এই ঘটনায় প্রতিবেশীরা তাঁকে উদ্ধার করে সুভাষগ্রাম ব্লক হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন তিনি। শঙ্কর বলেন, ‘‘চন্দ্রবোড়া সাপের কামড় খেলে কিডনি অকেজো হয়ে যায়। সাপের বিষ যাতে সারা শরীরে মিশে না যায়, সে কারণেই হাতের শিরা কেটে ফেলি।’’ সাপটি যাতে চিকিৎসকেরা চিনতে পারেন, সে জন্য মরা সাপ হাসপাতালে এনেছিলেন শঙ্কর।
শঙ্করের এই কাণ্ডে হতবাক চিকিৎসকেরা। তাঁদের দাবি, সাপে কামড়ালে সাপ ধরে বা মেরে নিয়ে হাসপাতালে আসার দরকার নেই। রোগীর শারীরিক অবস্থা দেখেই চিকিৎসা করা সম্ভব। হাতের শিরা কেটে দিলে বিষ শরীরের বাকি অংশের রক্তে ছড়িয়ে পড়বে না, এই ধারণাও ভুল বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
সাপে কাটা রোগীদের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সমরেন্দ্রনাথ রায় বলেন, ‘‘এ ভাবে হাত কেটে নিয়ে আসার কোনও যৌক্তিকতা নেই। আমাদের শরীরে এত দ্রুত রক্ত সঞ্চালিত হয় যে শিরা কেটে বিষ বের করা সম্ভব নয়। এতে বরং প্রাণহানির আশঙ্কা বাড়ে। পাশাপাশি, চিকিৎসার সুবিধার কথা ভেবে সাপ ধরে বা মেরেও হাসপাতালে আনার দরকার নেই।’’ সাপে কামড়ালে দ্রুত হাসপাতালে আসাই বাঁচার একমাত্র উপায় বলে জানান তিনি।