Crime Against Women

কুকথার প্রতিবাদের ‘শাস্তি’ বৃদ্ধাকে, বাড়ি এসে মার অসুস্থ স্বামীকেও

অভিযোগকারিণী বৃদ্ধার পরিবারের তরফে দাবি করা হয়েছে, আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে গত বুধবার একটি মিছিল ও জমায়েতে তাঁরা ছিলেন।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
ব্যারাকপুর শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:৪৮
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

রাস্তায় দাঁড়িয়ে অশালীন আচরণ ও চিৎকার করে গালিগালাজ করছিল এক ব্যক্তি। তার প্রতিবাদ করেছিলেন প্রাতর্ভ্রমণে বেরোনো এক বৃদ্ধা। অভিযোগ, ‘শাস্তি’ হিসাবে বৃদ্ধার তিন সঙ্গীর সামনেই তাঁকে মারধর করে অভিযুক্ত। এর পরে শাগরেদদের নিয়ে তাঁর বাড়িতে চড়াও হয়ে ক্যানসার আক্রান্ত বৃদ্ধ স্বামীকে পেটায়। এখানেই শেষ নয়। রাতে বাড়িতে ছেলে ঢুকিয়ে শায়েস্তা করার হুমকি দেয় বলেও অভিযোগ।

Advertisement

শুক্রবার সকালে ভয়াবহ এই ঘটনাটি ঘটেছে নৈহাটির অরবিন্দপল্লিতে। অভিযোগকারিণী বৃদ্ধার পরিবারের তরফে দাবি করা হয়েছে, আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে গত বুধবার একটি মিছিল ও জমায়েতে তাঁরা ছিলেন। সেখানে এলাকারই কিছু দুষ্কৃতী হুমকি দিয়েছিল। তখনকার মতো বিষয়টি মিটে গেলেও এ দিন আকস্মিক এমন ঘটনায় স্তম্ভিত ওই বৃদ্ধাই। তদন্তে নেমে পুলিশ শান্তনু সরকার ওরফে পাই নামে মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নৈহাটির অরবিন্দপল্লির দীর্ঘ দিনের বাসিন্দা অর্চনা ও খোকন দাস। প্রাক্তন পুলিশকর্মী খোকন বেশ কিছু দিন ধরে ক্যানসারে আক্রান্ত। চিকিৎসা চলছে তাঁর। এ দিন সকাল পৌনে ছ’টা নাগাদ পাড়ারই তিন মহিলার সঙ্গে বাড়ির কাছে নৈহাটি স্টেডিয়ামে প্রাতর্ভ্রমণে গিয়েছিলেন অর্চনা। ফেরার পথে তিনি রাস্তায় এক ব্যক্তির অশালীন আচরণ দেখে ও কুকথা শুনে প্রতিবাদ করেন। অর্চনার অভিযোগ, এর পরেই ওই দুষ্কৃতী তাঁকে চুলের মুঠি ধরে চড়-থাপ্পড় মারে। বৃদ্ধার সঙ্গী মহিলারা মারধর না করার জন্য হাতজোড় করে অনুনয় করেন ওই দুষ্কৃতীকে। চেনা পথে আচমকা এমন আক্রমণে হকচকিয়ে যান অর্চনা নিজেও।

ওই বৃদ্ধা বলেন, ‘‘কোনও মহিলার উদ্দেশ্যে ওই লোকটি অঙ্গভঙ্গি করে কুৎসিত কথাবার্তা বলছিল। আমি শুধু বলেছিলাম, রাস্তায় তো অনেকে যাচ্ছে। আমরা বয়স্ক, তার উপরে মহিলা। খুব কি অন্যায় করেছি?’’ অর্চনা জানান, এর পরেই সবার সামনে ওই দুষ্কৃতী তাঁকে মারধর করে। বৃদ্ধা বলেন, ‘‘কামারশালের কাছে পরিচিত এক জনকে আমি যখন পুরো ঘটনা জানাচ্ছি, ওই লোকটি তার এক সঙ্গীকে নিয়ে এসে আমাকে আবার মারে। এর পরে বাড়ি পর্যন্ত আসে। আমার অসুস্থ স্বামী সদর দরজার সামনে ছিলেন। ওঁকে সবটা বললাম। স্বামী প্রতিবাদ করলে, ওঁকেও রাস্তায় ফেলে মারল।’’

অর্চনার পুত্রবধূ অমৃতাশঙ্কর চক্রবর্তী সরকারি আধিকারিক। তিনি বলেন, ‘‘আমরা বাড়িতে তিন জন মহিলা থাকি। শ্বশুরমশাই অসুস্থ। শুনলাম, অভিযুক্ত এলাকারই এক প্রভাবশালীর ঘনিষ্ঠ। ভয় হচ্ছে, এমন অসম্মানের বিচার আদৌ পাব কিনা। এক জন বৃদ্ধা কি পাড়ার পথেও নিরাপদ নন?’’

ব্যারাকপুরের সাংসদ পার্থ ভৌমিক বলেন, ‘‘এমন ঘটনা বরদাস্ত করা হবে না।’’ ব্যারাকপুরের নগরপাল অলোক রাজোরিয়া জানান, ঘটনায় আরও কেউ জড়িত থাকলে তাদেরও গ্রেফতার করা হবে।

আরও পড়ুন
Advertisement