—প্রতীকী চিত্র।
টিউশন সেরে বাড়ি ফেরার পথে বেপরোয়া ট্রাকের ধাক্কায় মৃত্যু হল বছর তেরোর এক কিশোরীর। মঙ্গলবার রাতে নরেন্দ্রপুর থানার মডেল টাউন এলাকায় ইএম বাইপাসের উপর ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত কিশোরীর নাম প্রিয়া প্রামাণিক। তার বাড়ি স্থানীয় চড়কতলা এলাকায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, রোজকার মতোই সন্ধ্যাবেলা বাড়ি থেকে সাইকেল নিয়ে টিউশন পড়তে গিয়েছিল ওই কিশোরী। টিউশন শেষে রাত ১০টার পর বাড়ি ফিরছিল সে। সেই সময় সঙ্গে ছিলেন কিশোরীর মা-ও। ওই এলাকায় একটি সিগন্যালে রাস্তা পেরোনোর সময় দুর্ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাইকেলটি হাতে নিয়ে সিগন্যাল দেখেই সঠিক ভাবে রাস্তা পেরোচ্ছিল ওই কিশোরী। রাস্তার অপর প্রান্তে প্রায় পৌঁছেও গিয়েছিল। কিছুটা দূরে ছিলেন কিশোরীর মা। সেই সময়েই বারুইপুরের দিক থেকে কলকাতার দিকে যাচ্ছিল একটি পণ্যবাহী ট্রাক। অভিযোগ, অন্য একটি ট্রাকের সঙ্গে রেষারেষি করে সিগন্যাল ভেঙে ওই মোড় পেরোতে গিয়েই কিশোরীকে ধাক্কা মারে ট্রাকটি। ট্রাকের চাকায় পিষে যায় কিশোরী। স্থানীয় লোকজন কিশোরীকে উদ্ধার করে বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে নিয়ে যান। বুধবার সকালে সেখানেই কিশোরীর মৃত্যু হয় বলে জানায় পুলিশ।
এলাকার লোকজন জানান, ঘটনার পর গতি বাড়িয়ে পালানোর চেষ্টা করে ট্রাকটি। তবে স্থানীয় মানুষের তৎপরতায় পাটুলির কাছে ট্রাকটি ধরা পড়ে যায়। পরে পুলিশ ট্রাকটি আটক করে। গ্রেফতার করা হয় ট্রাকের চালককে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ এলাকার মানুষজন। তাদের অভিযোগ, এলাকায় সিগন্যালিং ব্যবস্থা চালু হলেও বহু ক্ষেত্রে সিগন্যাল মানছে না বহু গাড়ি। ফলে দুর্ঘটনা বাড়ছে। সিগন্যালিং ব্যবস্থায় কোনও নজরদারি নেই বলেও অভিযোগ তুলেছেন বাসিন্দারা। মৃত কিশোরীর প্রতিবেশী রাজা হালদার বলেন, ‘‘আগে এখানে সিগন্যাল ছিল না। কিছু দিন আগে সিগন্যাল বসানো হয়েছে। এলাকার মানুষ সিগন্যাল মেনেই যাতায়াত করেন। কিন্তু রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করা বহু গাড়িই সিগন্যাল মানে না। ফলে দুর্ঘটনা ঘটছে। সিগন্যাল ভাঙলে সে ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। তেমন নজরদারিও নেই।’’
নরেন্দ্রপুর ট্র্যাফিক গার্ডের ওসি ফারুক রহমান বলেন, ‘‘নজরদারি না চালানোর অভিযোগ ঠিক নয়। সিগন্যালে নিয়মিত নজরদারি চালানো হয়। দুর্ঘটনার পরিমাণ অনেক কমেছে। এই ঘটনার আগে গত তিন মাসে সে ভাবে কোনও দুর্ঘটনাই ঘটেনি।’’