Ganga Sagar Mela 2024

অসুস্থ মায়ের শাড়ি সঙ্গে এনে পুজো দিলেন ছেলে

নাতি-নাতনিদের মঙ্গল কামনায় কনকনে ঠান্ডায় সাগরে ডুব দিতে এসেছেন মধ্যপ্রদেশের লেখন সিংহ। যে দিন স্নানে নেমেছিলেন, ঠান্ডা তেমন ছিল না।

Advertisement
সমরেশ মণ্ডল
গঙ্গাসাগর শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:৩৩
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

সাগরের বেলাভূমে লক্ষ মানুষের কোটি গল্প!

Advertisement

গত আঠাশ বছর ধরে পুণ্যলাভের আশায় সাগরে আসছেন মধ্যপ্রদেশের দয়ারাম। সঙ্গে আছেন পড়শি কৃষ্ণা। দয়ারাম বলেন, ‘‘ভিড় এড়াতে মকর সংক্রান্তির আগেই স্নান সেরে ফিরে যাই। গত বছর ভাল কাটেনি। ডিসেম্বরে মারা গিয়েছে আমার বছর পঁচিশের ভাগ্নে। তার আত্মার শান্তি কামনায় মা গঙ্গার কাছে প্রার্থনা করলাম।’’

‘‘যত দিন বাঁচব, সাগরে আসব’’— বলেন বছর ষাটের বৃদ্ধ। জানালেন, আগের থেকে পরিষেবা অনেক উন্নত হয়েছে। দু’দশক আগে বেসরকারি বাসে যাত্রীদের
বসার জন্য মেঝেয় খড় বিছিয়ে দেওয়া হত। সিটে বসলে ভাড়া বেশি দিতে হত। বিদ্যুৎও ছিল না। মেলার সময়ে চলত ডিজ়েল চালিত জেনারেটর। এখন মোবাইলের নেটও
ভাল কাজ করছে, ভিডিয়ো কলও করা যাচ্ছে বলে জানালেন তিনি।

নাতি-নাতনিদের মঙ্গল কামনায় কনকনে ঠান্ডায় সাগরে ডুব দিতে এসেছেন মধ্যপ্রদেশের লেখন সিংহ। যে দিন স্নানে নেমেছিলেন, ঠান্ডা তেমন ছিল না। লেখনের আক্ষেপ, ‘‘কৃচ্ছসাধনে মনে হয় খামতি থেকে গেল, কষ্ট না করলে কি পুণ্য লাভ হয়!’’

এ বারই প্রথম সাগরস্নানে এসেছেন উত্তরপ্রদেশের আজমগড়ের খরবাহন যাদব। জানালেন, ২০২২ সালে বাবা মারা যাওয়ার পরে মা পার্বতীও হদরোগে ভুগছেন।
চিকিৎসা চলছে, তবে সমস্যা পুরোপুরি মেটেনি। মায়ের শরীরে আরও হাজারটা সমস্যা। তাই মাকে সাগরে আনার উপায় ছিল না। তবে সঙ্গে এনেছেন মায়ের শাড়ি। তা নিয়ে মন্দিরে পুজো দিয়েছেন।

ওই শাড়ি মায়ের হাতে তুলে দেবেন। যুবকের বিশ্বাস, মা এ বার সুস্থ হয়ে উঠবেন। সামনের বছর তাঁকে আনবেন সঙ্গে। বিহারের মজিলপুর থেকে এসেছেন শ্যামা দেবী। জানালেন, স্বামী অসুস্থ। দু’বছর ধরে শয্যাশায়ী। তাঁর মঙ্গলকামনায় দু’বছর ধরে গঙ্গাসাগরে আসছেন শ্যামা।

এমন কত মানুষের কত বিশ্বাস, কত স্বপ্ন ঢেউ খেলে সাগরের তটে।

আরও পড়ুন
Advertisement