ছবি: ভিডিয়ো থেকে নেওয়া।
এক জায়গায় চুপচাপ বসে বিশ্রাম করছিল একটি তুষার চিতাবাঘ। পিছনে তাকিয়ে হঠাৎ চমকে উঠল সে। মাটিতে শুয়ে পড়ে চার পা শূন্যে ছুড়ে ছটফট করতে দেখা গেল তাকে। আসলে, তুষার চিতাবাঘটি প্রথম ‘ক্যামেরা ট্র্যাপ’ দেখেছে। সেই অদ্ভুত যন্ত্র দেখেই ভয় পেয়ে গিয়েছে সে। সমাজমাধ্যমে এমনই একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে (যদিও এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম)।
‘বিয়ন্ড_দ্য_ওয়াইল্ডলাইফ’ নামের অ্যাকাউন্ট থেকে ইনস্টাগ্রামের পাতায় একটি ভিডিয়ো পোস্ট করা হয়েছে। সেই ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে যে, ভয় পেয়ে চার পা শূন্যে তুলে মাটিতে শুয়ে গড়াগড়ি খাচ্ছে একটি তুষার চিতাবাঘ। দেখে মনে হচ্ছে, কিছু দেখে খুব ভয় পেয়েছে সে। দৃশ্যটি স্লোভাকিয়ার প্যারাডাইস ওয়াইল্ডলাইফ পার্কে ক্যামেরাবন্দি করা হয়েছে। ক্যামেরা ট্র্যাপ দেখে ভয় পেয়ে গিয়েছে ওই তুষার চিতাবাঘটি। জঙ্গলের ভিতর বন্য প্রাণীদের ছবি তোলার জন্য এক ধরনের ক্যামেরা ব্যবহৃত হয়। কোনও চিত্রগ্রাহকশিল্পীর অনুপস্থিতিতে বন্য প্রাণীদের ছবি তোলা যায় সেই ক্যামেরা দিয়ে। তা দেখেই ভয় পেয়ে ছিটকে গিয়েছে তুষার চিতাবাঘটি।
সাধারণত ‘দ্য ঘোস্ট অব মাউন্টেন্স’ বা ‘পাহাড়ের ভূত’ নামে অধিক পরিচিত তুষার চিতাবাঘ। তারা অন্য যে কোনও চিতাবাঘের চেয়ে আলাদা। তাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যও অন্য রকম। অন্য যে কোনও চিতাবাঘের তুলনায় তুষার চিতাবাঘ মাঝারি আকারের হয়। তাদের শরীরের কাঠামো ১.৮ থেকে ২.৩ মিটারের মধ্যে হয়। তুষার চিতাবাঘের গায়ে হলদে রং থাকে ঠিক-ই। তবে সেই সঙ্গে থাকে কালচে ছোপ, ধোঁয়াটে রঙের আস্তরণও থাকে। তাদের চোখের রং ফ্যাকাশে ধূসর থেকে সবুজ রঙের হয়। তাদের লেজ লম্বায় ১ মিটার হয়।
পুরুষ তুষার চিতাবাঘের ওজন হয় ৪৫-৫৫ কেজি। স্ত্রী তুষার চিতাবাঘের ওজন হয় ৩৫-৪০ কেজি। বাঘের যেমন গর্জন শোনা যায়, তুষার চিতাবাঘের কিন্তু কোনও তর্জন-গর্জন নেই। বরফে মোড়া পাহাড়ে নিজেদের এতটাই অদৃশ্য করে রাখে যে, ওদের উপস্থিতি টের পাওয়াই মুশকিল। তবে ওরা গোঁ গোঁ শব্দ করতে পারে। প্রজননের সময় ছাড়া তুষার চিতাবাঘরা কখনই এক সঙ্গে ঘোরাফেরা করে না। বরং অধিকাংশ সময় একলা বিচরণ করে তারা। তুষারাবৃত পাহাড়ি এলাকায় আস্তানা তুষার চিতাবাঘের। এতটাই উঁচু জায়গায় তারা থাকে যে, তাদের নাগাল পাওয়া দুঃসাধ্য। সাধারণত সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার ৪০০ মিটার উঁচুতে তাদের দেখতে পাওয়া যায়।