ছবি: সংগৃহীত।
স্ত্রীকে মাদক খাইয়ে রোজ রাতে ডাকতেন অপরিচিত পুরুষদের। স্ত্রীকে ধর্ষণে মদত জোগাতেন। ১০ বছর ধরে চলে সেই নারকীয় নির্যাতন। সেই অভিযোগেই বৃহস্পতিবার ফ্রান্সের নাগরিক ডমিনিক পেলিকটকে দোষী সাব্যস্ত করল এক আদালত। অভিযোগ, টানা ১০ বছর ধরে কমপক্ষে ৮০ জন পুরুষকে ডেকে স্ত্রী গিসেল পেলিকটের উপর নির্যাতন চালিয়েছিলেন ডমিনিক। স্ত্রী যাতে প্রতিবাদ করতে না পারেন, তার জন্য তাঁকে মাদকও খাইয়ে দিতেন। সেই অভিযোগেই দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন তিনি। ৭২ বছরের ডমিনিককে ২০ বছর কারাবাসের সাজা শুনিয়েছে ফ্রান্সের একটি আদালত।
গিসেলের ঘটনা ইতিমধ্যেই নাড়া দিয়েছে সারা বিশ্বকে। ঘটনার সূত্রপাত ২০২০ সালে। বাজারে গিয়ে মহিলাদের ছবি তোলার অভিযোগ ওঠে ডমিনিকের বিরুদ্ধে। এর পর তাঁর কম্পিউটার বাজেয়াপ্ত করে তদন্ত চালাচ্ছিল পুলিশ। কম্পিউটার ঘেঁটে পুলিশ দেখেন, স্ত্রীর ধর্ষিত হওয়ার প্রায় ২০ হাজার ছবি এবং ভিডিয়ো ক্যামেরাবন্দি করে রেখেছেন ডমিনিক। সঙ্গে সঙ্গে গিসেলকে খবর দেয় পুলিশ। ৫০ বছরেরও বেশি দাম্পত্য জীবন কাটিয়েছেন যাঁর সঙ্গে, সেই স্বামী তাঁর উপর এ ভাবে নির্যাতন করেছেন দেখে হতভম্ব হয়ে যান তিনি। এ-ও বুঝতে পারেন, তাঁর উপর মাদক প্রয়োগ করা হত বলেই তিনি কিছু টের পাননি।
এর পরেই স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন গিসেল। আদালতে এ-ও দাবি করেছিলেন যেন, তাঁর পরিচয় গোপন না করা হয় এবং জনসমক্ষে এই মামলার বিচার হয়। দীর্ঘ দিন চলার পর বৃহস্পতিবার সেই মামলাতেই রায় ঘোষণা করেছে আদালত। ডমিনিক ছাড়াও আরও ২০ জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। এঁদের মধ্যে কেউ কেউ দাবি করেছিলেন যে, তাঁরা ভেবেছিলেন যে পুরো বিষয়টিতে গিসেলের সম্মতি রয়েছে। যদিও সেই যুক্তি খারিজ করেছে আদালত। আদালতে ডমিনিকের সাজা ঘোষণার সময় সেখানেই উপস্থিত ছিলেন ৭২ বছর বয়সি গিসেল এবং তাঁর দুই সন্তান ডেভিড ও ক্যারোলিন। কন্যা ক্যারোলিনের আপত্তিকর ছবি তোলারও অভিযোগ উঠেছিল ডমিনিকের বিরুদ্ধে।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সাজা শোনার পর ডমিনিক প্রথমে নিরুত্তাপ থাকলেও পরে কান্নায় ভেঙে পড়েন।