শহর থেকে দূরে ঠান্ডার খোঁজে কোথাও যাওয়ার কথা ভাবছেন? ছবি: সংগৃহীত।
সোমবার থেকে রাজ্যের সব সরকারি এবং বেসরকারি স্কুল, কলেজ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী জানালেন, শনিবার পর্যন্ত চলবে এই ছুটি। শীঘ্রই বিজ্ঞপ্তি জারি করছে রাজ্য সরকার। রাজ্যে তাপপ্রবাহ চলছে। দাবদাহ থেকে পড়ুয়াদের বাঁচানোর জন্যই এই পদক্ষেপ বলে জানানো হয়েছে। এমন সময়ে শহর থেকে দূরে ঠান্ডার খোঁজে কোথাও যাওয়ার কথা ভাবছেন। শিশুদের স্কুল বন্ধ, অফিস থেকে দু’-চার দিন ছুটি নিয়ে ঘুরে আসুন কাছেপিঠে কোথাও। গরমে স্বস্তি পেতে কোথায় কোথা যেতে পারেন, রইল সেই হদিস।
১) নামচি: অফিস থেকে তিন-চার দিন ছুটি নিয়ে নিতে পারলেই ঘুরে আসতে পারেন ৪৪০০ ফুট উচ্চতায় দক্ষিণ সিকিমের নামচি থেকে। সেখানকার অপরূপ দৃশ্য ও হালকা হিমেল হাওয়া সত্যিই আপনাকে মুগ্ধ করবে। কাঞ্চনজঙ্ঘা-সহ একাধিক তুষারশৃঙ্গের দৃশ্য দেখতে ঘুরে আসুন নামচি। গাড়িভাড়া করে যে জায়গাগুলি দেখতে যেতে পারেন, তার মধ্যে সামদ্রুপচে, রক গার্ডেন। এ ছাড়াও যেতে পারেন চারধাম। যেখানে কেদারনাথ, বদ্রীনাথ, রামেশ্বরম, দ্বারকা, গঙ্গোত্রী ইত্যাদি মন্দিরের সুদৃশ্য রেপ্লিকা তৈরি হয়েছে অনেকটা জায়গা জুড়ে। এ ছাড়াও আছে ১০৮ ফুট উচুঁ বিশাল এক শিবমূর্তি, সাঁই বাবার মন্দির। পরিবারের সঙ্গে ছুটি কাটানোর আদর্শ ঠিকানা হতেই পারে নামচি।
২) লুংলেই: ঠান্ডার খোঁজে ঘুরে আসতে লুইলেই থেকে। মিজোরামের এই সুন্দর শহরটি অনেক ভ্রমণপিপাসুর কাছেই অজানা। মনোরম পাহাড়ি পরিবেশ এবং অসাধারণ আবহাওয়া আপনার মন ভরিয়ে তুলবে। শহুরে কোলাহল থেকে অনেক দূরে নীরবে ছুটি কাটাতে যেতে চাইলে এই ঠিকানা আদর্শ। ঘুরে আসতে পারেন থোরংটলাং অভয়আরণ্য, সাজ়া অভয়আরণ্য, সাইকুটি হল, লুংলেই ব্রিজ থেকে। হাতে খুব বেশি সময় না থাকলে কেবল মনোরম পরিবেশে পরিবারের সঙ্গে একান্তে সময় কাটাতে চাইলে আপনার পছন্দের তালিকায় রাখতে পারেন লুইলেই।
৩) কসোল: হিমাচলপ্রদেশের কুল্লু জেলার এই ছোট্ট শহরটিতে এখন কেবল ভারতীয়রাই নয়, বিদেশি পর্যটকেরাও ভিড় জমাচ্ছেন। পার্বতী নদীর উপত্যকায় অবস্থিত ছোট্ট একটি জনপদ কসোল। যাঁরা ট্রেক করতে ভালোবাসেন, তাঁদের মনে ধরতে পারে এই ছোট্ট শহর। এক দিকে সুউচ্চ হিমালয়ের মনমুগ্ধ করা সৌন্দর্য, অন্য দিকে পার্বতী নদীতে অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসে অংশগ্রহণ করার সুযোগ, দুই-ই মিলবে এখানে। একঘেয়ে জীবনে রোমাঞ্চের খোঁজ করলে হাতে কয়েক দিন সময় নিয়ে ঘুরে আসুন কসোল থেকে।
৪) শ্রীখোলা: দার্জিলিংয়ের একটি ছোট্ট গ্রাম শ্রীখোলা। তথাকথিত পর্যটনকেন্দ্র নয়, তবে শ্রীখোলা যাঁরা এক বার গিয়েছেন, তাঁরা তাঁদের মনের মণিকোঠায় চিরদিনের জন্য বেঁচে আছে পাহাড়-নদী-জঙ্গল ঘেরা শ্রীখোলার কিছু সুন্দর ফ্রেম। সান্দাকফু-ফালুট ট্রেকিং করতে যেতে চাইলে পথেই পড়বে শ্রীখোলা। রিম্বিক থেকে খুব কাছে, মিনিট পনেরোর রাস্তা। প্রকৃতির সান্নিধ্যে এমন মনোরম পরিবেশে ছুটি কাটাতে মন্দ লাগবে না! এই জায়গায় গেলেই আপনাকে স্বাগত জানাবে শ্রীখোলা নদীর কলরব, নদীর উপরেই মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে দু’শো বছরের পুরনো ঝুলন্ত ব্রিজ। অপূর্ব প্রাকৃতিক দৃশ্য আর তারই মাঝে ইতিউতি ছড়িয়ে কিছু কাঠের বাড়িঘর। কাছেই সিঙ্গালিলা জাতীয় উদ্যান, এক দিন সেখানেও সময় কাটাতে পারেন। খুদেরাও মজা করবে।
৫) পঞ্চগনি: গরমে স্বস্তির খোঁজ করতে চাইলে আপনার গন্তব্য হতে পারে মহারাষ্ট্রের পঞ্চগনি। মুম্বইয়ের দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে এই শৈলশহরের অবস্থান। মহাবালেশ্বর থেকে যেতে সময় লাগবে প্রায় আধ ঘণ্টা। দুপুরের দিকে রোদ ঝলমলে পাহাড়ের দৃশ্য আর সন্ধ্যা নামলেই হালকা হিমেল হাওয়া! ঘুরে আসতে পারেন ধুম ধাম লেক, পারসি পয়েন্ট, সিডনি পয়েন্ট, টেবলল্যান্ড, লিঙ্গমালা ঝর্না! গরমের ছুটি জমবে বেশ ভালই।