লক্ষদ্বীপে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
সম্প্রতি ভারতের ক্ষুদ্রতম কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লক্ষদ্বীপে গিয়েছিলেন মোদী। সেই সফরের বেশ কিছু ছবি এবং ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ভাইরাল করা হয়। অভিযোগ, মলদ্বীপের ওই মন্ত্রীরা তেমনই কিছু ছবিতে মোদীকে ‘পুতুল’ এবং ‘জোকার’ বলে মন্তব্য করেন। ভারত-ইজ়রায়েল সম্পর্ক নিয়েও আপত্তিকর মন্তব্য করা হয়। পরে অবশ্য বিতর্কের মুখে পোস্টগুলি মুছে দেওয়া হয়। কিন্তু ভারত এবং প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্যের জেরে ভারতীয়দের রোষের মুখে পড়েছে দ্বীপরাষ্ট্র মলদ্বীপের সরকার। এমনকি, মলদ্বীপকে বয়কট করার ডাকও দিয়েছেন বলিউড এবং ক্রিকেট মহলের তাবড় তারকারা। মলদ্বীপ না গিয়ে ভারতীয় দ্বীপগুলি ঘুরে দেখার আবেদন করে গলা মিলিয়েছেন তাঁরা।
বিতর্ক শুরু হতেই ভারত এবং প্রধানমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়েছেন অক্ষয় কুমার, সচিন তেন্ডুলকর, সলমন খান, কঙ্গনা রানাউত, জন আব্রাহাম, শ্রদ্ধা কপূর, হার্দিক পাণ্ড্যের মতো তারকারা। মলদ্বীপ যেতে বারণ করার পাশাপাশি, দেশবাসীকে ভারতীয় দ্বীপগুলি অন্বেষণ করার বার্তাও দিয়েছেন তাঁরা। তবে লক্ষদ্বীপ যাবেন কী ভাবে?
যাওয়ার দু’টি উপায় রয়েছে। কেরলের কোচি থেকে সপ্তাহের নির্দিষ্ট কিছু দিনে বিমান পরিষেবা রয়েছে লক্ষদ্বীপের অগট্টি দ্বীপে যাওয়ার। এটাই লক্ষদ্বীপের একমাত্র বিমানবন্দর। তা ছাড়াও কোচি থেকে জলপথে পৌঁছনো যায় অগট্টি। সব সময় না পাওয়া গেলেও দিনের মধ্যে কোনও না কোনও সময় ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে মোট তিনটি জাহাজ— এমভি কোরাল্স, এমভি কাভারাট্টি এবং এমভি লাগুন চলে এই পথে। তবে জলপথে কোচি থেকে অগট্টি পৌঁছতে লাগে ১৪ থেকে ১১৮ ঘণ্টা।
আপতত এক্সে ‘বয়কট মলদ্বীপ’ এবং ‘এক্সপ্লোর ইন্ডিয়ান আইল্যান্ডস’-এর মতো কিছু হ্যাশট্যাগ রমরমিয়ে চলছে। সারা আলি খান থেকে জাহ্নবী কপূর— সকলেই ভারতীয়দের উৎসাহ দিচ্ছেন লক্ষদীপ ঘুরে দেখার। দেশের বিভিন্ন পর্যটন ওয়েবসাইট দাবি করেছে, গত কয়েক দিনে নাকি লক্ষদ্বীপ নিয়ে পর্যটকদের কৌতূহল অনেক বেড়েছে। তার উপর, মলদ্বীপের ছুটি বাতিল করে অনেকেই এখন লক্ষদ্বীপ যাওয়ার দিকে ঝুঁকছেন বলেও দাবি করছে বিভিন্ন পর্যটন সংস্থা। তা হলে কি সামনের লং উইকইন্ডে এই দ্বীপে ঘুরে আসবেন ভাবছেন? না, তার সম্ভাবনা এখনই নেই। এ মাসে তো বটেই, আগামী মাসেও অগট্টি যাওয়ার কোনও বিমান পাওয়া যাচ্ছে না। বিভিন্ন পর্যটন ওয়েবসাইটগুলিতে জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারির যে কোনও তারিখে বিমানের টিকিট কাটতে গেলে দেখাচ্ছে ‘নো ফ্লাইট্স অ্যাভেলেব্ল’।
কোচি থেকে ৪৫৯ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত অগট্টি। সংবাদ সংস্থা অনুযায়ী, সেখানকার বেশ কিছু স্থানীয় বাসিন্দারা লক্ষদ্বীপের পর্যটন নিয়ে খুব একটা উৎসাহিত নন। বরং তাঁদের দুশ্চিন্তার বিষয়, ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা। অনেকেই দাবি করেছেন, আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত কোনও বিমান পাচ্ছেন না তাঁরা কোচি আসার জন্য। যে তিনটি জাহাজ জলপথে কোচি থেকে যাতায়াত করে, সেগুলির সময়েও ঠিক থাকে না। তাই কোনও প্রয়োজনে কোচি পৌঁছনোর খুব বেশি উপায় থাকে না। স্থানীয়দের জন্যেই যদি পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকে, তা হলে আর পর্যটকরা কী করে পৌঁছবেন, প্রশ্ন অগট্টিবাসীদের।