ফুলের জলসা দেখতে চলুন মহারাষ্ট্রের কাস মালভূমিতে। ছবি: সংগৃহীত।
‘ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স’ বা ফুলের উপত্যকা বললেই প্রথমে মাথায় আসে উত্তরাখণ্ডের নাম। তবে সে রূপের সাক্ষী হওয়া সহজ কথা নয়। দীর্ঘ পাহাড়ি পথ হেঁটে পাড়ি দিতে হয় সেখানে পৌঁছতে।
সে পথে পাড়ি দিতে না পারলে, ঘুরে আসতে পারেন মহারাষ্ট্রের ‘ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স’ থেকে। সাতারা জেলার সাতারা শহর থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরে রূপের ডালি সাজিয়ে অপেক্ষা করছে রঙিন ফুলেরা। বর্ষণসিক্ত কাস মালভূমিতে সে রঙের আভা থেকে চোখ ফেরায়, সাধ্যি কার!
৮৫০-এর উপর বিভিন্ন প্রজাতির ফুল ফোটে কাস মালভূমিতে। স্থানীয়রা এই জায়গাকে বলেন, ‘কাস পঠার’। বর্ষাতেই সবচেয়ে সুন্দর হয়ে ওঠে কাস। অগস্ট থেকে শুরু হয় ফুল ফোটা। থাকে অক্টোবর পর্যন্ত। তবে প্রতি বছর ফুল ফোটার সময়ে অল্প-বিস্তর তফাত হয়। তার উপর ভিত্তি করেই পর্যটক প্রবেশের ছাড়পত্র দেওয়া হয়। সাধারণত সেপ্টম্বরের শেষ দিক থেকে পর্যটকেরা যেতে পারেন সেখানে। বছরে ১৫-২০ দিন সবচেয়ে সুন্দর হয়ে ওঠে এই উপত্যকা। মেঘ-কুয়াশার চাদর সরলে দেখা যায় দিগন্ত জুড়ে রঙের খেলা। যখন সেই পুষ্পরাশি সম্মিলিত ভাবে মাথায় দোলায়, তখন সেই রূপের কাছে তুচ্ছ মনে হয় এই জগৎ। এখানেই পাওয়া যায় এমন অন্তত ৩৯টি প্রজাতির ফুল, যার সন্ধান অন্য কোথাও মেলে না। উদ্ভিদবিদদের কাছে তাই এই জায়গার গুরুত্ব অপরিসীম।
কোয়েনা স্যাংচুয়ারি থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরে এই ফুলের উপত্যকা। বিস্তীর্ণ এলাকার বেশির ভাগটাই সংরক্ষিত বনাঞ্চলের মধ্যে পড়ে। ফুলের শোভা সব থেকে আকর্ষণীয় হয় সেপ্টম্বর শেষে ও অক্টোবরে।
কী ভাবে বুকিং?
চাইলেই যে কেউ এই উপত্যকায় আসতে পারবেন না। এ জন্য আগাম টিকিট কাটতেই হয়। প্রতি দিন ৩ হাজার পর্যটক ফুলের উপত্যকায় ঘোরাঘুরির অনুমতি পান। কাস মালভূমির নিজস্ব ওয়েবসাইটে গিয়ে অনলাইনে আগাম টিকিট কাটতে হয়। প্রবেশের জন্য টিকিট মূল্য ১৫০ টাকা। গাইডের জন্য লাগে ১০০টাকা। ৫০ টাকা দিয়ে সাইকেল ভাড়া নিয়ে ঘুরে নেওয়া যায় রাজমার্গ থেকে কুমুদিনী হ্রদ।
সময় এখানে খুব গুরুত্বপূর্ণ। সারা দিনে তিন ভাগে সময় দেওয়া হয়। সকাল ৭টা থেকে ১১টা, ১১টা থেকে ৩টে ও ৩টে থেকে সন্ধে ৬টা। নির্ধারিত সময়ে এক হাজার পর্যটককে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়।
কী ভাবে আসবেন?
মুম্বই থেকে কাস মালভূমির দূরত্ব মোটামুটি ২৫০ কিলোমিটার। কাস মালভূমিতে ঘুরতে গেলে সাতারাতেই থাকতে পারেন। কলকাতা থেকে মুম্বই অথবা পুণে গিয়ে সেখান থেকেও সাতারা যেতে পারেন। পুণে থেকে সাতারা যাওয়ার একাধিক ট্রেন রয়েছে।