কেবল কারে চেপে কাশ্মীরের নৈসর্গিক রূপের সাক্ষী থাকা যায়। ছবি: সংগৃহীত।
কাশ্মীর। কখনও এই কাশ্মীর হয়েছে ছবির বিষয়বস্তু, কখনও সেই কাশ্মীরেই হয়েছে ছবির শুটিং।
‘কাশ্মীর কি কলি’ থেকে ‘মিশন কাশ্মীর’, ‘বজরঙ্গি ভাইজান’-সহ অসংখ্য ছবিতে ফুটে উঠেছে ভূস্বর্গের রূপ। কখনও ডাল হ্রদে, কখনও তুষারাবৃত উপত্যকায় অ্যাকশন দৃশ্য দেখে মোহিত হয়েছে দর্শককুল।
তবে শুধু দর্শকই নন, কাশ্মীরের রূপে মুগ্ধ নায়ক-নায়িকারাও। সেখানে ছবির শুটিং থাকলে, সময় বার করে কাশ্মীরের আনাচকানাচ ঘুরে নিতে মুখিয়ে থাকেন বেশির ভাগ অভিনেতা-অভিনেত্রীই।
সম্প্রতি কাশ্মীরে শুটিং করেছেন অভিনেত্রী শর্বরী ওয়াগ। ‘আলফা’ ছবির শুটিং হয়েছে সেখানে। অভিনেত্রী আলিয়া ভট্টও তাতে অভিনয় করছেন। শুটিংয়ের ফাঁকে কাশ্মীরে ঘোরার ছবি সমাজমাধ্যমে ভাগ করে নিয়েছেন শর্বরী।
কাশ্মীরের সৌন্দর্যের খ্যাতি বিশ্বজোড়া। আপনিও কি সেখানে বেড়াতে যেতে চান? বন্ধুবান্ধব, পরিবার নিয়ে যেতেই পারেন। তবে যদি মনে করেন, একেবারে নিজের মতো করে সেখানকার নিসর্গ উপভোগ করবেন, তা হলে একলা ভ্রমণেরও পরিকল্পনা করতে পারেন।
কাশ্মীর গেলে কোন কোন আনন্দ বাদ দেওয়া যাবে না?
শিকারা ভ্রমণ
কাশ্মীর বললেই যে ছবিটি ভেসে ওঠে পাহাড় ঘেরা বিশাল হ্রদে শিকারা ভ্রমণ। অসংখ্য ছবিতে সে দৃশ্য দেখা গিয়েছে। ডাল লেকেই তাদের বাজার, নৌকাতেই চলে কেনাবেচা। তাই কাশ্মীর ভ্রমণে একটা দিন অথবা দিনের একটি বেলা রাখতেই হবে শিকারায় চেপে ভেসে বেড়ানোর জন্য। ঠান্ডায় জবুথবু হয়ে গেলে, গা গরম করতে চুমুক দিতে পারেন কাশ্মীরি কাওয়াবায়। এটি আসলে বিশেষ ধরনের চা। ডাল লেকে নৌকা করে কাওয়াবা বিক্রি করেন চা বিক্রেতারা। শুধু ডাল নয়, নাগিন লেকও ঘুরে নিতে পারেন শিকারায়। দেখতে পারেন এখানকার সব্জি বাজার, দোকানপাট।
গুলমার্গ গন্ডোলা
কাশ্মীরের অন্যতম আকর্ষণ গুলমার্গ গন্ডোলা। গুলমার্গ থেকে এই কেবল কারে চড়ে চলে যাওয়া যায় উপরে। কাচ ঘেরা রোপওয়ে চড়ে উপরে ওঠার সময় মনে পড়ে যেতে পারে অসংখ্য হিন্দি ছবির টুকরো দৃশ্য। যতই উপরে ওঠা যায়, ধীরে ধীরে দেখা মিলতে শুরু করে বরফের। দু’টি ধাপে উপরে ওঠা যায়। এগুলি ফেজ়১ এবং ২ নামে চিহ্নিত। ফেজ় ১-এ পৌঁছনো যায় কংডোরিতে। পরের ফেজ়ে কংডোরি থেকে আফরাওয়াত। গ্রীষ্ম ছাড়া মোটামুটি অন্য সময়গুলিতে দুই জায়গাতেই বরফ থাকে। আফরাওয়াতের উচ্চতা অনেকটাই। হার্টের সমস্যা বা অন্য কোনও অসুখ থাকলে, এই দ্বিতীয় ধাপটি এড়িয়ে যাওয়া ভাল। শীতের মরসুমে এই স্থানগুলিতে স্কিইং থেকে রকমারি শীতকালীন ক্রীড়ার আয়োজন থাকে।
র্যাফটিং
অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের শখ থাকলে করতে পারেন র্যাফটিং। সোনমার্গে সিন্ধু নদের উপর র্যাফটিং করানো হয়। পহেলগাঁওতে লিডার নদীতেও র্যাফটিং হয়। র্যাফটিং প্রথম বার করতে হলে লিডার নদীতেই ভেসে পড়তে পারেন। আড়াই কিলোমিটার, ৫ কিলোমিটার, ৮ কিলোমিটার, ১৫ কিলোমিটার হিসাবে দূরত্ব ভাগ করা আছে। সোনমার্গে র্যাফটিং শুরু হয় বালতাল থেকে। শেষ হয় সুতকারি সেতুতে।
কাশ্মীরি খাবার
প্রতিটি স্থানেরই নিজস্ব খাবার থাকে। কাশ্মীরও তার ব্যতিক্রম নয়। স্থানীয় খাবারের স্বাদ ছাড়া কাশ্মীর ভ্রমণ অসম্পূর্ণ। মাংসের রকমারি, সুস্বাদু পদ এখানে মেলে। যেমন, ওয়াজ়ওয়ান, গুস্তাবা, মটন রোগান জোশ। নিরামিষেও রয়েছে অনেক কিছু। তার মধ্যে কাশ্মীরি পোলাও, মোদুর পোলাও জনপ্রিয়।
বেড়ানো
কাশ্মীরে বেড়ানোর অসংখ্য জায়গা আছে। শ্রীনগরে ঘুরে নেওয়া যায় মোগল উদ্যান। এ ছাড়া, পহেলগাঁও, বেতাব ভ্যালি, সোনমার্গ, দুধ পাথরি-সহ বহু জায়গা ঘুরে নেওয়া যায়। এ ছাড়া গুরেজ ভ্যালি, ওয়ারন ভ্যালি, গ্রেট লেকস-সহ একাধিক স্থানে ট্রেক করা যেতে পারে।