বাবর আজ়ম। — ফাইল চিত্র।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দু’ম্যাচ হেরে চাপে পাকিস্তান। আমেরিকার কাছে হারের পরই শুরু হয়েছিল সমালোচনা। ভারতের বিরুদ্ধে ১২০ রানের সহজ লক্ষ্য পেয়েও জিততে পারেননি বাবর আজ়মেরা। স্বভাবতই পাকিস্তানের একের পর এক প্রাক্তন ক্রিকেটার সুর চড়াচ্ছেন। সেলিম মালিক কাঠগড়ায় তুলেছেন ইমাদ ওয়াসিমের মন্থর ব্যাটিংকে। আর এক প্রাক্তন অধিনায়ক শাহিদ আফ্রিদির চোখে খলনায়ক অধিনায়ক বাবরই। বাবরদের সমালোচনা শোনা গিয়েছে ওয়াসিম আক্রম এবং ওয়াকার ইউনিসের গলাতেও। বাবরদের যোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন তাঁরা।
বিশ্বকাপের আগে শাহিন আফ্রিদিকে সরিয়ে বাবরকে আবার সাদা বলের ক্রিকেটে অধিনায়ক করেছিল পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। জামাইকে অধিনায়ক হিসাবে একটা সিরিজ় দেখেই বোর্ডের এমন সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ ছিলেন আফ্রিদি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পর পর দু’টি ম্যাচে হারের পর হতাশ আফ্রিদি দায়ী করেছেন বাবরকেই। বাবর কী করেন, তা নিয়ে মুখ খুলবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। প্রাক্তন অলরাউন্ডার বলেছেন, ‘‘এক জন অধিনায়ক দলের সকলকে এক সূত্রে বাঁধতে পারে। আবার সে দলের পরিবেশ নষ্টও করে দিতে পারে। আমাদের বিশ্বকাপ শেষ। এখন খোলাখুলি ভাবেই কথা বলব।’’ তিনি বলেছেন, ‘‘শাহিনের সঙ্গে আমার একটা সম্পর্ক আছে। ওর সম্পর্কে কিছু বললেই সকলে বলে আমি নিজের জামাইয়ের পক্ষ নিয়ে কথা বলছি। আমার মনে হয়, পাকিস্তানের সাজঘরের পরিবেশ ঠিক নেই। আসলে অধিনায়ক বাবরকে নিয়ে দলের কয়েক জন ক্রিকেটারের সমস্যা রয়েছে।’’ আফ্রিদি মনে করেন দলের মধ্যে একতার অভাবেই বেহাল দশা।
হতাশ আক্রম বলেছেন, ‘‘এই দলের প্রায় সকলে কম-বেশি ১০ বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছে। আমার পক্ষে এদের কিছু শেখানো সম্ভব নয়। মহম্মদ রিজ়ওয়ানের খেলাটা নিয়ে কোনও জ্ঞানই নেই। এটুকু বোঝে না, ওকে আউট করার জন্যই বুমরা ওই বলটা ইচ্ছাকৃত করেছিল। আর রিজ়ওয়ান সাবধানে না খেলে বড় শট নিতে গেল! আউটও হল।’’ আরও দু’জনকে নিয়ে হতাশ আক্রম। তাঁরা হলেন ফখর জামান এবং ইফতিকার আহমেদ। আক্রম বলেছেন, ‘‘ফখর আর ইফতিকার এত দিন ধরে পাকিস্তানের হয়ে খেলছে। অথচ ওদের খেলায় কোনও উন্নতিই নেই। কী ভাবে ব্যাট করতে হয়, সেটুকুও জানে না। এরা আসলে মনে করে, ভাল খেলতে না পারলে কোচকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে। ওদের কিছুই হবে না। কোচদের এ বার ভাবা দরকার। প্রয়োজনে পুরো দলটাই পরিবর্তন করে দিতে হবে।’’
অন্য দিকে ইউনিস বলেছেন, ‘‘ভারত একটা ভাল সুযোগ দিয়েছিল। এই পিচে ১৪০-১৫০ রান পর্যন্ত তাড়া করে জেতা সম্ভব। ৭ উইকেট পড়ে যাওয়ার পরেও জেতা উচিত ছিল। ভারতীয় দলের ভারসাম্য দুর্দান্ত। ওরা জানে ব্যাটারেরা ব্যর্থ হলে যশপ্রীত বুমরা, মহম্মদ সিরাজ, রবীন্দ্র জাডেজারা বল হাতে সামলে দিতে পারবে। ওদের ভাল ফিল্ডিংও প্রতিপক্ষকে চাপে রাখে সব সময়। পাকিস্তান যদি এই ম্যাচও জিততে না পারে, তা হলে আর কী বলব! পাকিস্তানের ব্যাটারদের পারফরম্যান্স জঘন্য। দুটো জুটি যথেষ্ট ছিল। সেটাও পারে না এরা।’’
মালিক আবার পাকিস্তানের হারের জন্য দায়ী করছেন অলরাউন্ডার ওয়াসিমকে। গুরুত্বপূর্ণ সময় তাঁর ২৩ বলে ১৫ রানের ইনিংসের জন্যই হারতে হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। মালিক বলেছেন, ‘‘ওয়াসিমের ইনিংস দেখলেই বোঝা যাবে, কী ভাবে বল নষ্ট করেছে। কতগুলো বলে রান করতে পারেনি। ওর ইনিংসের জন্যই রান তাড়া করার কাজ কঠিন হয়ে গিয়েছে।’’
উল্লেখ্য, রবিবার পাকিস্তানের ব্যাটারেরা মোট ৫৯টি ডট বল খেলেন। যা তাঁদের কাজ কঠিন করে দেয়। পাওয়ার প্লে-র প্রথম ৬ ওভারে বাবরেরা তোলেন ৩৫ রান। এ সময় প্রচুর বল নষ্ট করেছেন রিজ়ওয়ানও। তিনি ৪৪ বলে ৩১ রান করেন। পরের দিকে ইফতিকার আহমেদও ৯ বলে ৫ রান করেন।