Nadal-Alcaraz

নাদালকারাজ! ১৩০০ কিলোমিটার দূর থেকে দ্রোণাচার্যের ফোন, একলব্যকে কী বার্তা দিলেন?

উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরেই ১৩০০ কিলোমিটার দূর থেকে ফোন পান কার্লোস আলকারাজ। ফোন করেছিলেন রাফায়েল নাদাল। উত্তরসূরিকে কী বার্তা দিয়েছেন পূর্বসূরি?

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২৩ ১০:৩৮
Rafael Nadal and Carlos Alcaraz

রাফায়েল নাদাল (বাঁ দিকে) ও কার্লোস আলকারাজ। —ফাইল চিত্র

উইম্বলডন ফাইনালে নোভাক জোকোভিচকে হারানোর পরে কার্লোস আলকারাজ প্রথম ফোন পান রাফায়েল নাদালের কাছ থেকে। ১৩০০ কিলোমিটার দূরে স্পেনের মায়োর্কা থেকে লন্ডনে উত্তরসূরিকে শুভেচ্ছা জানাতে ফোন করেছিলেন পূর্বসূরি। ফোনে কী বলেন নাদাল? তা জানা না গেলেও পরে আলকারাজকে নিয়ে টুইট করেন নাদাল। সেই টুইট থেকে কিছুটা আন্দাজ করা যাচ্ছে যে নাদাল কতটা উচ্ছ্বসিত আলকারাজকে নিয়ে।

টুইটে নাদাল লিখেছেন, ‘‘শুভেচ্ছা। আজ তুমি আমাদের খুব আনন্দ দিয়েছ। আমি নিশ্চিত, আমাদের প্রত্যেকের আদর্শ মানোলো সান্তানা আজ যেখানেই আছেন সেখান থেকে তোমার জন্য হাততালি দিচ্ছেন। তোমাকে অনেক আদর। এই মুহূর্তটা উপভোগ কর চ্যাম্পিয়ন।’’

Advertisement

স্পেনের তিন জন পুরুষ টেনিস তারকা উইম্বলডন জিতেছেন। ১৯৬৬ সালে প্রথম বার এই ট্রফি জেতেন সান্তানা। ওপেন এরা-তে ২০০৮ ও ২০১০ সালে নাদাল উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন হন। তার ১৩ বছর পরে আবার স্পেনের কোনও খেলোয়াড় ঘাসের কোর্টে সেরা হলেন। তাই নিজের শুভেচ্ছা বার্তায় সান্তানার নামও নিয়ে এসেছেন নাদাল।

চোটের কারণে দীর্ঘ দিন কোর্টের বাইরে নাদাল। চলতি বছর হয়তো আর নামতে পারবেনও না। চোট সারিয়ে ফিরলেও আর কত দিন খেলতে পারবেন তা নিশ্চিত নয় ৩৭ বছরের নাদালের। তাই স্পেনের টেনিস এখন আলকারাজের কাঁধে। ২০ বছরের তারকা সবে নিজের প্রথম উইম্বলডন ও দ্বিতীয় গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতলেন। তবে কি নাদালও নিজের ব্যাটন এ বার আলকারাজের হাতে তুলে দিতে চাইছেন! ফোন করে কি সেই ইঙ্গিতই দিয়েছেন ২২ গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিক নাদাল!

নাদালের অ্যাকাডেমিতে টেনিস শিখলেও সরাসরি নাদালের কাছে কোনও দিন শেখেননি আলকারাজ। তাঁকে দেখে শিখেছেন। নাদাল তাঁর কাছে দ্রোণাচার্যের মতো, আলকারাজ তাঁর একলব্য (দ্রোণাচার্য কখনও একলব্যকে অস্ত্রবিদ্যা শেখাননি)। কিন্তু নাদালের খেলার অনেক গুণ তাঁর খেলাতেও রয়েছে। নাদালের মতোই পাওয়ার টেনিস। র‌্যালি চলতে চলতে হঠাৎ তীব্র গতিতে ফোরহ্যান্ডে প্রতিপক্ষকে মাটি ধরাতে পারেন। ঠিক একই রকম দ্রুত কোর্টের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পৌঁছে যেতে পারেন। লম্বা ম্যাচ খেলার শারীরিক ক্ষমতা রয়েছে। উইম্বলডন ফাইনালে তৃতীয় সেটে জোকোভিচ যখন ক্লান্ত হতে শুরু করেছেন তখন আলকারাজকে দেখে মনে হচ্ছিল সবে বোধহয় নামলেন। নতুনদের মধ্যে সেরা হওয়ার সব গুণ রয়েছে তাঁর। আলকারাজের টেনিসে মুগ্ধ নাদালও। তাই তো সবার আগে দ্রোণাচার্যের ফোন গেল তাঁর একলব্যের কাছে।

রবিবার সেন্টার কোর্টে মহাকাব্যিক ফাইনালের আশায় বসেছিল টেনিস বিশ্ব। এক দিকে ২৩ গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিক জোকোভিচ। উইম্বলডনে টানা ২৮ ম্যাচ অপরাজিত। শেষ হেরেছিলেন ২০১৭ সালের কোয়ার্টার ফাইনালে টমাস বার্ডিচের কাছে। টানা পাঁচ বার উইম্বলডন জিতে রজার ফেডেরারকে ছুঁয়ে ফেলার সুযোগ ছিল সার্বিয়ার খেলোয়াড়ের সামনে। ঘাসের কোর্টে ঈর্ষনীয় রেকর্ডের মালিক জোকোভিচের (১০৯ জিত, ১৮ হার) সামনে ছিলেন বিশ্বের এক নম্বর তারকা আলকারাজ। চলতি বছর ভাল খেললেও গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিততে পারেননি। কয়েক মাস আগেই ফরাসি ওপেনের সেমিফাইনালে জোকোভিচের কাছে হেরেছিলেন আলকারাজ। সেই ম্যাচে চোট ভুগিয়েছিল স্পেনের খেলোয়াড়কে। এই ম্যাচে সেটা হল না। উল্টে যত ম্যাচ গড়াল তত ক্লান্ত হয়ে পড়লেন জোকোভিচ।

দু’জনেই অনেক ভুল করেছেন। বেশি ভুল করে ম্যাচ হেরেছেন জোকোভিচ। টান টান লড়াইয়ে পাঁচ সেটে খেলা গড়ালেও যে মানের টেনিস আশা করা হয়েছিল, তা দেখা গেল না। ঘাসের কোর্টে শরীরের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে সমস্যা হচ্ছিল দুই খেলোয়াড়েরই। বেশি সমস্যায় পড়েন জোকোভিচ। গোটা ম্যাচে অন্তত চার বার পিছলে পড়লেন তিনি। তাতে বড় চোট লাগতে পারত তাঁর। পড়লেন আলকারাজও। হাওয়ার জন্যও সমস্যা হচ্ছিল। এই প্রতিবন্ধকতা বেশি ভোগাল জোকোভিচকে। শেষ পর্যন্ত ৪ ঘণ্টা ৪২ মিনিটের লড়াইয়ে ১-৬, ৭-৬ (৮-৬), ৬-১, ৩-৬, ৬-৪ গেমে ৩৬ বছরের জোকোভিচকে হারান ২০ বছরের আলকারাজ।

আরও পড়ুন
Advertisement