কেএল রাহুল (বাঁ দিকে) এবং মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। — ফাইল চিত্র।
হায়দরাবাদের কাছে হারের পর মালিক সঞ্জীব গোয়েন্কার কাছে ধমক খেয়েছেন লখনউ সুপার জায়ান্টের অধিনায়ক কেএল রাহুল। সেই ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এ বার আরও বড় সম্ভাবনার কথা প্রকাশ্যে এসেছে। জানা গিয়েছে, লখনউয়ের অধিনায়ক হিসাবে রাহুলকে সরিয়ে দিতে পারেন গোয়েন্কা। যেমন করেছিলেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনির সঙ্গে।
দলমালিক যে-ই হোন না কেন, রাহুলের মতো ভারতীয় দলে ধারাবাহিক ভাবে খেলা এবং সফল ক্রিকেটার এই আচরণ কতটা মেনে নেবেন তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। গোয়েন্কাও ব্যক্তিগত ভাবে রাহুলকে আর পছন্দ করেন কি না তা নিয়ে জল্পনা চলছে। ২০২২ সালে লখনউয়ের জন্মলগ্ন থেকেই সেই দলের অধিনায়ক রাহুল। গত দু’বার পয়েন্ট তালিকায় তৃতীয় স্থানে শেষ করেও ফাইনালে খেলতে পারেনি।
এ বারও লখনউ প্লে-অফের দৌড়ে রয়েছে। কিন্তু দলের থেকে ট্রফি চান গোয়েন্কা। তাই পরের বার মহা নিলামের আগে রাহুলকে ছেড়ে দেওয়া হতে পারে বলে জল্পনা তৈরি হয়েছে। মরসুমের মাঝামাঝি রাহুলের নেতৃত্ব গেলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই বলে দাবি অনেকের।
২০১৭ সালে এ ভাবেই খারাপ পারফরম্যান্সের কারণে ধোনির থেকে নেতৃত্ব কেড়ে স্টিভ স্মিথকে দেন সঞ্জীব। অনেকেই সেই ঘটনা ভাল ভাবে নেননি। আলোচনা এবং সমালোচনা হয় বিস্তর। তবু নিজের সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন গোয়েন্কা।
পরে বলেছিলেন, “সংবাদমাধ্যম এবং সমাজমাধ্যমে যে কেউ যা খুশি বলতে পারে। আমি সবার মতামতকে সমীহ করি। কিন্তু কেন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি তা নিয়ে জনসমক্ষে আলোচনা করার দরকার আছে বলে মনে করি না। সব সময় সব সিদ্ধান্ত জনপ্রিয় না-ও হতে পারে।”
ধোনি এবং স্মিথের তুলনা করতে গিয়ে তিনি বলেছিলেন, “১০-১৫ বছর ধরে যে নেতৃত্ব দিচ্ছে তার সঙ্গে নতুন একটা ছেলের তুলনা করা চলে না। তবে আমরা যে দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এগোচ্ছি সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। আমরা ভেবেছি দলের একজন তরুণ অধিনায়ক দরকার।” তাই, যে দলমালিক ধোনির মতো ক্রিকেটারকে সরিয়ে দিতে দু’বার ভাবেন না, তিনি যে অনায়াসে রাহুলকেও সরিয়ে দিতে পারেন তা নিয়ে দ্বিমত নেই কারওরই।
কী হয়েছিল বুধবার?
লখনউ ম্যাচের পরেই সঞ্জীব নেমে আসেন মাঠে। বাউন্ডারির ধারে দাঁড়িয়ে রাহুলকে হাত নেড়ে নেড়ে অনেক কিছু বোঝাতে থাকেন। তাঁর আচরণ দেখেই বোঝা যাচ্ছিল দলের এই হারে তিনি খুশি নন। কিছু কিছু ক্রিকেটারের দিকে হাত দেখিয়ে ইঙ্গিত করতে থাকেন সঞ্জীব। তাঁর গলার স্বরও যে বেশ উঁচু ছিল, সেটাও বোঝা গিয়েছে ভিডিয়ো দেখে।
সঞ্জীবের দাপটের সামনে রাহুল কিছু বলতেই পারেননি। তিনি চুপচাপ মাথা নীচু করে দাঁড়িয়েছিলেন। সঞ্জীবের কথা শুনছিলেন। পরে কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গারকেও বেশ কিছু কথা বলেন সঞ্জীব। সেই ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ামাত্রই সমালোচনার ঝড় বয়ে গিয়েছে।
খুশি হননি ধারাভাষ্যকারেরাও। জিয়ো সিনেমার এক বিশেষজ্ঞ বলেছেন, “রুদ্ধদ্বারেই এমন আলোচনা হওয়া উচিত ছিল। এখন স্টেডিয়ামে কত ক্যামেরা থাকে। ওরা কোনও কিছুই দেখাতে ছাড়ে না। আপনি জানেন যে রাহুলকে এখন সাংবাদিক বৈঠকে যেতে হবে এবং আরও অনেক কাজ করতে হবে। তখনই আপনি ওকে এ সব বোঝাতে বসলেন!”
আর এক বিশেষজ্ঞ স্কট স্টাইরিস বলেন, “আপনি নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছেন। এমনটা করা মোটেই উচিত হয়নি।”