কালো ব্যাজ না লাগিয়েই শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে প্রথম একদিনের ম্যাচ খেলে ফেলল শিখর ধবনের ভারত। ছবি - টুইটার
মাত্র ছয় দিন আগের কথা। যশপাল শর্মা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। এরই মধ্যে কি ১৯৮৩ সালের প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম নায়ককে ভুলে গেল বিসিসিআই? ক্ষোভ ও একরাশ হতাশা নিয়ে এমন প্রশ্ন তুলল ‘কপিলস ডেভিলস’।
শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে প্রথম একদিনের ম্যাচ শুরু হওয়ার আগে ভারতীয় দল মৌন ব্রত পালন করেনি। এমনকি টিম ইন্ডিয়ার ক্রিকেটারদের জার্সির হাতায় কালো ব্যান্ডও ছিল না। সদ্য প্রয়াত সতীর্থ তাঁর প্রাপ্য সম্মান না পাওয়ার জন্য রাগে ফুঁসছেন বিশ্বজয়ী সেই দলের ক্রিকেটাররা।
প্রয়াত যশপালকে অসম্মান করার জন্য বোর্ড প্রধান সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ছাড়াও শ্রীলঙ্কা সফরে থাকা প্রশিক্ষক রাহুল দ্রাবিড়, অধিনায়ক শিখর ধবন এমনকি মুখ্য প্রশিক্ষক রবি শাস্ত্রীর দিকেও আঙুল তুলেছেন প্রাক্তনরা।
দিলীপ বেঙ্গসরকর মুম্বই থেকে আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, “আমাদের বিশ্বকাপ জয় বর্তমান প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করেছে। ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপ জয় ভারতীয় ক্রিকেটকে বদলে দিয়েছে। প্রায় এই কথাগুলো শুনতে পাই। কিন্তু আদৌ কি বিসিসিআই, টিম ম্যানেজমেন্ট কিংবা আজকের যুগের ক্রিকেটাররা সব প্রাক্তনদের মনে রাখে? আমার ধারণা মনে রাখে না। যশপালকে মনে রাখলে রবিবারের ম্যাচে টিম ম্যানেজমেন্ট ওকে প্রাপ্য সম্মান দিত। এটা মেনে নেওয়া যাচ্ছে না।”
সেই বিশ্বকাপে সেরা উইকেটরক্ষকের পুরস্কার জেতা সৈয়দ কিরমানি এই বিষয়টির জন্য আঙুল তুলেছেন ধবনদের দলের সঙ্গে না থাকা রবি শাস্ত্রীর দিকে। ক্ষোভের সঙ্গে তাঁর প্রতিক্রিয়া, “মানলাম রবি শাস্ত্রী কোহলীদের সঙ্গে ইংল্যান্ডে রয়েছে। কিন্তু তাই বলে ওর সঙ্গে শ্রীলঙ্কা সফররত দলের কোনও যোগাযোগ নেই, এটা বিশ্বাস করতে পারছি না। এই ম্যাচে নামার আগে যে যশপালকে সম্মান জানানো উচিত, সেটা তো শাস্ত্রীর মনে করিয়ে দেওয়ার কথা। কারণ ও বিশ্বকাপ জয়ী দলে যশপালের সতীর্থ ছিল। যশের সঙ্গে অনেকটা সময় কাটিয়েছে। তাই শাস্ত্রীও সমান দোষী।”
কিরমানি আরও যোগ করেন, “সৌরভ, দ্রাবিড়ের মতো মানুষ থাকার পরেও একজন প্রাক্তন ক্রিকেটারকে সম্মান দেখানো হল না। এমন ঘটনা তো ভবিষ্যতে আমাদের সঙ্গেও ঘটতে পারে।”
বিশ্বকাপে যশপালের সঙ্গে একই ঘরে থাকতেন বলবিন্দর সিংহ সান্ধু। প্রিয় ‘রোমি’কে অসম্মান করা নিয়ে তিনিও সরব হয়েছেন। “ভারতীয় ক্রিকেটে যশের ভূমিকা এক কথায় শেষ করা যাবে না। তবে দুর্ভাগ্য হল আজকের প্রজন্মের ক্রিকেটাররা ইতিহাস ও প্রাক্তনদের নিয়ে ওয়াকিবহাল নয়। তাই ওরা আমাদের সম্মান দিতে জানে না।”
একই রকম ক্ষোভ মদন লালের কথায় ঝরে পড়ল। তিনিও পুরো ব্যাপারটা নিয়ে বিরক্ত। বললেন, “যশ শুধু বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটার ছিল না। ও জাতীয় নির্বাচক ছাড়াও বিসিসিআই-এর আম্পায়ার হিসেবে সুনামের সঙ্গে কাজ করেছে। দুর্ভাগ্য হল আজকের যুগের ক্রিকেটাররা ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাস সম্পর্কে জানে না। কিন্তু আমি অবাক হলাম সৌরভ ও রাহুলের মতো ব্যক্তিত্ব থাকার পরেও এমন ঘটনা ঘটল! দেশকে বিশ্বকাপ এনে দেওয়া প্রাক্তনকে তার প্রাপ্য সম্মান দিতে হবে। এই কথাটা বারবার বলতেও লজ্জা লাগে।”