Erling Haaland

৫ গোল করা স্ট্রাইকারকে ডাবল হ্যাটট্রিক করতে দিলেন না কোচ, ফিরল সচিন-দ্রাবিড় বিতর্ক

১৯ বছর আগের ক্রিকেট মাঠের বিতর্ক এ বার দেখা গেল ফুটবল মাঠে। সে বার বিতর্কে জড়িয়েছিলেন সচিন-দ্রাবিড়। এ বার কোচের সিদ্ধান্তে ডাবল হ্যাটট্রিক করতেই পারলেন না ফুটবলার।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৩ ১৪:৫৭
Picture of Sachin Temdulkar and Rahul Dravid

১৯ বছর আগে রাহুল দ্রাবিড়ের (ডান দিকে) এক সিদ্ধান্তে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন সচিন তেন্ডুলকর। —ফাইল চিত্র

ক্রিকেট মাঠের বিতর্ক ফিরল ফুটবল মাঠে। ১৯ বছর আগে রাহুল দ্রাবিড়ের এক সিদ্ধান্তে হয়েছিল সেই বিতর্ক। মাত্র ৬ রানের জন্য দ্বিশতরান করতে পারেননি সচিন তেন্ডুলকর। এ বার ফুটবল মাঠে কোচের সিদ্ধান্তে ডাবল হ্যাটট্রিক করতে পারলেন না ৫ গোল করা ফুটবলার।

২০০৪ সালে পাকিস্তানের মুলতানে টেস্টে ১৯৪ রানে ব্যাট করছিলেন সচিন। সেই সময় ইনিংস ডিক্লেয়ার করে দেন অধিনায়ক দ্রাবিড়। তাঁর সিদ্ধান্তে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন সচিন। তাঁর মুখ দেখে বোঝা যাচ্ছিল, দ্রাবিড়ের এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছেন না তিনি। দ্রাবিড়ের সেই সিদ্ধান্তে ব্যাপক বিতর্ক হয়েছিল। সেই ঘটনা এ বার দেখা গেল চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচে। ৬০ মিনিটের মধ্যেই ৫ গোল করে ফেলেছিলেন আর্লিং হালান্ড। বাকি ৩০ মিনিটে আরও গোল করতে পারতেন। হয়তো এমন কোনও নজির গড়তেন যা ভাঙা প্রায় অসম্ভব হত। কিন্তু কোচের সিদ্ধান্তে সেটা হল না। হালান্ডকে ৩০ মিনিট খেলতেই দিলেন না ম্যাঞ্চেস্টার সিটির কোচ পেপ গুয়ার্দিওলা। কোচের সিদ্ধান্তে কি অখুশি হালান্ড? আক্ষেপ করছেন তিনি?

Advertisement

চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নরওয়ের স্ট্রাইকারের দাপটে আরপি লিপজ়িগকে ৭-০ (দুই পর্ব মিলিয়ে ৮-১) গোলে হারিয়েছে ম্যাঞ্চেস্টার সিটি। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে ৬২ মিনিটের মাথায় হালান্ডকে তুলে নেন গুয়ার্দিওলা। তাতে খুব একটা খুশি হয়তো হননি হালান্ড। কারণ, বেঞ্চে বসার সময় তিনি কোচকে বলেন, ‘‘আমি ডাবল হ্যাটট্রিক করতে পারতাম। কিন্তু আমাকে তুলে নিল। এখন আমি আর কী করব?’’

সেই মুহূর্তে হালান্ডকে কোনও জবাব দেননি গুয়ার্দিওলা। ম্যাচ শেষে সাক্ষাৎকারের সময় মুখ খোলেন তিনি। সিটি কোচ বলেন, ‘‘৬০ মিনিটে ৫টা গোল মুখের কথা নয়। যদি ও ৯০ মিনিট খেলত তা হলে হয়তো আরও গোল করতে পারত। কিন্তু এখন এটাই যথেষ্ট।’’

Picture of Erling Haaland and Pep Guardiola

হালান্ডকে (বাঁ দিকে) ৬২ মিনিটের মাথায় তুলে নিচ্ছেন গুয়ার্দিওলা। ছবি: টুইটার

হালান্ডের গোল করার দক্ষতার প্রশংসাও শোনা গিয়েছে গুয়ার্দিওলার মুখে। তিনি বলেছেন, ‘‘হালান্ড অসাধারণ। ওর শক্তি, ওর মানসিক দক্ষতার কোনও তুলনা হয় না। সেই কারণেই এতটা ধারাবাহিক ভাবে ও খেলতে পারছে।’’

লিপজ়িগের বিরুদ্ধে ২২ মিনিটের মাথায় প্রথম গোল করেন হালান্ড। প্রতিপক্ষ ফুটবলার বেঞ্জামিন হেনরিখস বক্সের মধ্যে হ্যান্ডবল করলে পেনাল্টি পায় সিটি। পেনাল্টি থেকে গোল করতে ভুল করেননি হালান্ড। সেই শুরু। ৩০ মিনিটের মাথায় কেভিন দ্য ব্রুইনের শট বারে লেগে ফিরে এলে ফিরতি বলে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন নরওয়ের স্ট্রাইকার। প্রথমার্ধের শেষ মিনিটে নিজের হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন হালান্ড। রুবেন দিয়াসের হেড বারে লেগে ফিরলে সেই ফিরতি বলও জালে জড়িয়ে দেন হালান্ড। দ্বিতীয়ার্ধে ৫৪ ও ৫৭ মিনিটের মাথায় আরও দু’টি গোল করেন তিনি।

৫ গোল করে কিলিয়ান এমবাপের নজির ভেঙেছেন হালান্ড। সেই সঙ্গে তিনি ছুঁয়ে ফেলেছেন লিয়োনেল মেসিকেও। নরওয়ে বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন করতে না পারায় কাতারে দেখা যায়নি হালান্ডকে। কিন্তু ক্লাবের জার্সিতে নজর কাড়ছেন তিনি।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে সব থেকে অল্প বয়সে ৩০ গোলের নজির গড়েছেন হালান্ড। এত দিন এই নজির ছিল এমবাপের দখলে। ২২ বছর ৩৫২ দিন বয়সে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নিজের ৩০তম গোল করেছিলেন ফরাসি তারকা। হালান্ড নিজের ৩০তম গোল করলেন ২২ বছর ২৩৬ দিন বয়সে। এত দিন চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এক ম্যাচে ৫ গোল করার নজির ছিল মেসি ও লুইস আদ্রিয়ানোর দখলে। সেই তালিকায় এ বার নাম তুললেন হালান্ডও। এই মরসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৩৯টি গোল করে ফেললেন হালান্ড।

আরও পড়ুন
Advertisement