স্পেনের প্রধান কোচ জর্জ ভিলদা (মাঝে কালো পোশাকে) ও সহকারী কোচেদের সঙ্গে ফুটবলারেরা। ছবি: টুইটার
মহিলাদের ফুটবল বিশ্বকাপের ফাইনালের পরে চুমু-বিতর্কের জেরে ইস্তফা দিয়েছেন স্পেনের মহিলা ফুটবল দলের সহকারী কোচেরা। যদিও প্রধান কোচ জর্জ ভিলদা পদে থেকে গিয়েছেন। যাঁকে নিয়ে এত বিতর্ক, স্পেনের সেই ফুটবল প্রধান লুইস রুবিয়ালেসের ঘনিষ্ঠ ভিলদা। মহিলা ফুটবলারদের আপত্তির পরেও চাকরি থেকেছে ভিলদার। নেপথ্যে প্রধান হাত রয়েছে রুবিয়ালেসের। সেই কারণেই তিনি ইস্তফা দেননি বলে মনে করা হচ্ছে।
স্পেনের একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, পুরুষ ও মহিলা মিলিয়ে দলের ১১ জন সহকারী কোচ পদত্যাগ করেছেন। কিন্তু ভিলদা পদত্যাগ করেননি। এই বিষয়ে স্পেনের ফুটবল সংস্থা অবশ্য কোনও বিবৃতি দেয়নি।
চুমু-বিতর্কে অবশেষে পদক্ষেপ করেছে ফিফাও। ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা জানিয়ে দিয়েছে, রুবিয়ালেসকে নিলম্বিত (সাসপেন্ড) করা হয়েছে। এখন থেকে আর স্পেনের ফুটবল সংক্রান্ত কোনও বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না তিনি। আপাতত ৯০ দিনের জন্য নিলম্বিত করা হয়েছে রুবিয়ালেসকে। এই সময়ের মধ্যে রুবিয়ালেসের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত করা হবে।
ফিফা একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘‘ফিফার শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান জর্জ ইভান পালাসিয়ো ফিফার সংবিধানের ৫১ নম্বর ধারা অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে ফুটবল সংক্রান্ত কোনও বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না রুবিয়ালেস। শনিবার থেকেই তাঁকে নিলম্বিত করা হয়েছে। ৯০ দিন পরে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে। এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে রুবিয়ালেস ও স্পেন ফুটবল সংস্থাকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’
স্পেন বিশ্বকাপ জেতার পরে মহিলা ফুটবলার জেনিফার এরমোসোর ঠোঁটে রুবিয়ালেসের চুমু খাওয়া নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। রুবিয়ালেসকে সরানো না হলে স্পেনের মহিলা ফুটবল দল আর খেলতে নামবে না বলে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছে। একই কথা বলেছেন পুরুষ দলের ফুটবলার বোরহা ইগলেসিয়াস। তিনিও রুবিয়ালেসের অপসারণের আগে জাতীয় দলের হয়ে খেলতে চান না।
মহিলা ফুটবলারদের সংস্থা ফুটপ্রোর একটি বিবৃতি অনুযায়ী, এরমোসো এবং মহিলা দলের ৮০ জন ফুটবলার জাতীয় দলের হয়ে খেলতে চাইছেন না। তাঁদের দাবি, রুবিয়ালেসকে সরাতে হবে। আগের দিনই রুবিয়ালেস বলেছিলেন, এরমোসোর ইচ্ছেতেই চুমু খেয়েছিলেন। সেই যুক্তি খণ্ডন করে এরমোসো বলেছেন, “আমি কখনওই চুমু খাওয়ার ব্যাপারে রাজি হইনি। আমার কথার ভুল ব্যাখ্যা করা হলে ছেড়ে কথা বলব না। ওরা নতুন নতুন কথা বলছে যা আমি বলিইনি।”
ফুটপ্রো জানিয়েছে, স্পেনের হয়ে বিশ্বকাপ জেতা ২৩ জন ফুটবলারই তাদের সঙ্গে রয়েছেন, যাঁরা জাতীয় দলের হয়ে আর খেলতে চান না। তাদের বিবৃতিতে লেখা হয়েছে, “স্পেনের ফুটবলে পরিকাঠামোগত পরিবর্তন চাই আমরা, যাতে আগামী দিনে জাতীয় দল আরও এগিয়ে যেতে পারে এবং পরবর্তী প্রজন্ম আমাদের সাফল্যের ফায়দা তুলতে পারে। কিন্তু এ ধরনের অপ্রত্যাশিত ঘটনা আমাদের লক্ষ্য থেকে আরও সরিয়ে দিচ্ছে এবং গোটা সংস্থার নাম খারাপ করছে। বিশ্বকাপের পদক বিতরণী অনুষ্ঠানে যা হয়েছে তা দেখে আমরা জানাতে চাই, যদি নেতৃত্বে বদল না হয় তা হলে এই বিবৃতিতে সই করা সমস্ত ফুটবলার জাতীয় দলে খেলবে না।”