ফুরফুরে মেজাজে দিয়ামানতাকোস ও তালাল। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
অনুশীলন শেষের বাঁশি বাজিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধেয় ইস্টবেঙ্গল কোচ অস্কার ব্রুসো ফিরে গিয়েছেন যুবভারতীর ড্রেসিংরুমে। কিন্তু ফুটবলারদের মাঠ ছাড়ার কোনও
লক্ষণ নেই।
গোলরক্ষক দেবজিৎ মজুমদারকে ডেকে নিয়ে একের পর এক শট মেরে গেলেন দিমিত্রিয়স দিয়ামানতাকোস, মাধি তালাল, ক্লেটন সিলভা-রা। তার পরে শুরু হল লম্বা পাস ধরে আক্রমণ শানানোর মহড়া। ঠিক পাশের মাঠেই মহমেডান স্পোর্টিংয়ের কোচ আন্দ্রে চের্নিশভ অনুশীলনে জোর দিয়েছিলেন রক্ষণ শক্তিশালী করার উপরে, সেই খবর কি পেয়ে গিয়েছিলেন দিয়ামানতাকোস-রা? তাই হয়তো বাড়তি অনুশীলন করে প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারদের বার্তা দিয়ে রাখলেন, ‘‘তোমাদের রক্ষণ যত শক্তিশালীই হোক, শনিবারের ডার্বিতে আমাদের আটকাতে পারবে না।’’
অস্কার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলারদের মানসিকতায় পরিবর্তন দেখা যায়। ফিরতে শুরু করে আত্মবিশ্বাস। এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের শেষ আটে যোগ্যতা অর্জনের পর থেকে রীতিমতো ফুটছেন তাঁরা। মালয়েশিয়ার বিরুদ্ধে ফিফা ফ্রেন্ডলির জন্য ভারতীয় দলে ডাক না পাওয়ায় মহেশ সিংহ ও নন্দ কুমার হতাশায় মুষড়ে পড়ার বদলে আরও মরিয়া হয়ে উঠেছেন নিজেদের প্রমাণ করার জন্য। বলছেন, ‘‘এত দিন আমরা যা খেলেছি, জাতীয় দলে সুযোগ না পাওয়াই স্বাভাবিক। যে কোনও মূল্যে আইএসএলে ঘুরে দাঁড়াতে হবে।’’
আইএসএলে এই মরসুমে টানা ছ’টি ম্যাচ হেরে সব দলের শেষে অর্থাৎ ১৩তম স্থানে রয়েছে ইস্টবেঙ্গল। শনিবার মহমেডানের বিরুদ্ধে জিততে না পারলে এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের শেষ আটে যোগ্যতা অর্জনের সাফল্য যে মূল্যহীন হয়ে যাবে, ভাল করেই জানেন অস্কার। তাই বাড়তি সতর্ক তিনি। হেক্টর ইউসতে চোট সারাতে স্পেনে ফিরে গিয়েছেন। রক্ষণে আনোয়ার আলির সঙ্গে হিজাজ়ি মাহের-কে রাখলেন অনুশীলন ম্যাচে। রাইটব্যাক নিশু কুমারকে খেলিয়েও পরীক্ষা করে নিলেন অস্কার।
এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগ খেলতে যাওয়ার আগে ইস্টবেঙ্গল শিবিরে যে রকম পরিস্থিতি ছিল, মহমেডানের এখন সেই অবস্থা। ফুটবলারদের উজ্জীবিত করতে আজ, শুক্রবার আসবেন ১৯৮৩ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন ভারতীয় দলের সদস্য সন্দীপ পাটিল। আইএসএলে হারের হ্যাটট্রিকের ধাক্কায় প্রবল চাপে রয়েছেন মহমেডান কোচও। উদ্বেগ আরও বাড়ছে রক্ষণের অন্যতম ভরসা জোসেফ আজাই চোট পেয়ে ছিটকে যাওয়ায়। গোলরক্ষক পদম ছেত্রীর উপর থেকেও আস্থা হারিয়েছেন মহমেডান কোচ। তাঁর জায়গায় খেলার সম্ভাবনা উজ্জ্বল ভাস্কর রায়ের।