বাইসাইকেল কিকে গোল রিচার্লিসনের। ছবি: রয়টার্স
ভিনিসিয়াস জুনিয়রের ক্রসটা যখন বক্সের মধ্যে ওঁত পেতে থাকা রিচার্লিসন ধরলেন, তখন তাঁকে ঘিরে রয়েছেন সার্বিয়ার তিন জন ফুটবলার। কিন্তু ব্রাজিলের ফুটবলার বলটা মাটিতে পড়তেই দিলেন না। প্রথম ছোঁয়ায় বলটা নিজের সামনে একটু তুলে নিলেন রিচার্লিসন। এর পরেই জাদু দেখালেন। বাইসাইকেল কিকে বলটা জালে জড়িয়ে দিলেন।
বৃহস্পতিবার ব্রাজিলের প্রথমার্ধের খেলা দেখে যাঁরা ভেবে নিয়েছিলেন যে, আরও একটা নির্বিষ ম্যাচ হতে চলেছে, বন্ধ করে দিয়েছিলেন টেলিভিশন, তাঁরা দেখতেই পেলেন না দ্বিতীয়ার্ধে রিচার্লিসনের গোলটি। ওই একটা গোল ম্যাচের সব হিসাব পাল্টে দিল। ৬২ মিনিটে ম্যাচের প্রথম গোলটিও করেছিলেন রিচার্লিসন। কিন্তু তাঁর দ্বিতীয় গোল বুঝিয়ে দিল ব্রাজিলের ফুটবল দেখতে এখনও কেন রাতের পর রাত জেগে থাকেন ফুটবলপ্রেমীরা।
বৃহস্পতিবার ছিল ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো এবং নেমারকে দেখার দিন। একই দিনে খেলতে নেমেছিলেন দুই তারকা ফুটবলার। রোনাল্ডো পেনাল্টি থেকে গোল করেন। তাঁর দল জয়ও তুলে নেয়। কিন্তু সে ভাবে নজর কাড়তে আর পারলেন কই। মন ভরেনি সমর্থকদের। সহজ গোলের সুযোগও নষ্ট করেন রোনাল্ডো। নেমার গোল পাননি। কিন্তু তাঁর খেলা নজর কাড়ে। ব্রাজিল দলকে চালনা করছিলেন তিনিই। প্লে অ্যাক্টিংয়ের চিহ্ন ছিল না কোথাও। দু’টি গোলের ক্ষেত্রে সরাসরি না হলেও ভূমিকা ছিল নেমারের। কিন্তু এই সব কিছুর পরেও দুই তারকাকে ছাপিয়ে গেলেন রিচার্লিসন।
I think this is the best GOAL So far since the start of the #FIFAWorldCup #QatarWorldCup2022
— Goolam Terezo (@GoolamTerezo) November 24, 2022
.
.
WHAT A GOAL | Richarlison | Neymar | Ronaldo | #FIFAWorldCup | #QatarWorldCup2022 | Brazil | Martinelli | Vinicius | No VAR | Antony pic.twitter.com/Yi1QVwZepB
বিশ্বকাপ শুরু করলেন দু’টি গোল দিয়ে। তার মধ্যে একটি বাইসাইকেল কিকে। রিচার্লিসন মুগ্ধ করে দিলেন ফুটবলপ্রেমীদের। একটা গোল বুঝিয়ে দিল এই ব্রাজিল কতটা ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার ক্ষমতা রাখে। নেমার, রিচার্লিসন, ভিনিসিয়াস এবং রাফিনহাকে রেখে তৈরি তিতের আক্রমণভাগ যে পায়ের জঙ্গলের মধ্যে থেকেও ফাঁকা জমি বার করে নিতে পারে তা দেখিয়ে দিল একটি গোল।
ব্রাজিল আরও গোল পেতে পারত। কিন্তু সুযোগগুলি কাজে লাগাতেই পারেননি রাফিনহারা। দ্বিতীয়ার্ধে শুরুতেই একটি সুযোগ নষ্ট করেন রাফিনহা। গোলকিপারকে একা পেয়েও গোল করতে ব্যর্থ হন। তার পরেই নেমারকে ফাউল করেন বিপক্ষের ফুটবলার। বক্সের বাইরে থেকে নেমারের ফ্রিকিক ওয়ালে লেগে বেরিয়ে যায়। ৫৩ মিনিটের মাথায় এগিয়ে যেতে পারত ব্রাজিল। ডান দিকে বল পান নেমার। অসাধারণ ট্যাকল করে বল বিপন্মুক্ত করেন সার্বিয়ার পাভলোভিচ। বক্সের মধ্যে নেমারকে ট্যাকল করেন। তা না হলে ব্রাজিলের প্রথম গোল তখনই হয়ে যেত। ৬০ মিনিটের মাথায় দূর থেকে বাঁ পায়ে অসাধারণ শট করেন আলেক্স সান্দ্রো। পোস্ট লেগে প্রতিহত হয় বল।
এই সব ব্যর্থতা ভুলিয়ে দিলেন রিচার্লিসন। একটা গোল মনে রেখে দিলেন ফুটবলপ্রেমীরা। এ বারের বিশ্বকাপে এখনও পর্যন্ত হওয়া গোলগুলির মধ্যে এটিকে সেরা বলেও মেনে নিচ্ছেন অনেকে।