ATK Mohun Bagan

Durand Cup 2022: আত্মঘাতী গোলে জিতল এটিকে মোহনবাগান, টানা ছয় ডার্বি জয় সবুজ-মেরুনের

সুমিত পাসির আত্মঘাতী গোলই ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দিল। আড়াই বছর পর যুবভারতীতে ডার্বির প্রত্যাবর্তনে জয়ী সেই এটিকে মোহনবাগানই।

Advertisement
অভীক রায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০২২ ১৯:৫৪
ডার্বি জিতল এটিকে মোহনবাগান

ডার্বি জিতল এটিকে মোহনবাগান ফাইল ছবি

গোটা ম্যাচে ভাল খেলেও হেরে গেল ইমামি ইস্টবেঙ্গল। প্রথমার্ধের শেষ দিকে সুমিত পাসির আত্মঘাতী গোলে হারল তারা। এই নিয়ে টানা ছ’টি ডার্বি জয় হয়ে গেল এটিকে মোহনবাগানের। যুবভারতীতে আড়াই বছর আগে শেষ ডার্বিতে জিতেছিল সবুজ-মেরুন। শহরে ডার্বির প্রত্যাবর্তনেও শেষ হাসি তাদেরই। অসংখ্য সুযোগ নষ্ট এবং অতিরিক্ত রক্ষণাত্মক মনোভাবে খেসারত দিতে হল ইমামি ইস্টবেঙ্গলকে। তবে ম্যাচ দেখে সমর্থকরা অন্তত এটা ভেবে আশান্বিত হতে পারেন যে, দল আগের দু’বারের মতো খারাপ হয়নি।

এই ম্যাচে লড়াই ছিল মূলত সবুজ-মেরুন আক্রমণের বিরুদ্ধে লাল-হলুদ রক্ষণের। তারকা-সমৃদ্ধ এটিকে মোহনবাগানকে আদৌ ইমামি ইস্টবেঙ্গল আটকাতে পারে কি না, পরীক্ষা ছিল তারই। এই ম্যাচ দেখে বলা যায়, সেই কাজে সফল কোচ স্টিভন কনস্ট্যান্টাইন। ভারতের কোচ থাকার সময়ে রক্ষণে জোর দিয়ে প্রতি আক্রমণকে অস্ত্র করতেন তিনি। লাল-হলুদের কোচ হয়েও তাঁর মনোভাবে বদল নেই। দল গঠনে দেরি হলেও গত বারের থেকে ভাল ফুটবলার রয়েছে দলে। এই ফলাফলের পর ডুরান্ড কাপ থেকে বিদায় নিতে হলেও বাকি মরসুমের ফল ভাল হতেই পারে।

Advertisement

ইমামি ইস্টবেঙ্গল কোচ স্টিভন কনস্ট্যান্টাইনের দল গঠনেই চমক ছিল। প্রথমার্ধে চার বিদেশিকে দলে রেখেছিলেন তিনি, যা আগে থেকে কেউ ভাবতে পারেননি। কারালাম্বোস কিরিয়াকু, ইভান গঞ্জালেজ, আলেক্স লিমা এবং এলিয়ান্দ্রো প্রথম একাদশে ছিলেন। অপর দিকে, এটিকে মোহনবাগানের প্রথম একাদশে চার বিদেশি ফ্লোরেন্তিন পোগবা, জনি কাউকো, কার্ল ম্যাকহিউ এবং হুগো বুমোস। প্রথম থেকেই ম্যাচে দাপট দেখাতে শুরু করে এটিকে মোহনবাগান। শুরু থেকেই আক্রমণের রাস্তায় হাঁটে তারা। ইমামি ইস্টবেঙ্গল স্বাভাবিক ভাবেই বেশি জোর দিয়েছিল রক্ষণে। মন্ত্র ছিল একটাই, গোল না হোক, কোনও মতে গোল খাওয়া চলবে না।

সেই কাজে অনেকটাই সফল হয় তারা। এটিকে মোহনবাগান দলে আক্রমণ করার মতো ফুটবলারের অভাব নেই। কাউকো, লিস্টন কোলাসো, বুমোস, আশিক কুরুনিয়ান কে কখন কোন দিক থেকে আঘাত হানবেন, তা আগে বোঝা মুশকিল। তবু শৌভিক চক্রবর্তী, জেরি, কিরিয়াকু জান লড়িয়ে দিচ্ছিলেন রক্ষণে। ফলে সে ভাবে গোলের মুখই খুলতে পারছিল না বাগান। ১৬ মিনিটে আশিক দু’-তিন জন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বাঁ পায়ে শট নিয়েছিলেন। তবে তা গোলের অনেকটাই বাইরে দিয়ে চলে যায়।

৩৩ মিনিটে প্রথম সুযোগ পায় ইমামি ইস্টবেঙ্গল। দূর থেকে শট নিয়েছিলেন ইভান। অল্পের জন্য গোলের পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায়। প্রথম দিকে এক টানা রক্ষণ করতে থাকার পর ধীরে ধীরে প্রতি-আক্রমণ করার চেষ্টা করছিল ইমামি ইস্টবেঙ্গল। তাদের আত্মবিশ্বাস ভেঙে দেন সুমিত। নিজে গোলের সুযোগ তো কাজে লাগাতে পারেননি। উল্টে আত্মঘাতী গোল করে দলকে আরও বিপদে ফেলে দেন। বিরতির কিছু ক্ষণ লিস্টন কর্নার নেন। বলের গতিপথ বুঝতে পারেননি কমলজিৎ। তা সোজা গিয়ে পড়ে সুমিতের কাছে। ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজের গোলেই বল ঢুকিয়ে দেন তিনি।

দলে আক্রমণ বাড়াতে দ্বিতীয়ার্ধে তিন বদল করেন কনস্ট্যান্টাইন। আঙ্গুসানা, এলিয়ান্দ্রো এবং জেরির বদলে মাঠে আসেন হিমাংশু জাংরা, অনিকেত যাদব এবং ক্লেটন সিলভা। তবে এটিকে মোহনবাগান দ্বিতীয়ার্ধেও আক্রমণ বজায় রাখে। শুরুতেই একটি দুর্দান্ত সুযোগ পায় তারা। লিস্টনের দুরন্ত পাস পান আশিক। সামনে শুধু কমলজিৎ ছিল। তবে লাল-হলুদ গোলকিপার অনবদ্য দক্ষতায় বল বিপন্মুক্ত করেন। এর কিছু ক্ষণ পরেই কর্নার থেকে বল উড়ে আসে অনিকেতের কাছে। তাঁর জোরালো অল্পের জন্য পোস্টের বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যায়।

দ্বিতীয়ার্ধে দু’দলই বেশ কিছু সুযোগ পায়। তবে গোল আসেনি। লিস্টন, আশিক বেশ কয়েক বার গোলের কাছাকাছি চলে যান। কাজের কাজ অবশ্য করতে পারেননি। ইমামি ইস্টবেঙ্গলের খেলাতে একটা জিনিস আবার পরিষ্কার হল, গোল করার জন্য এলিয়ান্দ্রোর উপরেই ভরসা করতে হবে। তৈরি থাকতে হবে হিমাংশুকেও। না হলে গোল করার লোকের অভাব ভোগাতে পারে।

আরও পড়ুন
Advertisement