প্রত্যয়ী: নিজেকে প্রমাণ করতে চান যশস্বী। —ফাইল চিত্র।
ভারতীয় দল ঘোষণার দিন তিনি ছিলেন বাড়িতেই। জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমি থেকে ফিরে বিশ্রাম করছিলেন। দুপুরে খাওয়ার দাওয়ার পরে বিছানায় শুয়ে ফোন ঘাঁটছিলেন। হঠাৎ তাঁর কাছে একটি ফোন আসে। তুলে শোনেন, ‘‘যশস্বী, অভিনন্দন। ভারতের টেস্ট ও ওয়ান ডে দলে স্বাগত।’’ অবাক হয়ে পাঁচ মিনিট বিছানায় বসে ছিলেন যশস্বী জয়সওয়াল। তারপর বাবাকে গিয়ে প্রথম খবরটা দেন। ছোটবেলা থেকে যাবতীয় পরিশ্রমের ফল পেতে চলেছেন তরুণ বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান। বিকেলের দিকে আনন্দবাজারের সঙ্গে ফোনে সাক্ষাৎকার দিতেও রাজি হয়ে যান তিনি। উত্তরপ্রদেশ থেকে ১০ বছর বয়সে মুম্বই চলে আসা। সেখান থেকে ধীরে ধীরে আইপিএল, শেষে ভারতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার কাহিনি তুলে ধরলেন তিনি।
প্রশ্ন: ভারতীয় টেস্ট এবং ওয়ান ডে দলে সুযোগ পাওয়ার অভিনন্দন জানাই আপনাকে। খবরটা পেয়ে কাকে প্রথম জানালেন?
যশস্বী জয়সওয়াল: এনসিএ থেকে বাড়ি ফিরেছি। খাওয়া দাওয়া করে বিশ্রাম করছিলাম। মোবাইলে ঘাঁটতে ঘাঁটতে হঠাৎ একটা ফোন আসে। সেখানেই জানতে পারি, ভারতীয় দলে সুযোগ পেয়েছি। অবাক হয়ে কিছুক্ষণ বসেছিলাম। তারপর দৌড়ে গিয়ে বাবাকে খবরটা দিই। আমরা দু’জনেই আবেগ ধরে রাখতে পারিনি। এই দিনটার জন্যই যাবতীয় পরিশ্রম করেছি। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে দলের সঙ্গে ইংল্যান্ড গেলেও স্ট্যান্ডবাই ছিলাম। এ বার দলের সদস্যদের মধ্যে আমার নামটাও আছে। দলের সঙ্গে থাকা আর দলে সুযোগ পাওয়ার মধ্যে কিন্তু বিরাট পার্থক্য। আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়।
প্রশ্ন: চেতেশ্বর পুজারার জায়গায় আপনার ও ঋতুরাজের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। যদি তিন নম্বরে সুযোগ পান, মানিয়ে নিতে সমস্যা হবে না?
যশস্বী: একেবারেই সমস্যা হবে না। ওপেনিংয়ের সঙ্গে তিন নম্বরে ব্যাট করার পার্থক্য একটাই, বোলার উইকেট পেয়ে আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে। শুরুর দিকে চাপটা সামলে নিলেই আর কোনও সমস্যা হয় না। এমনিতে ওপেনিংয়ে নতুন বল সামলাতেই হয়। তিন নম্বরে যারা ব্যাট করে তাদের কাজটাও একই। পার্থক্য খুব একটা নেই। মুম্বইয়ের হয়ে শুরুর দিকে তিন নম্বরেও ব্যাট করেছি। গত মরসুমে যদিও ওপেন করেছি। তবে মানিয়ে নিতে সমস্যা হবে না।
প্রশ্ন: বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মাদের সঙ্গে অনুশীলন করেছেন। তাঁদের থেকে বিশেষ কোনও পরামর্শ পেয়েছেন?
যশস্বী: বিরাট ভাই গুরুত্বপূর্ণ একটা কথা বলেছিল। সব সময় বর্তমানে থাকার পরামর্শ দিয়েছিল। আগে কী করেছি, সামনে কী আসতে চলেছে, সেই নিয়ে যেন একদম না ভাবি। বর্তমান পরিস্থিতির কথা চিন্তা করেই অনুশীলন করি।
প্রশ্ন: ছোটবেলা থেকে সংগ্রাম করে বড় হয়েছেন। আজ কি সেই আজ়াদ ময়দানের তাঁবুতে দিন কাটানোর কথা মনে পড়ে?
যশস্বী: সেই সংগ্রামই আমাকে আগামীর রাস্তা দেখিয়ে দিয়েছে। আমার কোচ জ্বালা সিংহ যদি সেখান থেকে আমাকে তুলে এনে প্রশিক্ষণ না দিতেন, আজও হয়তো অন্ধকারেই পড়ে থাকতাম। জ্বালা স্যরই আমাকে পুনর্জন্ম দিয়েছেন। ভারতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার কৃতিত্ব যতটা আমার, ঠিক ততটাই তাঁর। দেশের জার্সিতে যদি ভাল কিছু করে দেখাতে পারি, তা হলে সেটাই হবে তাঁর প্রতিআমার গুরুদক্ষিণা।