IPL 2025 Auction

রেকর্ড ২৭ কোটিতে পন্থকে কেনা সেরা সাফল্য, দিল্লিকে টেক্কা দিয়ে দল গোছাল গোয়েন্‌কার লখনউ

কলকাতায় খেলতে এলে মোহনবাগানের মতো সবুজ-মেরুন জার্সি পরে মাঠে লখনউয়ের ক্রিকেটারেরা। তাই আইপিএলের এই দল নিয়েও আগ্রহ রয়েছে বাংলার ক্রিকেটপ্রেমীদের।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ২৩:১১
picture of Sanjiv Goenka

আইপিএল নিলামে সঞ্জীব গোয়েন্‌কা। ছবি: আইপিএল।

কলকাতা নাইট রাইডার্সের পাশাপাশি বাংলার ক্রিকেটপ্রেমীদের আগ্রহ রয়েছে লখনউ সুপার জায়ান্টসের দল নিয়ে। কলকাতার শিল্পপতি সঞ্জীব গোয়েন্‌কা এই দলের কর্ণধার। কলকাতায় খেলতে এলে মোহনবাগানের মতো সবুজ-মেরুন জার্সি পরে মাঠে নামেন লখনউয়ের ক্রিকেটারেরা। কারণ দু’দলেরই মূল বিনিয়োগকারী গোয়েন‌্‌কা।

Advertisement

এ বারের আইপিএল নিলামে যে কজন ক্রিকেটার আকর্ষণের কেন্দ্রে ছিলেন তাঁদের অন্যতম ঋষভ পন্থ। গত তিন বছরের অধিনায়ক লোকেশ রাহুল লখনউয়ে থাকতে রাজি না হওয়ায় পন্থের দিকে নজর ছিল তাঁদের। শুধু তাঁদের নয়, আইপিএলের একাধিক দল পন্থকে দলে নিতে আগ্রহী ছিল। নিলামে একাধিক দলের সঙ্গে লড়াইয়ের পর ২৭ কোটি টাকা খরচ করে পন্থকে দলে নিয়েছে লখনউ। পন্থ প্রতিযোগিতার ইতিহাসে সবচেয়ে দামি ক্রিকেটার হলেও এ বারের নিলামে নিঃসন্দেহে লখনউয়ের সেরা সাফল্য পন্থকে তুলে নেওয়া। দিল্লি ক্যাপিটালস আরটিএম ব্যবহার করেও পন্থকে রাখতে পারেনি। পন্থকে পাওয়ায় লখনউ একই সঙ্গে আগ্রাসী ব্যাটার, উইকেটরক্ষক এবং অধিনায়ককে পেয়ে গেল। নিকোলাস পুরানকেও ধরে রেখেছে লখনউ। প্রয়োজনে নেতৃত্ব দিতে পারেন তিনিও।

দলে ভারসাম্য রাখার চেষ্টা করেছেন লখনউ কর্তৃপক্ষ। গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে অলরাউন্ডার নেওয়ার উপর। মিচেল মার্শ, এডেন মার্করাম, সামার জোসেফ, শাহবাজ় আহমেদের মতো ক্রিকেটারদের কিনেছে লখনউ। সব মিলিয়ে ২৪ জন ক্রিকেটারকে নিয়ে দল তৈরি করেছেন সঞ্জীব। দল গঠনে সাহায্য করেছেন মেন্টর জাহির খান।

টপ অর্ডার

অস্ট্রেলিয়ার মিচেল মার্শ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ওপেন করেন। আন্তর্জাতিক পর্যায় যথেষ্ট সফল মার্শ। আগ্রাসী ব্যাটিং করতে পারেন। আগামী আইপিএলে তিনি লখনউয়ের হয়ে ওপেন করতে পারেন। সঙ্গে বাড়তি পাওনা মার্শের মিডিয়াম পেস। ওপেনিংয়ে মার্শের সঙ্গী হতে পারেন পন্থ। ওপেনার হিসাবে লখনউ দলে রয়েছেন অরুণ জুয়েল, আর্শিন কুলকার্নি এবং যুবরাজ চৌধুরিও। তবে শুরুতে মার্শ-পন্থ জুটি জমে গেলে অর্ধেক ম্যাচ সেখানেই শেষ হয়ে যেতে পারে। লখনউয়ের হয়ে তিন নম্বরে নামতে পারেন মার্করাম। দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক আগ্রাসী ব্যাটার হিসাবে পরিচিত। বল হাতেও মন্দ নন। আবার প্রয়োজনে দলকে নেতৃত্বও দিতে পারবেন। এ ছাড়াও দলে রয়েছেন ম্যাথু ব্রিজ়কে। তিনিও তিন নম্বরে ব্যাট করতে পারেন।

মার্শের সঙ্গে পন্থকে ওপেনার হিসাবে রাখা হয়েছে। কিন্তু তিনি কোনও ধরনের ক্রিকেটেই নিয়মিত ওপেনার নন। দলে তিন জন ভারতীয় ওপেনার রয়েছে। কিন্তু সাফল্যের নিরিখে তাঁদের পক্ষে প্রথম একাদশে জায়গা পাওয়া কঠিন। দলে মার্করাম রয়েছেন। তিনিও ওপেন করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে পন্থ আসবেন তিন নম্বরে।

মিডল অর্ডার

লখনউয়ের ব্যাটিং অর্ডারে চার নম্বরে থাকবেন পুরান। ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের ক্রিকেটার ফর্মে থাকলে প্রতিপক্ষ দলের রাতের ঘুম কেড়ে নিতে পারেন। তাঁর ব্যাটে বল ঠিক মতো না লাগলেও মাঠের বাইরে উড়ে যেতে পারে। গত তিন মরসুমও পুরানের ব্যাট ভরসা দিয়েছে লখনউকে। দলও এ বার তাঁর উপর ভরসা রেখেছে। রয়েছেন হিম্মত সিংহ, দিগবেশ সিংহের মতো তরুণ ব্যাটার।

ফিনিশার

লখনউয়ের ব্যাটিং অর্ডারের পাঁচ নম্বরে আর এক বিদেশিকে দেখা যেতে পারে। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার ডেভিড মিলার। বড় শট নিতে দক্ষ মিলার। লখনউয়ের মিডল অর্ডারকে ভরসা দিতে পারেন। পরের দিকে নেমে দ্রুত রান তুলতে পারেন। ফিনিশার হিসাবে তাঁর সঙ্গে থাকবেন আয়ুষ বাদোনি।

ব্যাটিং অর্ডারের ছ’নম্বরে থাকতে পারেন বাদোনি। দেশের অন্যতম সেরা ফিনিশারকে ধরে রেখেছেন লখনউ কর্তৃপক্ষ। তাঁর উপর এ বারও আস্থা রাখবে লখনউ। অলরাউন্ডার আব্দুল সামাদকেও ফিনিশার হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে।

স্পিনার

লখনউয়ে স্পিন বিভাগকেও অবহেলা করা যাবে না। রবি বিশ্নোইয়ের মতো ক্রিকেটারকে ধরে রেখেছে লখনউ। এ ছাড়াও দলে রয়েছেন শাহবাজ়, সামাদ, মণিমরণ সিদ্ধার্থ। ব্যাটিং অর্ডারের সাত নম্বরে শাহবাজ়কে খেলাতেই পারে লখনউ। বাংলার ক্রিকেটারের ব্যাটের হাতও খারাপ নয়। বিশ্নোইও খেলতে পারেন প্রথম দলের হয়ে। তিনি অবশ্য ব্যাটিং অর্ডারের নিচের দিকেই থাকবেন।

পেসার

দুর্বল নয় লখনউয়ের পেস আক্রমণও। পন্থের পর সবচেয়ে বেশি ৯ কোটি ৭৫ লাখ টাকা দিয়ে লখনউ কিনেছে আবেশ খানকে। তৃতীয় সর্বোচ্চ ৮ কোটি টাকায় তারা দলে নিয়েছে বাংলার আকাশ দীপকে। ভারতীয় দলের দুই জোরে বোলারের উপর অনায়াসে ভরসা রাখতে পারেন লখনউ কর্তৃপক্ষ। আগেই ধরে রেখেছে মায়াঙ্ক যাদব, মহসিন খানকে। সঙ্গে রয়েছেন মার্শ, শামার জোসেফ, প্রিন্স যাদবও। রয়েছেন রাজবর্ধন হাঙ্গারেকরের মতো জোরে বোলার। যাঁর ব্যাটের হাতও বেশ ভাল।

লখনউয়ের সম্ভাব্য প্রথম একাদশ: মিচেল মার্শ (বিদেশি), ঋষভ পন্থ, এডেন মার্করাম (বিদেশি), নিকোলাস পুরান (বিদেশি), ডেভিড মিলার (বিদেশি), আয়ুষ বাদোনি, আব্দুল সামাদ, শাহবাজ় আহমেদ, আকাশ দীপ, রবি বিশ্নোই, মায়াঙ্ক যাদব।

আরও পড়ুন
Advertisement