ওয়াসিম আক্রম হঠাৎই জানালেন, একটা সময় নিয়মিত মাদকসেবন করতেন তিনি। আকৃষ্ট হয়ে গিয়েছিলেন কোকেনের প্রতি। ফাইল ছবি
ক্রিকেটজীবনে তিনি ভদ্র বলেই পরিচিত ছিলেন। কখনও বড় কোনও বিতর্কে জড়াননি। সেই ওয়াসিম আক্রম হঠাৎই জানালেন, একটা সময় নিয়মিত মাদকসেবন করতেন তিনি। আকৃষ্ট হয়ে গিয়েছিলেন কোকেনের প্রতি। শেষ পর্যন্ত প্রয়াত স্ত্রী হুমার সাহায্যে তিনি মাদকসেবন করা ছেড়ে দেন। আক্রমের মুখে এ কথা শুনে স্তম্ভিত ক্রিকেটবিশ্ব। তার মতো কোনও ক্রিকেটার যে এ রকম কাজে জড়িয়ে পড়তে পারেন, এটা কেউ বিশ্বাসই করতে পারছেন না।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর মাদকের প্রতি আকর্ষণ শুরু হয় আক্রমের। প্রায় ছ’বছর ধরে নিয়মিত মাদকসেবন করেছেন। স্ত্রীর মৃত্যুর পর ছেড়ে দেন। আক্রম বলেছেন, “ক্রিকেট ছাড়ার পর কোনও কিছুতে নিজেকে ডুবিয়ে দিতে চেয়েছিলাম। দক্ষিণ এশিয়ার মানুষরা কোনও নেশা এবং দুর্নীতিতে ডুবে থাকতে ভালবাসে। এক রাতে তারা দশটা পার্টিতে যায়। আমারও সেই কাজ করতে গিয়ে অবস্থা খারাপ হয়ে গিয়েছিল।”
আক্রম আরও বলেছেন, “সবচেয়ে খারাপ বল, কোকেনের উপর এক সময় নির্ভরশীল হয়ে পড়ি। ইংল্যান্ডে একটা পার্টিতে গিয়ে আমার প্রথম কোকেনের সঙ্গে পরিচয় হয়। ধীরে ধীরে অভ্যাস বেড়ে যেতে থাকে। একটা সময় মনে হত, শারীরিক কাজকর্ম করতে হল কোকেন নিতেই হবে।”
নিয়মিত কোকেন নিতে গিয়েই এক সময় স্ত্রী হুমার হাতে ধরা পড়ে যান আক্রম। বলেছেন, “হুমা এক দিন আমাকে ধরে ফেলে। আমার ওয়ালেটে কোকেনের প্যাকেট থেকে বলে, ‘তোমার সাহায্য দরকার।’ আমি রাজি হয়ে যায়। কারণ, পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাচ্ছিল। নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছিলাম না। একটা থেকে দুটো, দুটো থেকে চারটে, আমার কোকেন নেওয়ার পরিমাণ বেড়েই যাচ্ছিল। রাতে ঘুমোতে পারতাম না। খেতে পারতাম। ডায়াবিটিস বেড়ে যাচ্ছিল। সেটা খেয়ালই ছিল না। যে কারণে মাথাব্যথা এবং মুড পরিবর্তন হতে থাকে।”
হুমার সঙ্গে এক সময় ডিভোর্সের কথাও ভেবেছিলেন আক্রম। বলেছেন, “আমার গর্ব ভুলুণ্ঠিত হচ্ছিল। ২০০৯-এর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সময় হুমার থেকে দূরে চলে গিয়েছিলাম। আমার কোকেন নেওয়া শুরু করেছিলাম। আমার প্রতি হুমার শেষ যত্ন ছিল মাদক থেকে আমাকে বের করে আনা। এক সময় সেটা করতে পেরেছিলাম। তার পর থেকে আর ছুঁয়েও দেখিনি।”