পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের সদর দফতর। —ফাইল চিত্র।
আমেরিকার কুখ্যাত যৌন অপরাধী জেফ্রি এপস্টিনের প্রকাশ্যে আসা নথি বিতর্ক তৈরি করল পাকিস্তানের রাজনীতি এবং ক্রিকেটে। বিতর্কের কেন্দ্রে পাকিস্তানের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক তথা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। নাম জড়িয়েছে আর এক প্রাক্তন অধিনায়ক ওয়াসিম আক্রমেরও। অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন ক্ষুব্ধ আক্রম। জেলবন্দি ইমরানের বক্তব্য জানা যায়নি।
বিশ্বের তাবড় ব্যক্তিত্বদের চরিত্রের কালো দিক সামনে আসতে শুরু করেছে এপস্টিনের নথি থেকে। কুখ্যাত যৌন অপরাধীর নথিতে পাওয়া গিয়েছে বিল ক্লিন্টন, ডোনাল্ড ট্রাম্পদের নাম। রয়েছে মাইকেল জ্যাকসন, প্রিন্স অ্যান্ড্রু, স্টিফেন্স হকিংয়ের নামও। এপস্টিনের নথিতে রয়েছে ইমরানের নামও। প্রকাশ্যে এসেছে এপস্টিন আয়োজিত প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য পার্টিতে (যেখানে অবাধ যৌনতার সুযোগ থাকে) ইমরানের ছবি। পার্টির ছবিতে পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে দেখা যাচ্ছে এপস্টিনের প্রাক্তন বান্ধবী এবং ঘনিষ্ঠ ঘিসলাইন ম্যাক্সওয়েলের সঙ্গে। তিনি এপস্টিনের যৌন অপরাধের সঙ্গী ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধেও একাধিক মামলা হয়েছিল।
প্রাপ্তবয়স্কদের পার্টিতে ইমরানের ছবি প্রকাশ্যে এনেছেন আলি শাহবাজ় চৌধুরি নামে এক ব্যক্তি। তাঁর অভিযোগ, ১৯৯৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের দু’টি দ্বীপ কিনেছিলেন এপস্টিন। ৭২ একরের একটি দ্বীপ ‘পেডোফাইল আইল্যান্ড’ নামেও পরিচিত। যার মালকিন ছিলেন ম্যাক্সওয়েল। সেখানে এপস্টিন কয়েকটি প্রাপ্তবয়স্কদের পার্টি আয়োজন করেছিলেন। তেমনই এক পার্টিতে ইমরান এবং আক্রম গিয়েছিলেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ় সফরে গিয়ে পাকিস্তানের দুই প্রাক্তন অধিনায়ক যোগ দিয়েছিলেন এপস্টিনের পার্টিতে। তাঁদের জন্য ব্যক্তিগত বিমানের ব্যবস্থাও করেছিলেন ম্যাক্সওয়েল। সমাজমাধ্যমে দেওয়া ছবিতে ইমরানকে দেখা গেলেও আক্রমকে দেখা যাচ্ছে না।
এপস্টিনের কুকর্মের সঙ্গে নাম জড়াতেই ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন আক্রম। সমাজমাধ্যমে তিনি অভিযোগকারীর উদ্দেশ্যে লিখেছেন, ‘‘মিথ্যা প্রচার বন্ধ কর। তুমি মিথ্যুক।’’ এপস্টিন আয়োজিত প্রাপ্তবয়স্কদের পার্টিতে যোগ দেওয়ার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন প্রাক্তন অলরাউন্ডার।
আমেরিকার ধনকুবেরের বিরুদ্ধে কম করে ৪০ জন মহিলা যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন। প্রত্যেকেই জানিয়েছিলেন, তাঁরা ধনকুবেরের ইন্দ্রিয়াসক্তির শিকার হয়েছিলেন অল্প বয়সে। কেউই তখনও ১৮ উত্তীর্ণ হননি। অর্থের জোরে নাবালিকাদের অপরিণতমনস্কতার সুযোগ নিয়েছিলেন এপস্টিন। কখনও ইচ্ছের বিরুদ্ধে, কখনও ভয় দেখিয়ে সহবাস করেছেন তাঁদের সঙ্গে। সেই অত্যাচারের বিবরণও নানা ভাবে সামনে এসেছে বহু বার।
উল্লেখ্য, যৌন অপরাধী এপস্টিনকে ২০১৯ সালে জেলে পাঠানো হয়েছিল। জেলেই আত্মঘাতী হন তিনি। এপস্টিনের পর ২০২১ সালে যৌন অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করা হয় তাঁর প্রেমিকা ম্যাক্সওয়েলকে। তিনি ২০ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন।