Jhulan Goswami

থামল ‘চাকদহ এক্সপ্রেস’, নীল জার্সিতে আর আগুনে বোলিং করতে দেখা যাবে না বাংলার মেয়ে ঝুলনকে

ঝুলনের তখন ১০ বছর বয়স। রঙিন জার্সিতে সচিন তেন্ডুলকরদের বিশ্বকাপ খেলতে দেখেছিলেন। সেই শুরু ক্রিকেটের প্রতি ভাললাগা। ফুটবলপ্রেমী ঝুলন ক্রিকেটের প্রতি আকর্ষিত হন।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২২:০২
ঝুলনকে আর দেখা যাবে না এই জার্সিতে।

ঝুলনকে আর দেখা যাবে না এই জার্সিতে। ছবি: টুইটার থেকে

বিশ্বকাপ না পাওয়ার দুঃখ নিয়েই বিদায় নিতে হল ঝুলন গোস্বামীকে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেন বাংলার পেসার। ২০ বছরের কেরিয়ার শেষে থামল ‘চাকদহ এক্সপ্রেস’। আর লুচি খেতে গেলে ভাবতে হবে না ঝুলনকে।

ঝুলনের তখন ১০ বছর বয়স। রঙিন জার্সিতে সচিন তেন্ডুলকরদের বিশ্বকাপ খেলতে দেখেছিলেন। সেই শুরু ক্রিকেটের প্রতি ভাললাগা। ফুটবলপ্রেমী ঝুলন ক্রিকেটের প্রতি আকর্ষিত হন। ১৫ বছর বয়স থেকে ক্রিকেট খেলা শুরু করেন তিনি। নদিয়ার চাকদহতে সেই সময় ক্রিকেট কোচিংয়ের সুযোগ ছিল না। কলকাতায় এসে অনুশীলন শুরু করেন। সুযোগ পান বাংলা দলে। মাত্র ১৯ বছর বয়সে ভারতের হয়ে অভিষেক। ২০০২ থেকে ভারতীয় ক্রিকেটে শুরু ঝুলন-যাত্রা।

Advertisement

এ বার মেয়েদের বিশ্বকাপ থেকে ফেরার পর অনেকেই মনে করেছিলেন ঝুলন অবসর নেবেন। কিন্তু তিনি অবসর নিয়ে কিছু বলেননি। আনন্দবাজার অনলাইনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ঝুলন বলেন, “আমার যে বয়স হচ্ছে তা ফিল্ডিং করতে গিয়ে বুঝতে পারছি। তবে আমার মনে হয় ফিট থাকার আসলে কোনও বয়স হয় না। সুস্থ-সবল থাকতে চাওয়ার ইচ্ছেটাই বড় কথা। এবং সেই ইচ্ছেকে বাস্তবায়িত করতে যা যা করা প্রয়োজন, ধারাবাহিক ভাবে তা মেনে চলা উচিত।” সেটাই করতেন ঝুলন। ম্যাচ না থাকলে একা একা অনুশীলন করে যেতেন। নিজের ফিটনেস নিয়ে খুব খুঁতখুঁতে তিনি। বিশ্বকাপ থেকে ফিরে ঝুলন বলেন, “নিউজিল্যান্ড থেকে ফিরে এক সপ্তাহ এন্তার আজেবাজে খেয়ে গিয়েছি। জমিয়ে লুচি খেয়েছি। কিন্তু সাত-আট দিন পরে মনে হল, এ বার আর নয়। তখন লোভ সংবরণ করি।” দেশের হয়ে খেলার ইচ্ছে থেকেই এই কঠিন শৃঙ্খলা মেনে চলা। ঝুলন বলেন, “দেশের হয়ে খেলার খিদে। সেটা তাড়িয়ে নিয়ে যায়।”

মেয়েদের বিশ্বকাপ থেকে ফেরার পর অনেকেই মনে করেছিলেন ঝুলন অবসর নেবেন।

মেয়েদের বিশ্বকাপ থেকে ফেরার পর অনেকেই মনে করেছিলেন ঝুলন অবসর নেবেন। —ফাইল চিত্র

ঝুলনের ঝুলিতে এক দিনের ক্রিকেটে রয়েছে ২৫২টি উইকেট। টেস্টে রয়েছে ৪৪টি উইকেট। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নিয়েছেন ৫৬টি উইকেট। বাংলার দলে তিনি মেন্টরের দায়িত্ব নিয়েছেন। ঝুলন গোস্বামী, বাংলার ক্রিকেটে যিনি ছোটদের কাছে ‘দিদি’ নামেই পরিচিত। একাধিক মেয়ের কাছে যিনি ক্রিকেটার হয়ে ওঠার অনুপ্রেরণা। মেয়েরাও যে ১৩৫ কিলোমিটার গতিতে বল করতে পারেন, তা শিখিয়েছেন ঝুলনই। সেরা সময়ের ঝুলনের বোলিং বিপদে ফেলত ছেলেদেরও। কিছু দিন আগে জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে লোকেশ রাহুলকে বোলিং করতে দেখা যায় ঝুলনকে। সেই ঝুলন ইডেনে আসা মানে তাঁকে ঘিরে ছোট মেয়েদের জটলা। হ্যামলিনের বাঁশি থাকে ঝুলনের হাতে। সেই সুরে সাড়া দেন উঠতি ক্রিকেটাররা। তাঁদের তৈরি করার দায়িত্ব যে এখন ঝুলনের কাঁধেই।

অবসরের আগেই নতুন দায়িত্ব পেয়ে গিয়েছেন। ক্রিকেট নিয়েই থাকছেন ঝুলন। শুধু ভারতীয় দলের জার্সিটা আর পরা হবে না।

আরও পড়ুন
Advertisement