মাখায়া এনটিনি। —ফাইল চিত্র।
দক্ষিণ আফ্রিকার অন্যতম সফল বোলার তিনি। টেস্টে ৩৯০টি ও এক দিনের ক্রিকেটে ২৬৬টি উইকেটের মালিক মাখায় এনটিনিকে মাঠের বাইরেও একটা লড়াই করতে হত। সেটা দলের মধ্যে। কারণ, দলে একঘরে ছিলেন তিনি। প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছিল ৬৫৬ উইকেটের মালিকের। তার একমাত্র কারণ, বর্ণবৈষম্য।
দক্ষিণ আফ্রিকা দলে প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ ক্রিকেটার ছিলেন এনটিনি। তাঁর কঠিন সময় নিয়ে মুখ খুলেছেন এনটিনির ছেলে থান্ডো। একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘দলে সব সময় নিজের প্রাণ বাঁচানোর জন্য বাবাকে লড়তে হত। দলে একমাত্র কৃষ্ণাঙ্গ হওয়ায় অনেক কিছু সহ্য করতে হয়েছে বাবাকে। দলে একঘরে করে রাখা হয়েছিল বাবাকে। এত ভাল এক জন ক্রিকেটারের অনেক বেশি সম্মান প্রাপ্য ছিল। বাবা সেটা পায়নি।’’
শুধু থান্ডো নন, ২০২০ সালের একটি সাক্ষাৎকারে নিজের খেলোয়াড় জীবনের কথা জানিয়েছিলেন এনটিনি নিজেও। তিনি বলেন, ‘‘আমি দলে সবসময় একা থাকতাম। কেউ আমাকে খেতে যেতে বলত না। দলের সবাইকে দেখতাম আমার সামনেই নানা রকম পরিকল্পনা করছে। ঘুরতে যাচ্ছে। কিন্তু আমাকে কেউ আমন্ত্রণ করত না। এমনকি, খাবার টেবিলে আমার কাছেও কেউ বসত না।’’
এমন পরিস্থিতি হয়েছিল যে দলের বাকিদের সঙ্গে এক বাসে যেতেও ভয় পেতেন এনটিনি। তিনি বলেন, ‘‘আমি দেখতাম বাসের চালক কে আছে? তার কাছে আমার ব্যাগ দিয়ে দিতাম। তার পর হোটেল থেকে দৌড়ে মাঠে চলে যেতাম। মাঠ বেশি দূরে হলে অন্য কোনও গাড়ি ভাড়া করে যেতাম। ফেরার সময়ও সেটাই করতাম।’’
দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেটে বর্ণবৈষম্যের অভিযোগ নতুন নয়। কৃষ্ণাঙ্গ ক্রিকেটারদের মাঝেমধ্যেই সমস্যায় পড়তে হয়। যদিও এখন দলের কৃষ্ণাঙ্গ ক্রিকেটারের সংখ্যা অনেক বেশি। বর্ণবৈষম্য রুখতে বেশ কিছু নিয়ম করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট বোর্ড। টেম্বা বাভুমার মতো কৃষ্ণাঙ্গ ক্রিকেটার দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। কিন্তু তার পরেও মাঝেমধ্যে বর্ণবৈষম্যের অভিযোগ ফিরে ফিরে আসে দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেটে।